Crss colum

Sunday, January 27, 2019

আটলান্টিসের পাথর 8

সুমনের প্রশ্ন শুনে বিশ্বকর্মার মুখে হাসি খেলে গেল। কিছু জবাব না পেয়ে সুমন আবার একই প্রশ্ন করলো ," স্ফটিক খন্ড কিভাবে আমাদের কাছ থেকে শক্তি সংগ্রহ করে ?"

বিশ্বকর্মা উত্তর দিলো ," মানুষের মনের তিন রকম অবস্থা ।কনশাস, সাবকনশাস, আনকনশাস। মানুষ জেগে থাকা অবস্থায়(কনশাস অবস্থায়) যা কিছু দেখে ,শোনে বা বৈজ্ঞানিক ভাষায় তথ্য (DATA) সংগ্রহ করে তা  মানব  মস্তিষ্কের এক বিশেষ অংশে জমা হয়। মানুষ ঘুমিয়ে পড়লে তখন মানুষের সাবকনশাস মাইন্ড জাগ্রত হয়। এই অবস্থায় মস্তিষ্ক সারা দিনের সংগ্রহ করা তথ্য অরগানাইজ করে।সহজ কথায় অপ্রয়োজনীয় তথ্য বাদ দেয় ও প্রয়োজনীয় তথ্য গুছিয়ে রাখে। এই সময় মানুষ স্বপ্ন দেখে। চোখের মণি ঘুমন্ত অবস্থায় নড়াচড়া করে। তারপর আসে আনকনশাস অবস্থা। এই সময় মানুষ গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন থাকে। এই অবস্থায় মস্তিষ্কের এক বিশেষ অংশ সক্রিয় হয়। সেই অংশ  সংগৃহীত যাবতীয় তথ্য অতি সুক্ষ্ম তরঙ্গ আকারে আমাদের উদ্দেশ্যে প্রেরণ করে।
আমাদের সিস্টেম  সারা পৃথিবীর সব মানুষের থেকে দুই ধরনের তরঙ্গ গ্রহণ করে। একটা পজিটিভ তরঙ্গ । দ্বিতীয় টি নেগেটিভ তরঙ্গ। আগেই বলেছি মানব জীবনের প্রেম , ভালোবাসা, উচ্চাশা ইত্যাদি পজিটিভ তরঙ্গ তৈরী করে।আর হিংসা , ঘৃণা, ভয়  , রাগ ইত্যাদি নেগেটিভ তরঙ্গ তৈরী করে।
মাটির গভীরে প্রায় পৃথিবীর অন্তঃস্থলের কাছে আমরা একটি রিসিভিং ইউনিট বসিয়েছি। সেখানে আমরা নেগেটিভ তরঙ্গ রিসিভ করি।আর পজিটিভ তরঙ্গ আমরা এক বিরাট পিরামিড আকৃতির  টাওয়ার থেকে রিসিভ করি।উভয় তরঙ্গ মিলে আমাদের   স্ফটিক খন্ড টিকে শক্তি প্রদান করে।"
অর্জুন বললো ,‘ বিরাট পিরামিড ?’
বিশ্বকর্মা বললো “ হ্যাঁ পিরামিড। তোমরা সেই পিরামিড কে কৈলাস পর্বত নামে চেনো। যাই হোক তোমাদের অনেক কিছুই বললাম।সবটা হয়তো বুঝতে পারোনি। তোমাদের বিজ্ঞান আরো উন্নত হলে সবটুকু বুঝতে পারবে। এখন চলো তোমাদের সব কিছু ঘুরিয়ে দেখাই। তাছাড়া তোমাদের বিশেষ প্রয়োজনে এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। সেটা প্রতি হাজার সৌর বৎসরে একবার হয়। প্রতি হাজার বৎসরে মাত্র তিনটি  মানুষ এই গোপন নগরীতে প্রবেশ করবার সুযোগ পায়। তোমরা হলে সেই ভাগ্যবান তিনজন। এবার চলো ..”

