Crss colum

Thursday, April 27, 2017

ভৌতিক

ভূত আছে কি নেই এই তর্কটা বহু কাল থেকেই চলে আসছে .এক পক্ষ একটা যুক্তি দিলে অন্য পক্ষ আরেকটা যুক্তি নিয়ে হাজির . আজ তর্কটা বেধেছিলো  রমেন  আর অনীকের মধ্যে  . রমেন বলছিলো  ‘ভূত আছে , আলবাত আছে .ভগবান যদি আছে মানিস তবে ভূত ও আছে .’ অনীক হারবার ছেলে নয়  সেও বললো ‘তোরা যারা ভূত মানিস একটা উদাহরণ দেখা যে নিজের চোখে ভূত দেখেছে .’ রমেন বললো ‘রবীন্দ্রনাথ  ভূতে বিশ্বাস করতেন.’সাথে সাথে অনীক বললো ‘বিশ্বাস কারো থাকতেই পারে .কিন্তু রবীন্দ্রনাথ নিজে ভূত দেখেছেন একথা লিখে জাননি .’
এমন সময় মৃগেনদা  ক্লাব ঘরে ঢুকলো . বাইরে বৃষ্টি পড়ছে .মৃগেনদা এসে ছাতাটা খোলা অবস্থায় পাশের ছোটো ঘরটায় রেখে এলো .তারপর  এই ঘরে এসে একটা চেয়ার টেনে  ধপ করে বসেই বললো ‘কিসের গল্প হচ্ছে রে ?’ রমেন বললো ‘ভূতের মৃগেনদা .আমি বলছি ভূত আছে ,অনীক মানতে চাইছে না .’ মৃগেনদা অনীকের দিকে চেয়ে বললো ‘তা তোর মানতে আপত্তি কিসের ?’ অনীক বললো  ‘আপত্তি কিছু নেই ,শুধু এমন কাউকে হাজির করুক যে নিজের চোখে ভূত দেখেছে .’ 
মৃগেন দা কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো  ‘যদি বলি আমি ভূত দেখেছি ,তোরা কি বিশ্বাস করবি  ?’
গল্পের গন্ধ পেয়ে সকলেই একসাথে বলে উঠলাম ‘একশো বার বিশ্বাস করবো ,’
রমেন তাড়াতাড়ি ফ্লাস্ক থেকে চা বের করে  একটা প্লাস্টিক কাপে করে মৃগেনদা কে দিলো .আমরা সকলে  মৃগেনদা কে ঘিরে চেয়ার টেনে বসলাম . চায়ে চুমুক দিয়ে মৃগেনদা শুরু করলো .. “
তোরা তো জানিস আমার বিয়ে হয়েছে বাঁকুড়া জেলার এক  অজ গ্রামে . বিষ্ণুপুর স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে বাসে করে পুরন্দরপুর যেতে হয় সেখান থেকে  হেঁটে পাঁচ কিলোমিটার গেলে তবেই আমার শশুরবাড়ী . 
বিয়ের কিছুদিন পরের ঘটনা .সেবারে আমার বড় শালাবাবু এসে  তোদের বৌদিকে নিয়ে গেছে .কথা ছিলো কিছুদিন বাদে আমি গিয়ে তোদের বৌদিকে নিয়ে আসবো .
সেইমতো একদিন দুপুরের ট্রেনে চেপে বসলাম .  সময়ে পৌঁছলে সন্ধ্যার আগে শশুর বাড়ী পৌঁছে যেতাম.কিন্তু মাঝপথে ট্রেন অবরোধ হওয়ায় ট্রেন বিষ্ণুপুর পৌঁছল রাত সাড়ে আটটা .কোনো রকমে ছুটতে ছুটতে গিয়ে লাস্ট বাস ধরলাম .তখন বর্ষা কাল .শেষ বাসে তেমন লোক নেই . বাস চলতে শুরু করতেই পুনরায় বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো .  যখন পুরন্দরপুরে নামলাম তখন রাত দশটা .বৃষ্টি তখন ধরে এসেছে .ঝির ঝির করে পড়ছে .দেখলাম বাস স্টান্ডে কোনো জনপ্রাণী নেই .  এখান   থেকে নদীর পাড় ধরে পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা গেলে তবেই শশুরবাড়ী র গ্রাম .দেখলাম আকাশে পূর্ণিমার চাঁদ উঠেছে.ভাবলাম এটুকু রাস্তা হেঁটেই চলে যাবো .  সুতরাং হাঁটা শুরু করে দিলাম . চাঁদের আলোয় হাঁটতে ভালোই লাগছিলো .হঠাত  লক্ষ্য করলাম কিছুটা দূরে একজন হেঁটে যাচ্ছে . চাঁদের আলোয় স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি. আমি চেঁচিয়ে ডাকলাম‘ও দাদা শুনছেন  ,ও দাদা.’কয়েকবার ডাকাডাকির পর লোকটি দাঁড়িয়ে পড়লো .আমি কাছে গিয়ে বললাম  'আমি জীবনপুর যাবো .রাত হয়ে গেছে .একলাই যাচ্ছিলাম .আপনাকে দেখতে পেয়ে   ভাবলাম তবু একজন সঙ্গী পাওয়া গেলো .' লোকটি বললো ‘চলুন.’ কেমন একটা খসখসে গলার আওয়াজ .লোকটি বললো  'জীবনপুরে কোথায়  যাবেন ? ' আমি শশুরের নাম বললাম.তারপরে প্রশ্ন করলাম ‘চেনেন নাকি ?
