Crss colum

Tuesday, January 30, 2018

ভয়ঙ্কর ভূতের গল্প - পূর্ণিমার রাতে।

ভয়ঙ্কর ভূতের গল্প - পূর্ণিমার রাতে।
ভয়ঙ্কর ভূতের গল্প - পূর্ণিমার রাতে

শেষ বাস টা মোহন কে যখন গোপালগঞ্জ মোড়ে নামিয়ে দিলো ঘড়িতে তখন রাত পৌনে বারোটা।

এখানে থেকে তাদের গ্রাম তেনিয়া  হাঁটাপথে  প্রায় এক ঘন্টার রাস্তা। আসলে দেরীটা করেছে ঐ মিলন সংঘ ক্লাব কর্তৃপক্ষ। মোহন শ‍্যামা সঙ্গীত গায় । টুকটাক এদিকে ওদিকে গান গাওয়ার ডাক আসে।টু পাইস ইনকাম হলো ,তার সাথে অল্প নামডাক । তবে এটা মোহনের পেশা নয় বরং নেশা ।তবে নেশাটা প্রবল।এক সময় সারাদিন গান নিয়েই মেতে থাকতো। বাবা প্রতিষ্ঠিত হোমিওপ্যাথি ডাক্তার। পড়াশোনায় মোহন ছোটবেলা থেকেই খুব ভালো না হলেও খারাপ ছিল না। কিন্তু ঐ গানের ভূত পড়াশোনা বেশি দূর হতে দিলো না। উচ্চ মাধ্যমিকের পর কলেজে ভর্তি হয়েও একদিনের জন্য কলেজ মূখো হয়নি। সারা দিন পড়ে থাকতো হরিশংকর বৈরাগী র কাছে। তবে সেটা যে শুধু গানের কারণে তা নয় , কারণ আরো একটা ছিলো। কিন্তু সে সব কথা মোহন মনে রাখতে চায় না। মনে পড়লে শুধু ই কষ্ট হয়।
আজ মোহনের ষ্টেজ পাওয়ার কথা ছিল সাতটায়। কিন্তু অনুষ্ঠান শুরু হতে হতে ই সাতটা বেজে গিয়েছিল। উদ্ধোধনী সংগীত, সভাপতির ভাষণ,হ‍্যানাত‍্যানা ইত‍্যাদীর শেষে মোহন ষ্টেজে পেলো তখন ঘড়িতে আটটা পনেরো। টানা ছটা গান শোনানোর পরেও দর্শকদের অনুরোধে আরো দুটি গান গাইতেই হলো। টিফিনের প‍্যাকেট আর সাম্মানিকের খাম হাতে নিয়ে সোজা রেল ষ্টেশনে। শেষ ট্রেন ধরে যখন আসানসোলে নামল তখন রাত সাড়ে দশটা। একটা রিক্সা নিয়ে বাসষ্ট্যান্ডে এসে দেখলো শেষ বাসটা চলে যাবার উপক্রম করছে। শেষ বাসটা ধরে মোহন নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করলো।



বাস থেকে নামার পর ,চলে যাওয়া বাসের লাল টেইল লাইট টার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে রইল। ধীরে ধীরে লাইটটা ছোট হতে হতে বাঁকের মুখে গিয়ে মিলিয়ে গেল।
মোহন এখন একা।তেনিয়া গ্রাম এখান হতে  পাকা রাস্তা ধরে প্রায় এক ঘন্টার পথ।তবে দামোদর নদীর পাড় ধরে হাঁটাপথে চল্লিশ মিনিটে পৌঁছে যাওয়া যায়।
মোহন আজ নদীর পাড় বরাবর রাস্তাটাই ধরলো। দামোদর এখন সরু রেখায় বইছে। মাঝে মাঝে মাইথন থেকে জল ছাড়লে হরকা বান আসে । কিন্তু সে জল বেশী দিন স্থায়ী হয়না। পুরোদমে বর্ষা এলেই দামোদর কানায় কানায় ভরে যায়।