বিশ্বকর্মা ওদের নিয়ে তার ঘর থেকে বেরিয়ে আবার সেই বিরাট কক্ষটিতে এলো। এখানে অনেক বড়ো চৌবাচ্চা, যেগুলো অর্জুন রা প্রবেশ করার সময় দেখেছিলো। প্রফেসর বাগচী বিশ্বকর্মা কে প্রশ্ন করলেন ‘ এগুলো কি?’
বিশ্বকর্মা উত্তর দিলো “ সারা পৃথিবীর সব মানুষের থেকে যে সব তথ্য সংগ্রহ করা হয় তা এখানে  জমিয়ে রাখা হয়েছে।ঐ যে সবুজ তরল দেখছেন ওগুলো ক্লোরোফিল ও প্রোটিনের মিশ্রণ। প্রোটিনের মধ্যে  তথ্য ধারণ করার ক্ষমতা আছে।আর ক্লোরোফিল যুক্ত থাকায় এটি সরাসরি খাদ্য তৈরি করে জীবন্ত থাকে। আর ওপরে যে স্বচ্ছ পাথর দেখছো ওগুলো কোয়ার্টজ  । ওগুলো আমাদের মূল  স্ফটিক খন্ডের নির্দেশ মতো  সব তথ্য কে অ্যানালাইজ  করছে।আর এই সব তথ্য থেকে বিশ্লেষণ করে মূল স্ফটিক খন্ড মানুষের ভবিষ্যতে র রূপরেখা তৈরি করবে এবং মানুষ কে সুরক্ষা প্রদান করবে।   ”
বিশ্বকর্মা  পকেট থেকে যন্ত্র বার করে সুইচ টিপতে পুনরায় একটি পাটাতন জাতীয় যান ভেসে এলো। বিশ্বকর্মা ও ওরা তিনজন যানে উঠলো ।ইন্দ্র বললো ‘ আমার বিশেষ কাজ রয়েছে। এই মুহূর্তে সৌর মন্ডলের রক্ষা প্রণালী স্বয়ংক্রিয় ভাবে বন্ধ আছে। তাই আমাদের  অতি সতর্কতার সঙ্গে নজর রাখতে হচ্ছে। তোমরা বিশ্বকর্মার সাথে যাও । উনি তোমাদের কি করতে হবে বুঝিয়ে দেবে। বিদায় বন্ধুরা।’
ওদের পাটাতন চলতে শুরু করল। প্রফেসর বাগচী বললো “ রক্ষা প্রণালী বন্ধ কেন ?আর আমাদের কি করতে হবে ?”
বিশ্বকর্মা উত্তর দিলো ‘ রক্ষাপ্রণালী প্রতি হাজার বছরে একবার আপডেটেড হওয়ার জন্য  অটোমেটিক ভাবে বন্ধ হয়। তখন রক্ষা প্রণালী কে রি স্টার্ট করার জন্য তিন জন মানুষের প্রয়োজন হয়। তোমাদের সেজন্য এখানে আনা হয়েছে । আর  এই তিন জন মানুষকে স্বয়ং স্ফটিক খন্ড বেছে নেয় কোটি কোটি মানুষের মধ্যে থেকে। তোমাদের  যে  সব ঘটনা প্রবাহ এখানে টেনে এনেছে তা আমাদের স্ফটিক খন্ড তৈরী করেছে তার নিজের প্রয়োজনে।  ’
সুমন বললো' কিন্তু তিনজন কি হবে?'
বিশ্বকর্মা বললো ‘ তিনজনের একজন নেগেটিভ, একজন পজিটিভ, একজন নিউট্রাল শক্তি র প্রতীক। ’