' লোকটি বললো ‘কতজনই  চেনাজানা ছিলো.’ নদীর পাড় ধরে প্রায় চার কিলোমিটার হাঁটার পর এক টা বাঁশের সাঁকো.সাঁকো পেরিয়ে আরো খানিকটা হাঁটার পর  জীবনপুর গ্রাম.
আমরা দুজনে কথা বলতে বলতে হাঁটছিলাম . লোকটা নিজের নাম বললো বিবেক .কোথায় থাকে জিজ্ঞাসা করায় বললো বাঁশের সাঁকোর কাছে বামদিকে ঘর . সাঁকোর কাছে গিয়ে দেখি হড়কা বানে সাঁকো ভেঙে গেছে .এবারে একটু চিন্তায় পড়লাম .নদী এমন কিছু চওড়া ও গভীর নয় .এমনি সময় হেঁটেই পার হওয়া যায় . কিন্তু এখন বর্ষাকাল .প্রবল বেগে জল বয়ে চলেছে . আমার এরকম হতম্ভব অবস্থা দেখে বিবেকবাবু বললেন ‘আজ রাতটা আমার ঘরে কাটিয়ে দিন কাল সকালে  না হয় যা হোক ব্যবস্থা করা যাবে .ওপারে একজনের নৌকা আছে .মাঝে মাঝেই সাঁকো ভেঙে যায় .তখন সবাই নৌকায় পার হয় .কিন্তু এত রাতে নৌকা পাওয়া যাবে না .’ অগত্যা  বিবেকের বাড়ী এসে উপস্থিত হলাম . দেখলাম ভাঙাচোরা একটা টিনের চাল ওলা বাড়ী .  একটু খোলা বারান্দা আর একটা বড় ঘর . বারান্দায় উঠে বিবেক এক কোণ থেকে বাঁকুড়ার বিখ্যাত টিনের টিমটিমে লনঠন বার করে জ্বাললো .তার অল্প আলোয় দেখলাম বিবেককে এতক্ষণ ভাবছিলাম মধ্যবয়সী যুবক .কিন্তু না দেখলাম সে প্রৌঢ় .বয়স কমপক্ষে পঞ্চাশ হবে .লনঠন ধরে ঘরে ঢুকতে দেখলাম ,ঘরের এখানে ওখানে অযত্নের ছাপ .অনেকদিন যেন ঝাড়া পোঁছা  পরিস্কার হয়নি .   ঘরের একদিকে জানালার দিকে একটা তক্তোপোশ .তাতে একটা মাদুরি পাতা একপাশে দুটি বালিশ জড় করা . বিবেক বললো ‘আপনি আজ আমার অতিথি .কিন্তু ঘরে আপনাকে খেতে দেবার মতো কিছুই নেই .’ আমি বললাম ‘তাতে কি ?একটাই তো রাত .ও কোনোরকমে কেটে যাবে .’ আমি তক্তোপোশের একপাশে জানালার দিকে শুয়ে পড়লাম .বিবেক লনঠনটা কমিয়ে দিয়ে আমার পাশে শুয়ে পড়লো .আমি বললাম ‘বিবেকবাবু আপনি কি কাজ করেন ?  ’ বিবেক উত্তর দিলো ‘আমি এখানকার প্রাইমারী স্কুলে পড়াতাম  ' .
কিছুক্ষণের মধ্যেই  ঘুমিয়ে পড়লাম .
কতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম জানি না .  হঠাত একটা গুমোট গরমে ঘুম ভেঙে গেলো . জানালার বাইরে চাঁদ মেঘে ঢাকা পড়েছে .বিদ্যুত্ চমকাচ্ছে . আমার মনে হলো বিছানায় আমি একা .একটু গা ছমছম করে উঠলো .কাঁপা কাঁপা গলায় ডাকলাম ‘বিবেকবাবু .’কেউ সাড়া দিলো না .ঘরের লনঠনটা নিভে গেছে .কিছু দেখতে পাচ্ছি না . আবার ডাকলাম ‘বিবেকবাবু’. এবারে ঘরের মাঝখান থেকে উত্তর এলো   'বলুন.' আমি বললাম ‘আপনি শোবেন না ?’. বিবেকবাবু  উত্তর দিলো ‘না .’আমি পুনরায় প্রশ্ন করলাম 'কেন ?' বিবেকবাবু উত্তর দিলো ‘শোয়ার চেয়ে ঝুলে থাকতেই আমার ভালো লাগে .’এই বলে বিবেকবাবু খিঃ খিঃ করে বিশ্রী ভাবে হেসে উঠলেন .ঠিক এই সময় একেবারে ঘরের কাছে কড়কড় শব্দে বিরাট বাজ পড়লো .সেই প্রায় একমিনিট ব্যাপি বিদ্যুতের চমকে দেখলাম ঘরের মাঝখানে কড়িকাঠ থেকে বিবেকবাবু গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে .এবং ঐ ঝুলে থাকা অবস্থায় তিনি তখনো খিঃ খিঃ করে হেসে চলেছেন .