আজ পূর্ণিমা। চারিদিক ভরা চাঁদের আলোয় উদ্ভাসিত।
হাঁটতে হাঁটতে মোহন গুনগুনিয়ে একটা শ‍্যামা সঙ্গীত ধরলো। কিছুক্ষণপর বেশ গলা ছেড়ে গাইতে শুরু করলো।
 'সকলি তোমারি ইচ্ছা,
              ইচ্ছা ময়ী তারা তুমি ….’
দামোদরের পাড় ঘেঁষে একটা বটগাছ আছে।যার একটা ডাল নদীর দিকে ঝুঁকে আছে। মোহন দূর হতে গাছটা দেখতে পেয়ে থমকে একবার দাঁড়িয়ে গেল। মনে পড়ে গেল রাধার কথা । হরিশংকর বৈরাগী র একমাত্র মেয়ে রাধা। হরিশংকর বৈরাগী ছিল মস্ত তান্ত্রিক।আর খুব ভালো শ‍্যামা সঙ্গীত গাইতে পারতেন। মোহন তার কাছে গান শেখার নেশায় পড়ে থাকতো। মাঝে মাঝে যেতো নদীর ধারে তারা ক্ষ‍্যাপার আশ্রমে।তারাক্ষ‍্যাপা হরিশংকর কে একদম দেখতে পারতো না।বলতো হরিশংকরের অনেক ক্ষমতা। কিন্তু ও সেই ক্ষমতা র সাহায্যে মানুষের ক্ষতি করে। তুই ওর কাছে যাসনে।
কিন্তু কে শোনে কার কথা।
তখন যে মোহন আর এক নেশায় পড়েছে।এ নেশা যে গানের থেকে ও প্রবল।
হরিশংকরের কাছে যেতে যেতে মোহন কবে যে রাধা র প্রেমের জোয়ারে ভেসে গেল তা মোহন নিজেও বলতে পারবে না। তবে এই প্রেম পরিণতি পাওয়ার আগেই অকালে ঝরে গেল। মোহনের বাবা একদিন তাদের দুজনকে নদীর ধারে একসাথে দেখে সোজা হরিশংকর বৈরাগী র কাছে গিয়ে ভয়ানক অপমান করে এলো। বলে এলো বাপ মেয়ে দুজনে বড় লোকের ছেলে দেখে প্রেমের ফাঁদে আটকে সব কিছু কবজা করে নেওয়ার চক্রান্ত করছে।বাবার অপমান সবচেয়ে বেশি আঘাত করলো রাধাকে।
সেই রাত্রে গঙ্গার ধারে ঐ বটগাছের হেলে পড়া ডাল থেকে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে পড়ে ছিল রাধা।
পরের দিন সকালে  লোকের মুখে খবর শুনে দৌড়ে গিয়ছিলো মোহন। গিয়ে দেখলো রাধার লাশ   গাছ থেকে নামানো হয়েছে । মোহন অনেক কেঁদেছিল।
হরিশংকর বৈরাগী মোহন কে দেখে ডুকরে কেঁদে বলে উঠেছিল, “আমার মেয়ে ছাড়া কেউ ছিল না,আজ আমার মেয়ে যেমন অপঘাতে মারা গেলো তেমনি তোর জীবন আমি ছিনিয়ে নেবই।”
তারপর দিন থেকে হরিশংকর বৈরাগী কে কেউ আর এই অঞ্চলে দেখতে পায়নি।
তারাক্ষ‍্যাপা মোহন কে বলেছিলো , দুঃখ করিসনা। এই জগতে যা ঘটবার তা ঘটবেই। এতে তোর কোন দোষ নেই। তুই তো রাধাকে নিঃসার্থ ভাবে ভালো বেসেছিলি। উভয়ের কপালে ই মিলন ছিল না তাই ভাগ্য হয়তো এই ভাবে দুজনকে বিচ্ছিন্ন করে দিল। তবে হরিশংকর মোটেই ভালো নয়।ও তোর কিছু ক্ষতি করার চেষ্টা করবে। তবে আমি থাকতে ভয়ের কিছু নেই।
মোহন এখনো তারাক্ষ‍্যাপার আশ্রমে যায়।তারাক্ষ‍্যাপা খুব সুন্দর বাঁশি বাজায়। আশ্রমে গেলেই মোহনকে শ‍্যামা সঙ্গীত শোনাতে হয়,আর তারাক্ষ‍্যাপা বাঁশি তে সঙ্গত দেয়। কয়েকদিন আগে মোহন আশ্রমে গিয়েছে, সেদিন হঠাৎ তারাক্ষ‍্যাপা বললো , তোর সামনে খুব বড় বিপদ আসছে। তুই তাকে রুখতে পারবিনা।কাল আমাবস্যা, ভালো দিন সকালে স্নান করে পাঁচ রকমের ফল, ফুল নিয়ে ও একটি ধুতি পরে আমার কাছে আসবি। কাল তোকে দীক্ষিত করবো। তুই আমার শিষ্যত্ব নিলে তোর যে কোন বিপদ হলে আমি জানতে  পারবো। সেক্ষেত্রে আমি তোকে বাঁচাবো।
মোহন এমনিতেই তারাক্ষ‍্যাপাকে মনে মনে গুরু বলে মানতো।আজ এমন প্রস্তাবে যেন আকাশের চাঁদ হাতে চলে এলো। পরদিন সেই মতো তারাক্ষ‍্যাপার কাছে গিয়ে দীক্ষা নিলো। দীক্ষা র পর গুরুদেব বললেন,আজ হতে তোর সব কিছুর ভার আমি নিলাম।
আজ দূর হতে বটগাছ টা দেখেই মোহনের কেমন গা ছমছম করতে লাগলো। মোহন এমনিতেই খুব সাহসী ছেলে। কতবার রাত দূপুরে এই দামোদরের চর দিয়ে একা বাড়ি ফিরেছে।
কিন্তু আগে তো কখনো এমন হয় নি। কিন্তু এত রাতে  এতটা এসে সামনে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই।
বটগাছ টা পেরিয়ে আরো একটু এগোলেই গুরুদেবের আশ্রম। মোহন ঠিক করলো আজ আর বাড়ি গিয়ে কাজ নেই। রাতটুকু না হয় আশ্রমেই রয়ে যাবে।
বটগাছের কাছে চলে এলো মোহন।
না কেউ কোথাও নেই। শুধু শুধু ভয় পাচ্ছিল মোহন। দ্রুত বটগাছ টিকে পেরিয়ে চলে এলো মোহন।
ঠিক সেই মুহূর্তে গাছ থেকে একটা মেয়েলি কণ্ঠ বলে উঠলো , “মোহনদা ।”
মোহন চমকে উঠলো। গলাটা তার চেনা।
গলার স্বর টা রাধার