ওরা যেখান দিয়ে যাচ্ছিলো সেখানে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি রয়েছে। দুই পাশে বিরাট বিরাট স্ক্রীনে সারা পৃথিবীর ঘটনা বলি দেখা যাচ্ছে।
অর্জুন প্রশ্ন করলো ‘ তোমরা কি এই সব ঘটনা বিভিন্ন নিউজ চ্যানেল থেকে সংগ্রহ করছো ?’
বিশ্বকর্মা বললো ‘ না  । ক্যামেরা আবিস্কারের আগে থেকেই এখানে আমরা সব কিছুই দেখতে পাই। এগুলো কোনো নিউজ ফিড নয়। এগুলো বিভিন্ন মানুষের ব্যক্তিগত চোখে দেখা অভিজ্ঞতা। যেগুলো তথ্য আকারে তাদের ঘুমের মধ্যে আমরা সংগ্রহ করেছি । সেগুলো এখানে প্রদর্শিত হচ্ছে। আমাদের কর্মীরা এই সব ঘটনা বলি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। ’
প্রফেসর বাগচী বললেন ' আপনারা  পুরানো আটলান্টিস ছেড়ে দিলেন কেন ?'
বিশ্বকর্মা উত্তর দিলো ‘ আমাদের গ্রহ থেকে এসে প্রথমে আমরা তাড়াহুড়ো য় একটি দ্বীপে আশ্রয় নিই। কিন্তু পরে অনুভব হয় সেই দ্বীপ সমুদ্রের হাত থেকে নিরাপদ নয়। একদিন রাতে সুনামীতে সব কিছু ধ্বংস হয় । আমরা তখন স্ফটিক খন্ড সহ এখানে  নতুন উপনিবেশ গড়ে তুলি।’
কথা বলতে বলতে ওদের যান একটা বিরাট গম্বুজের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্বকর্মা ওদের নামতে বললো।সবাই নামলে  বিশ্বকর্মা বিশাল গম্বুজ টি দেখিয়ে বলল “এই আমাদের শক্তি কেন্দ্র। এখানেই আছে সেই আশ্চর্য জীবন্ত স্ফটিক খন্ড। প্রবেশ করলে তোমরা সব কিছুই সরাসরি স্ফটিক খন্ড থেকে জানতে পারবে।”
গম্বুজের ভিতরে প্রবেশ করা মাত্রই তীব্র নীল আলোক ছটা য় ওদের তিন জনের চোখ ধাঁধিয়ে গেল। কিছুক্ষণ বাদে সকলের চোখ সয়ে এলে দেখলো  গম্বুজের মধ্যিখানে অবস্থিত   এক  সাদা পাথরের মঞ্চের উপর রাখা ক্ষুদ্র নীলাভ পাথর থেকে এই নীল আলো চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। বিশ্বকর্মা ফিস ফিস করে বললো ‘ এই সেই আশ্চর্য বিশ্বচৈতন্য র সঙ্গে সম্পর্ক যুক্ত জীবন্ত স্ফটিক খন্ড।’
ওনার কথা শেষ হওয়া মাত্রই ওদের তিনজনের মস্তিষ্কের ভিতর এক সুরেলা কণ্ঠ ধ্বনিত হলো‘ এই সৌর মন্ডলের সমগ্র জীবিত প্রাণের পরিচালক চৈতন্য মণি তোমাদের স্বাগতম জানাচ্ছি। আমি স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমি “কৌস্তভ” নামে পরিচিত।’
‘তোমরা আমার বিশেষ প্রিয়। তোমাদের যদি কোন জিজ্ঞাস্য থাকে তবে তোমরা  একটি করে প্রশ্ন করতে পারো।  ’
সুমন বললো‘ আমরা কিভাবে আপনার কথা শুনতে পাচ্ছি ?’
উত্তর সকলের মস্তিষ্কের মধ্যে ধ্বনিত হলো‘ আদিম প্রকৃতির জীব থেকে আজকের বুদ্ধিমান জীবে রূপান্তরিত হয়েছো আমার ইচ্ছায়।আমার প্রদর্শিত জ্ঞান দ্বারা দেবতা গোষ্ঠী র এই প্রজাতি তোমাদের মানব প্রজাতিতে উত্তরোণ ঘটিয়েছে। তোমাদের মস্তিষ্কের যে কোন চিন্তা আমি সরাসরি গ্রহণ করতে পারি আবার প্রয়োজনে তোমাদের মস্তিষ্কে সরাসরি বার্তা প্রদান করতে পারি। ’
প্রফেসর বাগচী প্রশ্ন করলেন‘ মৃত্যু কি? মৃত্যু র পর কি হয় ?’
উত্তর এলো‘ জীবন হলো অনেক গুলো পক্রিয়ার  সমন্বয়। যেমন কোনো যন্ত্রের মধ্যে অনেক যন্ত্রাংশ থাকে, ও তার কিছু যন্ত্রাংশ খুব জরুরি হয়, সেগুলো খুলে নিলে যন্ত্রটি স্তব্ধ হয়। আবার কিছু যন্ত্রাংশ খুব জরুরি নয় , সেগুলো খুলে নিলেও যন্ত্র টি তার মূল কাজ করতে পারে। তেমনি মানুষের শরীর একটা যন্ত্র।  কান , চোখ, হাত পা এইসব অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ছাড়াও মানুষ বেঁচে থাকতে পারে। কিন্তু হৃদয় ছাড়া  মানুষ বাঁচতে পারে না।
তবে তার চেয়ে ও প্রয়োজনীয় হলো চৈতন্য। এই চৈতন্য আমি অতি সুক্ষ্ম তরঙ্গ আকারে সব প্রাণীর ভ্রূণের মধ্যে প্রতিস্থাপন করি। এবং নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তার আয়ু প্রদান করে ক্রিয়াশীল করি। এটাই জীবন।আর চৈতন্য নির্দিষ্ট আয়ু পর্যন্ত কাজ করার পুনরায় শরীর ত্যাগ করে আমার সাথে যুক্ত হয় তখন শরীরের মৃত্যু ঘটে। এছাড়া কোনো আকস্মিক কারণে শরীর বিনষ্ট হলে চৈতন্য আমার নিকট ফিরে আসে সেক্ষেত্রেও শরীরের মৃত্যু হয়। ’
অর্জুন প্রশ্ন করলো ‘ আপনিই কি ঈশ্বর বা ভগবান।’
এবার উত্তর এলো ‘না আমি ঈশ্বর নই। তোমরা যে সৃষ্টি কর্তা র খোঁজ করো তা আমি নই। তবে আমি তার প্রতিভূ। এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের একটি চৈতন্য বা সত্বা রয়েছে। তিনি সব কিছুর সৃষ্টি কর্তা।তিনিই প্রকৃত ঈশ্বর। তিনি নিরাকার , নির্গুণ , নিস্পৃহ । তিনি সরাসরি সৃষ্টি রক্ষা র কাজে অংশগ্রহণ করেন না। তার ইচ্ছা শক্তি পুঞ্জীভূত হয়ে তার প্রতিটি সৃষ্টি কর্মের মধ্যে বিকশিত হয়। সেজন্য ই দেখো তোমাদের প্রতিটা প্রচলিত ধর্ম বিশ্বাস বলছে ‘তার ইচ্ছা ভিন্ন কোন কিছুই হয় না।’ আমি তার এই সৃষ্টি পরিকল্পনা র অংশীদার। আমি তার ইচ্ছা অনুযায়ী এই সৌর মন্ডলের সকল জীবিত প্রাণী র কর্ম পরিচালনা করে থাকি।’
“এবার তোমাদের প্রস্তাবিত কর্ম সম্পাদন করো। বিশ্বকর্মা তুমি এদের প্রস্তুত করো।”
বিশ্বকর্মা এতো ক্ষন ওদের পাশে চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল। এবার তিনি সক্রিয় হলেন।
তিনি তিনজনকে কৌস্তুভ মণির তিনদিকে সমবাহু ত্রিভুজের মতো দাঁড় করিয়ে দিলেন। বিশ্বকর্মা বললো ‘ তোমরা এই জটিল রক্ষা প্রণালী পুনরায় আপডেট করতে চলেছো। এই আপডেট শেষ হওয়ার পর তোমাদের পুনরায় তোমাদের চেনা পৃথিবীতে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এখানকার কোনো স্মৃতি তোমাদের মনে থাকবে না। তবে অনেক সময় পর সব কিছুই আবছা স্বপ্নের  মতো মনে পড়বে। এই কৌস্তুভ মণির কৃপায় তোমাদের তিন জনের শরীর নিরোগ হবে। নিজ নিজ ক্ষেত্রে তোমরা তিনজনেই উন্নতি র চরম শিখরে উঠবে।’
বিশ্বকর্মা এবার গম্বুজের একপ্রান্তে সরে গিয়ে দাঁড়িয়ে বললো ‘ প্রভু ওনারা প্রস্তুত।’
এই কথা শেষ হওয়ার পর কৌস্তুভ মণি থেকে তীব্র আলোকছটা য় চারিদিক ভরে গেল। সেই তীব্র আলোক ওরা তিনজন সহ্য করতে না পেরে চোখ বুজে ফেললো। আচমকা একটা তীব্র শঙ্খ ধ্বনিতে ওদের মস্তিষ্কের মধ্যে বাজতে শুরু করলো।
বিশ্বকর্মা এই আশ্চর্য দৃশ্যের সাক্ষী রইলো।মণি হতে তিনটি বিদ্যুতের ন্যায় আলোক তরঙ্গ বেরিয়ে ওদের তিনজনের মস্তিষ্ক কে ঘিরে ধরলো। বহু ক্ষণ এই আলোকের খেলা চললো। অবশেষে এই আলোক  স্তিমিত হলো। কৌস্তুভ মণি এতো ক্ষন নীল আলো বিকিরণ করছিল। এবার আপডেট হওয়ার পর লাল আলো ছড়িয়ে দিতে লাগলো। এই লাল আলো আরো হাজার বছর ধরে বিকিরণ হবে। তারপর আবার নতুন আপডেট হবে। নতুন কোন রং বিকিরণ হবে। ওদের তিনজন আপডেট শেষ হওয়া মাত্রই জ্ঞান হারিয়ে লুটিয়ে পড়ল।