আমি তড়াক করে এক লাফ মেরে ঘরের দরজা খুলে দৌড়ালাম .পেছন থেকে বিবেকবাবুর কনঠস্বর শুনতে পেলাম ‘যাবেন না ,আপনি আমার অতিথি.’ আমি দিকবিদিগ  জ্ঞান হারিয়ে দৌড়াচ্ছিলাম .সামনে নদী .আমি জলে ঝাঁপিয়ে পড়লাম .কেমন করে ওপারে পৌঁছলাম জানি না .নদীর ওপারে গিয়ে  পাড়ে উঠে জ্ঞান হারিয়ে  ফেললাম .পরের দিন লোকজন আমাকে পড়ে থাকতে দেখে আমার শশুরবাড়ী খবর দেয় .সেখান থেকে সবাই এসে আমায় ধরা ধরি করে শশুরবাড়ী নিয়ে যায় .পরে তাদের মুখে শুনেছি বিবেক মাস্টার স্থানীয় স্কুলে মাস্টারি করতেন .পরে বদ্ধ উন্মাদ হয়ে যান .একদিন  উন্মাদ অবস্থায় গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন .  ”
বাইরে বৃষ্টিটা ধরে এসেছে .মৃগেনদা গল্প বন্ধ করে পাশের ঘর থেকে ছাতা এনে বললো ‘চলি রে .’ (শেষ).

Thursday, April 20, 2017

স্নেহময়ের প্রতিশোধ

স্নেহময়ের নামের সাথে চেহারার যে সাদৃশ্য আছে ,সেটা স্নেহময়কে যারা চেনে সবাই এক বাক্যে স্বীকার করবে .ছোটো বেলা থেকেই স্নেহময়ের শরীরে স্নেহ পদার্থের প্রাচুর্য একটু বেশী . তবে কেউ যদি স্নেহময়কে মোটা বলে তবে স্নেহময় ভয়ানক রেগে যান .আর রাগলেই স্নেহময়ের কথা আটকে যায় . তখন শুধুই দাঁত কিড়মিড় করা ছাড়া উপায় থাকে না .তবে সুখের কথা এখন স্নেহময়কে কেউ খুব একটা রাগায় না .কারণ স্নেহময়ের বয়স এখন পঞ্চাশ .স্নেহময়ের মেয়ে লতিকার বয়স কুড়ি . লতিকা কলেজে পড়ে .সুতরাং এই বয়সে স্নেহময়কে কে আর রাগাবে ? তবে  অঘটন যে ঘটে না তা নয় তবে  তা সংখ্যায় কম . এই তো কয়েকদিন আগে অফিসে ছুটির পর  সহকর্মীরা সবাই  বড় সাহেবের  বিবাহ বার্ষীকির পার্টিতে গিয়েছিল .সেখানে সুরেন বোস স্নেহময়কে বিরিয়ানী খেতে দেখে বলে ফেলেছিলো ‘ স্নেহময়দা একটু কম করে খান ,দিন দিন যে হারে মোটা হয়ে যাচ্ছেন ! ’  ব্যাশ এইটুকু শুনেই  স্নেহময়ের মাথায় আগুন চড়ে গেলো .  রেগে সুরেন বোসকে একটা কড়া জবাব দিতে গেলো ,কিন্তু মুখে বিরিয়ানী থাকায় আর আল-জিভ টা আটকে যাওয়ায় কিছু তো বলতেই পারলেন না বরং বিষম খেয়ে হুলুস্থুল অবস্থা. সেই থেকে সুরেন বোসের সাথে কথাবার্তা বন্ধ করে দিয়েছেন স্নেহময় .
আজ একটু তাড়াতাড়ি অফিস ছুটি হয়ে গেলো স্নেহময়ের . বাস  থেকে নামলেই সামনে রিক্সা স্টেন্ড .স্নেহময় রিক্সা করেই বাড়ী থেকে বাস রাস্তা পর্যন্ত যাতায়াত করেন .আগে এটুকু রাস্তা হেঁটেই যেতেন .কিন্তু এখন আর পারেন না .তাই রিক্সা করেই যাতায়াত করেন .রিক্সা ওলা চেনা .আজ  রিক্সায় উঠতেই বললো ‘বাবু ওদিকে রাস্তা সারাই হচ্ছে .তাই পার্কের পাশ দিয়ে ঘুরে যাবো .’ স্নেহময় কিছু উত্তর করলেন না  .যেদিক দিয়ে খুশী ঘুরে যাক ,ঘরে পৌঁছলেই হলো .