মোহন ঘুরে তাকালো।দেখলো বটগাছের যে ডালে  রাধা গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলেছিলো, সেই ডালটিতে বসে রাধা পা দোলাচ্ছে। মোহন তার দিকে তাকাতে সে সরসর করে টিকটিকির মতো গাছ থেকে নেমে এলো।
নেমে এসে রাধা মোহনের সামনে এসে দাঁড়ালো।
ফটফটে চাঁদের আলোয় রাধাকে আরো রূপসী লাগছে।যে রাধাকে মোহন নিজের চোখে আগুনে পুড়ে যেতে দেখেছে, সেই রাধা আবার তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু এ রাধা নয়, রাধার প্রেত। এই বিপদের কথাই কি গুরুদেব বলেছিলো?
রাধা বললো,কি হলো মোহনদা? একদিন আমাকে না দেখে থাকতে পারতে না,আজ আমায় দেখে মনে হচ্ছে খুব খুশি হওনি। এই কথা বলে রাধা বীভৎস ভাবে খিলখিল শব্দ করে হাসতে লাগলো। পূর্ণিমা রাতে নির্জন দামোদরের চরে  সেই অপার্থিব হাঁসি এক ভয়াবহ পরিবেশ তৈরি করলো।
হাঁসি থামিয়ে রাধা বললো , “আমার সাথে এস । আজ থেকেই আমার একা থাকার দিন শেষ। আমরা চিরকালের জন্য এক হয়ে যাবো।”
মোহন মন্ত্রমুগ্ধের মতো রাধার পিছন পিছন দামোদরের চরে নামলো। মোহনের বুদ্ধি তাকে পালিয়ে যেতে বলছে, কিন্তু পুরো শরীর অবশ হয়ে গেছে। মোহনের শরীর তার বশে নেই। শেষ গ্রীষ্মের দামোদরের চর। একপাশ দিয়ে জল বইছে। রাধার পিছু পিছু একেবারে জলের কিনারায় এলো মোহন।দেখলো একজন দাঁড়িয়ে আছে।মোহন তাকে চিনতে পারলো।
সে হরিশংকর বৈরাগী। হরিশংকর মোহনকে দেখে একটা বীশ্রী হেসে হিসহিসে গলার স্বরে বললো , বলেছিলাম প্রতিশোধ নেবোই। আজ সেই রাত।রাধার প্রেতকে জাগ্রত করেছি। কিন্তু তার প্রেতের মধ্যে ও এখনো তোমার প্রতি প্রেম আছে। এবারে তোমায় সামনে রেখে যজ্ঞে বসবো।এ যজ্ঞ  ভূতডামর তন্ত্রের  অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে ।সব জোগাড় আমি তিলতিল করে করেছি। এই যজ্ঞের শেষে রাধার প্রেতাত্মা প্রতিশোধ স্পৃহায় পাগল হয়ে উঠবে। তখন সে আমার আদেশে তোমার মুন্ডিটা ছিঁড়ে এই যজ্ঞের আগুনে পূর্ণাহুতি দেবে।
হরিশংকর এরপর সামনে রাখা যজ্ঞ কুন্ডের  সামনে বসলো। উল্টো দিকে রাধার প্রেতাত্মা ও মোহন বসলো।
হরিশংকর ইশারা করতেই রাধার প্রেতাত্মা যজ্ঞের কুন্ডে ফুঁ দিলো। ফুঁ দিতেই দপ করে আগুন জ্বলে উঠলো।
সেই লেলিহান আগুনের শিখার সামনে মন্ত্রোচ্চারণ করে চলেছে হরিশংকর।প্রতি মূহুর্তে মোহন লক্ষ্য করলো রাধার প্রেতাত্মা র মুখটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। কিছু একটা করতেই হবে। বাঁচতেই হবে। একথা ঠিক রাধার , হরিশংকরের সাথে যা ঘটেছে তা ঠিক নয়। কিন্তু তাতে মোহনের কোন দোষ নেই।মোহন তো রাধাকে সত্যি ই ভালোবেসেছিলো। কিন্তু এই সংকটময় মুহুর্তে মোহন কিই বা করবে। মোহন একমনে গুরুদেব কে ডাকতে লাগলো।
হঠাৎ কানে গুণগুণ করে একটা শব্দ ভেসে এলো।ক্রমশ  শব্দটা জোরে হতে লাগলো। শব্দ টা বাঁশির শব্দ। গুরুদেবের বাঁশির শব্দ।বাঁশির শব্দ ক্রমশ তীব্র হতে তীব্র তর হতে লাগলো। আশ্চর্য শব্দের তীব্রতা র সাথে মোহনের শরীরের জোর ফিরে আসতে লাগলো। হঠাৎ মনে হলো গুরুদেব মোহনকে বলছে, “দৌড় মোহন, দৌড়।”
মোহন উঠে দাঁড়ালো। তারপর পাড়ের দিকে দৌড় লাগালো।
হরিশংকর চিৎকার করে উঠলো , “ধর রাধা,ধর।তোর শিকার পালাচ্ছে,ধর ওকে।”
মোহন তখন অনেক টাই এগিয়ে গেছে। কিন্তু দ্রুত পিছনে একটা নুপুরের  শব্দ  এগিয়ে আসছে। কিন্তু তার আওয়াজ কে ছাপিয়ে একটা জলদগম্ভীর শব্দ ভেসে আসছে।মাইথন থেকে জল ছেড়েছে। এখুনি পুরো দামোদর জলে ভেসে যাবে।মোহন আরো তাড়াতাড়ি দৌড়তে লাগলো।ঐ তো আর একটু গেলেই পাড়। পিছনে নুপুরের শব্দটা এখনো এগিয়ে আসছে।
সামনে হঠাৎ একটা মূর্তি কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলো। মূর্তি টি বলে উঠলো, “আয় আমার কাছে আয়।”মূর্তি টি গুরুদেব স্বয়ং।শিষ‍্যর বিপদ বুঝতে পেরে নিজে রক্ষা করতে এসেছেন।
মোহন দৌড়ে এসে গুরুদেবের পায়ের কাছে বসে পড়লো। পিছনে পিছনে রাধা এসে দাঁড়ালো। গুরুদেব তার দিকে কিছু একটা ছুঁড়ে দিয়ে বললো, “তুমি মা, নিজের জায়গায় ফিরে যাও ।পরজন্মে তোমাদের দুজনের মিলন হবে।”
পরের মূহুর্তে বিশাল জলস্রোত পুরো দামোদর কে ভাসিয়ে দিলো।