আনন্দ বাজার পত্রিকা : বিশেষ প্রতিনিধি  - কৈলাস মানস সরোবর ভ্রমণে গিয়ে ছয় জন অভিযাত্রী  তুষার ঝড়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল  নিখোঁজ অভিযাত্রীদের মধ্যে তিনজন ভারতীয় ও তিনজন রাশিয়ার ।চীন সরকার নিখোঁজ অভিযাত্রীদের খুঁজে বার করতে বিশেষ দল তৈরী করে। ভারত সরকারের বিদেশ দফতর বিশেষ চাপ দেয় তিন অভিযাত্রীকে খুঁজে বার করার জন্য। নিখোঁজ অভিযাত্রীদের মধ্যে কোলকাতার দুই জন যুবক আছে। তিনদিন বাদে  কৈলাস থেকে অনেক দূরে মানস সরোবরের তীরে তিন জন ভারতীয় অভিযাত্রী কে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। তৎক্ষণাৎ তাদের হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জ্ঞান ফিরে পাওয়ার পর তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর দেখা যায়  তুষার ঝড় শুরু হওয়ার পর কি হয়েছিল তা তাদের কিছুতেই মনে পড়ছে না। ডাক্তাররা মনে করছেন ভয়াবহ তুষার ঝড়ে তাদের স্মৃতি লোপ পেয়েছে। তবে তাদের তিন জনের হাতে একটি করে সোনার ত্রিভুজ আঁকা আংটি আছে দেখা যায়। এই ত্রিভুজ আঁকা আংটি কি ভাবে তাদের তিনজনের হাতে এলো এবং তারা তিনজন কৈলাস পর্বত থেকে অতদূরে মানস সরোবরের তীরে কিভাবে পৌছালো এই নিয়ে রহস্য ঘনীভূত হয়েছে। কোলকাতার যুবক দুই জনের  আত্মীয় কাঠমান্ডু রওয়ানা দিয়েছেন । এই বিষয়ে আরো কিছু জানা গেলে পাঠকদের কাছে তা পুনরায় জানানো হবে।(শেষ)