রিক্সায় বসে স্নেহময় এদিক  ওদিকে তাকাতে তাকাতে চলেছেন .হঠাত্ স্নেহময়ের নজর  গেলো পার্কের ভেতরে . ওটা লতিকা  তো ? স্নেহময়ের দিকে পিছন ফিরে দাঁড়িয়ে আছে তাই মুখটা দেখতে পাচ্ছেন না .কিন্তু ঐ বেগুনী রঙের চুড়িদার গত মাসেই স্নেহময় লতিকা কে কিনে দিয়েছেন .সামনে একটি যুবক দাঁড়িয়ে আছে .যুবকটিকে স্নেহময় চেনেন .মহা বজ্জাত ছেলে .নাম রাহুল .ঐ চাটুজ্জে দের বাড়ীর ছেলে . শুনেছেন পড়াশুনায় নাকি ভালো .কম্পিউটার ইন্জিনিয়ারিং এ ডিগ্রী আছে .আর চাটুজ্জেদের তো কম্পিউটারের ব্যবসা .চাঁদনী মার্কেটে বিশাল শোরুম . একবার স্নেহময় লতিকার জন্য কম্পিউটার কিনতে ওদের শোরুমে গিয়েছিলেন .তা বড় চাটুজ্জে অনেক খাতির করেছিলেন .দাম কম নিয়েছিলেন . কিন্তু এই রাহুল বলে ছেলেটিকে স্নেহময় একদম দেখতে পারেন না .আসলে কিছুদিন আগের কথা .ছুটির দিন ছিলো .স্নেহময় বাজার করে রিক্সায় করে ফিরছিলেন .চাটুজ্জে দের বাড়ীর কাছে একটা ‘নব জাগরণ সংঘ ’ বলে ক্লাব আছে .ঐখানে রাস্তা বেশ সরু .তার ওপর রাস্তা সারাই হচ্ছিল বলে খানা খন্দ  হয়েছিলো .স্নেহময়ের রিক্সা ঐখান দিয়ে যাবার সময় একটা গর্তে চাকা ঢুকে যায় .রোগাপটকা রিক্সা ওলা কিছুতেই  চাকাটি গর্ত থেকে তুলতে পারছিলো না .তখন পাশ দিয়ে কতোগুলি কিশোর যাচ্ছিল তাদের বললো ‘ভাই ,একটু ঠেলে দাও না .’ কিশোর গুলি হাত লাগাতে চটপট রিক্সাটি গর্ত থেকে উঠে পড়লো .কিশোর গুলির মধ্যে একজন রিক্সা ওলার উদ্দেশ্য  বলে উঠলো ‘কাকু বড্ড মোটা তাই ,নাহলে তুমিই গর্ত থেকে তুলতে পারতে .’ একথা শোনা মাত্রই স্নেহময়ের রক্ত গরম .স্নেহময় কিশোরগুলিকে কিছু একটা চড়া কথা বলতে যাবে ,এমন সময় সামনের ক্লাব থেকে এই রাহুল বলে ছেলেটি বেরিয়ে এসে কিশোরটির মাথায় হালকা চাঁটি মেরে বললো ‘কানাকে কানা ,খোঁড়াকে খোঁড়া ,আর মোটাকে মোটা বলতে নেই .’ততক্ষণাত স্নেহময়ের যাবতীয় রাগ গিয়ে পড়লো রাহুলের উপর . তারপরের ঘটনা  কালী পুজোর সময় .নব জাগরণ ক্লাবের কালীপুজো খুব জাঁকিয়ে হয় .কালীপুজোর পরের দিন সন্ধ্যাবেলায় এলাকার সবাইকে বসিয়ে খাওয়ানো হয় .নিরামিস অনেক রকম আইটেম . পাড়ার ছেলেরা সকালেই বলে গেছে সন্ধ্যাবেলায় তাড়াতাড়ি যাবার জন্য .সেইমতো আটটা নাগাদ স্নেহময় সপরিবারে  পুজো মন্ডপে গিয়ে দেখলেন বেশ ভিড় .দুই একজন স্নেহময়ের মতো বয়স্ক আছেন .সবাই পাড়ার .কেউ চেনাপরিচিত  ,কেউবা আবার বন্ধু হয় . লতিকা ও স্নেহময়ের স্ত্রী মেয়েমহলে চলে গেলো .স্নেহময় কয়েকজন বন্ধুর সাথে জমিয়ে আড্ডা দিয়ে দশটা নাগাদ খেতে বসলেন . পরিবেশন করছিলো এই রাহুল নামের ছেলেটি  .স্নেহময় একটু খেতে ভালোবাসে .তাছাড়া ভাত দিয়ে মুগের ডাল আর তার সাথে ফুলকপি আলু কষা দারুণ টেষ্টি হয়েছে .স্নেহময় অলরেডি দুবার ভাত নিয়েছে .তৃতীয়বার রাহুল ভাত নিয়ে এলে স্নেহময় ‘না না ’করলো .হঠাত্ রাহুল বলে উঠলো ‘কাকাবাবু এতো কম খেলে হয় !আপনার মতো চেহারা যাদের তারা  এত কম খেলে দুর্বল হয়ে পড়বে .’স্নেহময় চোখ তুলে তাকিয়ে দেখলো সবাই মুচকে মুচকে হাসছে .লোকজন থাকায় রাগ হওয়া স্বত্তেও স্নেহময় নিজেকে কন্ট্রোল করে নিলো .