পরের দিন গুরুদেবের আশ্রমে বসে দুজনের কথা হচ্ছিল।তারাক্ষ‍্যাপা বললেন, “যা , তোর আর ভয় নেই। তবে এ জন্মে কখনো সংসার করার চেষ্টা করবি না। তাহলে রাধার প্রেতাত্মা র হাত হতে তোর নিস্তার নাই।”
মোহন বললো, “কিন্তু হরিশংকর?”
তারাক্ষ‍্যাপা হেসে বললো, “সে বাণের জলে ভেসে গেছে।সে সম্ভবতঃ আর বেঁচে নেই।আর বেঁচে থাকলেও পুনরায় প্রেতাত্মা জাগাবার ক্ষমতা আর নেই।সে তার সব ক্ষমতাই ব‍্যবহার করে রাধাকে জাগিয়েছিল। কোন ক্ষমতা ই তার আর অবশিষ্ট নেই।”
গুরুদেব কে প্রণাম করে মোহন গ্রামের পথ ধরলো। দূরে বটগাছটির দিকে তাকিয়ে বড়ই রাধার কথা মনে পড়তেই চোখের কোণে জল চিকচিক করে উঠলো।(শেষ)

1 comment:

  1. গল্পটা পড়ার পর মনে হচ্ছে এটা ভূতের গল্প যতটা তার থেকে বেশি প্রেমের গল্প। গল্পে রাধা র শেষ পরিণতি টা একটু কষ্ট দেয়।

    ReplyDelete