সেই থেকে ছেলেটিকে স্নেহময় একদম দেখতে পারেন না . আর সেই ছেলের সাথে লতিকা কথা বলছে .যদিও স্নেহময় লতিকার মুখ দেখতে পান নি .তবুও স্নেহময় নিশ্চিত ওটা লতিকাই ছিলো .  আজ বাড়ী গিয়ে একটা হেস্তনেস্ত করবেন .
বাড়ী গিয়ে দরজা দিয়ে ঢুকতে ঢুকতে স্নেহময় হুঙ্কার ছাড়লেন  ‘মৃণালিনী  ,মৃণালিনী’. লতিকার মা মৃণালিনীদেবী  তখন শোবার ঘরে টিভি সিরিয়াল দেখছিলেন .এই সময় হাঁকডাক করলে মৃণালিনী ভয়ানক রেগে যান .স্নেহময়ের ডাক মৃণালিনী শুনতে পেয়েছিলেন.কয়েকবার ডাকাডাকির পর উঠে গিয়ে স্নেহময়কে ঝাঁঝিয়ে উঠলেন ‘কি হলো যাঁড়ের মতো চিল্লাচ্ছ কেনো ?’ জোঁকের মুখে নুন পড়লে যেমন হয় ,তেমনি মৃণালিনীর আওয়াজে স্নেহময়ের গলার জোর চুপসে গেলো .স্নেহময় বললো ‘লতু কোথায় ? ’ .মৃণালিনী উত্তর দিলো ‘কোথায় আবার  ,ওর এক বন্ধুর বাড়ী গেছে .’ স্নেহময় বললো আমি লতুকে পার্কের মধ্যে  ঐ চাটুজ্জে দের রাহুল নামে ছেলেটার সাথে দেখলাম . মৃণালিনী ভ্রু কুঁচকে জানতে চাইলো  ‘কপালে কাটা দাগ ওলা ফর্সা সুন্দর মতো ছেলেটা ?’. স্নেহময় বললো ‘ঐ ছেলেটির কথাই বলছি ’. মৃণালিনী বললো ‘তা ছেলেটিতো খুবই ভালো . এই তো শিবরাত্রির দিন বাজারের শিব মন্দিরে আমি আর লতু জল ঢালতে গিয়েছিলাম .গিয়ে দেখি বিশাল ভিড় .হঠাত ঐ রাহুল বলে ছেলেটির সাথে দেখা .সব শুনে ছেলেটি আমাদের সবাইকে এড়িয়ে প্রথমে পুজোর ব্যবস্থা করে দিলো .তাছাড়া লতুর মুখে শুনেছি ছেলেটি মস্ত কম্পিউটার ইন্জিনিয়ার. এক বিরাট কোম্পানীতে চাকরী করে .অনেক টাকা মাইনে পায় .তা এমন সোনার টুকরো ছেলের সাথে লতু যদি বন্ধুত্ব করে ,তাতে তোমার কি গায়ে জ্বালা ধরে ?.’
গায়ে যে কি জ্বালা ধরে সেটা স্নেহময় সবাইকে বলতে পারবে না . তবে যে ছেলে তাকে মোটা বলে অপমান করে তার সাথে মেয়েকে মিশতে দেওয়া যায় না .
লতু বাড়ী আসার পর তাকে প্রশ্ন করে স্নেহময় বুঝতে পারলো  রাহুলের সাথে লতু র বন্ধুত্ব বেশ কিছু দিনের .আর এই ব্যাপারটা মৃণালিনী আগাগোড়াই জানে .সব শুনে স্নেহময় চেঁচিয়ে উঠে বললো ‘চক্রান্ত ,চক্রান্ত .ঘর শত্রু  বিভীষণ. তোকে আমি স্পষ্ট বলে দিচ্ছি লতু ঐ ছেলেটির সাথে তোমার মেশা চলবে না .আর আমার বাড়ীতে আমার কথাই শেষ কথা .’এই বলে স্নেহময় নিজের ঘরে চলে গেলো .
কয়েকদিন পরের কথা .সকাল থেকে ই খুব তোড়জোড় চলছে স্নেহময়ের বাড়ীতে .সন্ধ্যায় লতিকাকে দেখতে আসবে .পাত্র বিদেশে চাকরি করে ,বিদেশেই থাকে .আজ পাত্রের মা বাবা আসবে . স্নেহময়ের অফিসের এক কলিগ এই সম্বন্ধটা এনেছে .  যারা আসবে তাদের বাড়ী দক্ষিণ কলকাতায় .স্নেহময় ফোনে ঠিকানা বুঝিয়ে দিয়েছেন .   বলেছেন নতুন বাজারের কাছে এসে ফোন করলে স্নেহময় নিজে গিয়ে নিয়ে আসবেন . এদিকে লতু খুবই কান্নাকাটি করছে .মৃণালিনী লতিকাকে  বোঝাচ্ছে . স্নেহময় নিজে খেতে ভালোবাসেন তেমনি খাওয়াতেও ভালোবাসেন . অনেক রকম মিষ্টি কোল্ড ড্রিংকস এনে রেখেছেন . বিকাল থেকে  সেজে গুঁজে অপেক্ষায় রইলেন কখন পাত্র পক্ষ আসে .মৃণালিনী এদিক লতিকাকে বুঝিয়ে বাড়ীর ও বাবার সম্মানের কথা বলে সাজিয়ে রেডি করেছেন .
ওরা এলো বিকাল পাঁচটা নাগাদ .গাড়ীর হর্ন শুনে স্নেহময় তড়িঘড়ি করে বাড়ীর বাইরে এসে দেখলেন ,পাত্রের মা বাবা একটা টাটা সুমো থেকে নামছেন .আর তাদের সাথে যাকে নামতে দেখলো স্নেহময় ,তাকে  দেখেই স্নেহময়ের গা হাতপা চিড়বিড় করে জ্বলে উঠলো .ঐ রাহুল নামের ছেলেটি .রাহুল গাড়ী থেকে নেমে পাত্রের বাবার দিকে তাকিয়ে বললো ‘কাকাবাবু ,আমি তাহলে আসি ?’ .পাত্রের বাবা হেসে বললো ‘ঠিক আছে বাবা ,তুমি এসো .’
ঘরে ঢোকার পর সোফায় সবাইকে বসিয়ে কোল্ড ড্রিংকস দেওয়ার পর স্নেহময় ভদ্রতার খাতিরে প্রশ্ন করলো ‘আপনাদের বাড়ী চিনতে কোনো অসুবিধা হয়নি তো ?’. পাত্রের বাবা একগাল হেসে বললো ‘অসুবিধা ? আরে আপনি তো মশাই ফেমাস লোক .নতুন বাজারের কাছে এসে আপনার নাম ঐ ছেলেটিকে বলতেই ছেলেটি বলে উঠলো  “মোটা কাকাবাবুর বাড়ী যাবেন ? চলুন আমি পৌঁছে দিচ্ছি .” তারপর আসতে আসতে ছেলেটি কতো গল্প করলো .’ এসব কথোপকথনের মধ্যে মৃণালিনী প্লেটে মিষ্টি সাজিয়ে আনলো .মিষ্টির প্লেটের দিকে তাকিয়ে পাত্রের বাবা বলে উঠলো‘আরে মশাই ,আমাকেও কি খাইয়ে আপনার মতো মোটা করে দেবেন নাকি ?’ .স্নেহময়ের মুখটা ক্রমশ গম্ভীর থেকে গম্ভীরতর হতে লাগলো . তারপরে লতিকাকে দেখার পর চলে যাবার সময় গাড়িতে ওঠার আগে পাত্রের বাবা বলে উঠলো ‘আমি ঐ রাহুল বলে ছেলেটির কাছে আপনি মোটা শুনে ভেবেছিলাম আপনার মেয়েও আপনার মতো মোটা .এখন দেখছি আমার ধারণা ঠিক নয় .’ .
ওরা সবাই চলে গেলে স্নেহময় কিছুক্ষণ সোফায় গুম হয়ে বসে রইলেন .স্নেহময়কে গম্ভীর হয়ে বসে থাকতে দেখে মৃণালিনী আর ঘাঁটালেন না . কিছুক্ষণ পর স্নেহময় উঠলেন .মৃণালিনীকে হাঁক দিয়ে বললেন  ‘আমি একটু বেরোচ্ছি  ,ফিরতে রাত হবে .’
স্নেহময় ফিরলো রাত দশটা নাগাদ .দেখলো মৃণালিনী  লতিকাকে রাতের খাবার দিচ্ছে .স্নেহময় হাত ধুয়ে এসে খাবার টেবিলে র সামনের চেয়ারে বসে মৃণালিনীকে বললো ‘খেতে দাও . ’ মৃণালিনী একটা থালায় রুটি আর কষা মাংস দিলেন .লতু একপাশে মুখ গোঁজ করে খাচ্ছে .মৃণালিনীও চুপচাপ .হঠাত স্নেহময় বলে উঠলো ‘সব ঠিক করে ফেললাম .সামনে কুড়ি তারিখে লতুর বিয়ে .হুঁ    হুঁ      বাবা ,আমার সাথে লাগা .এবারে বাছাধন টের পাবে স্নেহময়ের প্রতিশোধ কাকে বলে !’ মৃণালিনী বললো ‘কোথায় ঠিক হলো ? যারা এসেছিল তাদের বাড়ী ?’স্নেহময় উত্তর দিলো ‘তাদের বাড়ী হবে কেন ?  ঐ যে চাটুজ্জেদের বাড়ীর  রাহুল বলে ছেলেটির সাথে .বড় চাটুজ্জের সাথে ফাইনাল কথা বলে আসছি . বাইরের লোকের সামনে আমায় মোটা বলা ! এবারে সব লোকের সামনে এই মোটাকে বাবা বলে ডাকতে হবে .এটাই স্নেহময়ের স্নেহের প্রতিশোধ ’.
লতিকার নিজের চেয়ার থেকে উঠে এঁটো মুখে স্নেহময়ের টাকে একটা সস্নেহে চুমু খেয়ে আদর করে বললো ‘আমার আদরের মোটা বাবা.’ (শেষ).

হিন্দু রাষ্ট্র

  ভারত যদি হিন্দু রাষ্ট্র হয় আপনার বাড়ির জলের সমস্যা কি মিটে যাবে ? ক্ষুধার্ত মানুষের পেট কি ভর্তি হয়ে যাবে ? গরীব মানুষ কি উন্নত চিকিত্সা পাবে ?
না ,না , না .
তবু ভারতের হিন্দু রাষ্ট্র হওয়াটা জরুরী .একবার ভাবুন তো আসমুদ্র হিমাচল এই দেশ কে পৃথিবী সভ্যতার শুরু থেকে আর্য জাতি বা হিন্দুদের দেশ হিসাবে চেনে .যখন ইউরোপ আমেরিকা  ও আরব প্রদেশ বর্বর অধ্যুষিত  ছিলো তখন এই দেশ  বিজ্ঞান ,সাহিত্য ,সংস্কৃতি সব কিছুতেই এক অতুলনীয় উন্নতি সাধন করেছিলো . প্রাচীন বৈদিক ধর্ম গান্ধার প্রদেশ হতে শুরু করে সিংহল হয়ে কম্বোডিয়া  পর্যন্ত বিস্তৃত ছিলো . এই দেশেই ধ্বনিত হয়েছিল 'বসুধৈব কুটুম্বকম  ' .আজ আর সেই স্বর্ণপ্রসু সেই ভারতবর্ষ নেই .নেই আমাদের একচ্ছত্র অধিকার .আমাদের এই দেশ ও সম্পদ কে ভাগ করে নিতে হচ্ছে  অসভ্য  বর্বর ধর্মীয় সংস্কৃতির সাথে .  আমরা একের পর এক প্রদেশ হারিয়েছি আর নিজেদের সংকুচিত করে নিয়েছি আরো ছোটো বৃত্তের মধ্যে . একথা ঠিক নয় আমরা ভীরু .আমরা বীরের জাতি .  প্রাচীন মগধের ভয়ে কাঁপতো  আমাদের শত্রুরা .মহাবীর আলেকজান্ডারের সৈন্যরা মগধের বিশাল সৈন্য বাহিনীর কথা শুনে আর ভারতবর্ষের অন্দরে প্রবেশ করেনি .পৃথ্থিরাজ   চৌহান মহম্মদ ঘোরীকে পরাজিত করেও দয়া করে ছেড়ে দেয় .  পরে জয়চাঁদের বিশ্বাসঘতকতার জন্য ঘোরীর কাছে হেরে যায় .মহারানা প্রতাপ আজীবন আকবরের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলো .বাংলার বারো ভূইয়ার অন্যতম প্রতাপাদিত্য় কে অন্যায়ের আশ্রয় নিয়ে আকবরের সেনাপতি মানসিংহ পরাজিত করেন .আর মারাঠা বীর শিবাজীর বীরত্ব কাহিনী আপনারা সবাই শুনেছেন .
তাই বলি এই ভারতবর্ষ আসলে হিন্দুস্থান .  বিশাল হিন্দুস্থানের খন্ডিত অংশ আমরা ভোগ করছি . তাও নিরংকুশ ভাবে নয় .বর্বর ধর্ম গুলির সাথে  ভাগাভাগি করে .
মুসলমানি শাসনের নাগপাশ থেকে মুক্ত হয়ে আমরা দুশো বছরের ইংরেজ শাসনের অধীনে ছিলাম .ইংরেজ আমলে আমরা শোষিত হয়েছি কিন্তু আমাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা ছিলো .তবুও আমরা শুধু হিন্দুরা দীর্ঘকাল স্বাধীনতা পাওয়ার জন্য ইংরেজের সাথে লড়েছি . একেবারে শেষ সময়ে মুসলিম লিগ আসরে নেমেছিলো এই দেশকে ভাগাভাগি করে মুসলমানদের জন্য আলাদা ভূমির ব্যবস্থা করতে .  পরিণাম গ্রেট কেলকাটা কিলিং  নামে লাখ লাখ হিন্দু হত্যা .কলিকাতার প্রতিটি রাস্তায় অজস্র হিন্দুর লাশ পড়েছিলো . নোয়াখালির হিন্দু সম্প্রদায়কে সম্পূর্ণ মুছে দিয়েছিল মুসলিমরা .এসবই ঐতিহাসিক সত্য . অজস্র বই আছে এগুলি নিয়ে ,আগ্রহীরা পড়তে পারেন .  অবশেষে আমাদের নপুংসক নেতারা দ্বিজাতি তত্ত্ব মেনে নিলেন যার পরিণাম পাকিস্তান নামে এক শুধুই মুসলমানদের জন্য আলাদা দেশের জন্ম . আমরা  হারালাম এক বৃহত্ ভূমিখন্ড . তাতেও কি শান্তি হলো ? মুসলিমদের এক বৃহত্তর অংশ রয়ে গেলো ভারতে . 
আশ্চর্য্যের ব্যাপার এই  যে  দ্বিজাতি তত্ত্বের মূল ভিত্তি এই যে হিন্দু ও মুসলিম দুইটি আলাদা জাতি .তারা একত্রিত হয়ে থাকতে পারবে না .তাই ভারতবর্ষকে দুই ভাগ করে দুটি জাতির আলাদা বাসস্থান করা প্রয়োজন .আমাদের নপুংসক হিন্দু নেতারা এই কথা গুলি মেনে নিয়ে ভারত ভাগে সায় দিলেন  .কিন্তু  একতরফা মানুষ বিনিময় হলো .হিন্দুরা অসম্ভব ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে এদেশে নিঃসম্বল অবস্থায় এলো .কিন্তু মুসলিমরা পাকিস্তান গেলো না . আমাদের নেতারা ভোট ব্যাঙ্কের কথা ভেবে এই অন্যায় মেনে নিলেন . আরো মজার ব্যাপার লক্ষ্য করুন ,পাকিস্তান হলো মুসলিম দেশ ,আর ভারত ধর্ম নিরপেক্ষ . আমাদের সংগ্রাম এই মেকি ধর্মনিরপেক্ষতার বিরুদ্ধে .স্বাধীনতার পর থেকে ধর্মনিরপেক্ষতার নামে  যা হয়েছে তা হলো মুসলিম তোষণ .আর এই তোষণের রাজনীতির ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হিন্দুরা .আজ আমরা নিজভূমে পরবাসীর মতো জীবন যাপন করছি . এ এক আশ্চর্য্য দেশ .এখানে হিন্দুদের জন্য ভারতীয় সংবিধান আর মুসলিমদের জন্য মুসলিম ল .এই বৈষম্য কেনো ? একজন মুসলিম চারটি বিয়ে করে জন সংখ্যা বাড়াতে পারে , যখন খুশি যে কোনো বিবাহিত বেগমকে তালাক দিতে পারে .  আর আমরা হিন্দুরা শুধুই মুখে আঙুল দিয়ে দেখতে পারি এই দেশটি কেমন ভাবে ইসলামিক দেশে রূপান্তরিত হয় .এদেশে এক ধরণের চুলকানি মানুষ আছে ,যাদের বুদ্ধিজীবি বলে .তারা হিন্দু নাম ধারী কিন্তু হিন্দু নয় .তারা ওদের হাজারো অন্যায় চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেও নিজের চোখকে ভুল দেখার জন্য দোষ দেয় কিন্তু ওদের নয় .
আজ সময় এসেছে যেটুকু অবশিষ্ট আছে সেটাকে রক্ষা করার .পৃথিবীতে হাজারো মুসলিম রাষ্ট্র আছে ,খ্রীষ্টান রাষ্ট্র আছে , বৌদ্ধ রাষ্ট্র আছে ,ইহুদী রাষ্ট্র আছে .ঐ রাষ্ট্র গুলিতে ঐসব ধর্মের লোকেদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত .গোটা দুনিয়ায় এই মুহূর্তে কোনো হিন্দু রাষ্ট্র নেই . আমরা হিন্দুরা যদি আমাদের শেষ ও একমাত্র আশ্রয় ভারতবর্ষকে হিন্দু রাষ্ট্র না বানাতে পারি তবে অদুর ভবিষ্যতে আমাদের চোখের সামনে জন বিস্ফোরণের মাধ্যমে এই হিন্দুস্থান ইসলামিক দেশে রূপান্তরিত হবে ,ঠিক যেভাবে হিন্দু প্রধান বাংলা এখন মুসলিম রাষ্ট্র বাংলাদেশ হয়েছে .
পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় জেহাদীরা সংখ্যায় বাড়ছে .ধূলাগোড়  ,কাটোয়া  ,মল্লারপুর  ,দেগঙ্গা  ,ইলাম বাজার ,কালিয়াচক  ,চন্দ্রকোণা  ,হাজীনগর  ,চন্দননগর  ,খড়্গপুর  ,সাঁকরাইল ইত্যাদি আরো অজস্র জায়গায় হিন্দুরা আক্রান্ত হচ্ছে .তোষণবাদী ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক শক্তি ভোট ব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখে তাদের প্রশ্রয় দিয়ে চলেছে .এসব থেকে মুক্তির একটাই পথ এই মেকী ধর্মনিরপেক্ষতা সমূলে উতপাটিত করে দেশকে হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণা করা . তার জন্য চাই সমগ্র হিন্দু জাতির ঐক্যবদ্ধতা.
আবার বলছি এই দেশ হিন্দু রাষ্ট্র হলে দেশের সব সমস্যা  সমাধান হবে না .তবে নিশ্চিত হবে এই বিশাল পৃথিবীর একপ্রান্তে হিন্দু ধর্মের লোকেদের নিশ্চিত নিরাপদ বাসস্থান .নিশ্চিত ধর্মাচারণের অধিকার .তোষণবাদী রাজনীতির শেষের ডঙ্কাধ্বনি .
                       (তাত্ত্বিক হিন্দু )