Friday, January 25, 2019

God

আমি ঈশ্বরের প্রয়োজন বোধ করি না।
আমি এক সময় খুবই ঈশ্বর বিশ্বাসী মানুষ ছিলাম। রামায়ণ মহাভারত পুরাণ উপনিষদ তথা হিন্দু ধর্মের যত বই পেয়েছি গোগ্রাসে গিলেছি।সব কিছুতেই পরম মঙ্গল হবে এই বিশ্বাস তৈরি হয়ে গিয়েছিল। নিজের যাবতীয় অক্ষমতা ঈশ্বর বিশ্বাস দিয়ে ঢেকে দিতাম। কেউ যদি আমায় কোনো দুঃখ দিতো তবে ভাবতাম ঈশ্বর বোধহয় তাদের সঠিক সময়ে উচিত শিক্ষা দেবেন। কিন্তু সেই সঠিক সময় আর এই জন্মে হবে বলে মনে হয় না।  কতো পাপী লোককে দেখে ভাবতাম একদিন ঈশ্বর এদের শাস্তি দেবেন। কিন্তু তারা প্রায় সকলেই ড্যাং ড্যাং করে ইহজাগতিক সব সুখ সুবিধা ভোগ করে পরলোকে পাড়ি দিলো।
নিজের চোখে দেখেছি কতো সুন্দর সুখী পরিবার সামান্য ঘটনার জন্য ধ্বংসের দোরগোড়ায় পৌঁছে যেতে। হয়তো বা একটা দুর্ঘটনা অথবা কালরোগ অজস্র মানুষ কে পথের ভিখারি তৈরি করে দিয়েছে।কে বলতে পারে এই সব ঘটনা আপনার সঙ্গে ঘটবে না।যে কোন মুহুর্তে ঘটতেই পারে।
মনে করুন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্য টির যদি এমন কিছু হয় তবে সেই পরিবারের ভবিষ্যত কি হবে ?
আমি তো ভাবলেই শিউরে উঠি।
আপনি ঈশ্বর বিশ্বাসী হলেও এমন হতে পারে অথবা ঈশ্বর অবিশ্বাসী হলেও এমন হতে পারে।
আমার মনে হয় আমরা হয়তো ঈশ্বর বিশ্বাস কিছুটা ভয় পেয়ে করে থাকি।
কি বললেন ?
একথা মিথ্যা ?
বেশ আপনার জীবনের কোন আকস্মিক দুঃখের ঘটনা র জন্য প্রাণ ভরে ঈশ্বর কে গালাগালি পাড়ুন তো।
আমি জানি ঈশ্বরের নামে খারাপ ভাষা প্রয়োগ করতে আপনার বুক কাঁপবে।
কারণ ভয়। এটা মেনে নিন যে আমরা ঈশ্বরকে ভয় পাই। ঠিক যেমন অফিসের বস কে ভয়ে ভক্তি করি।
সবচেয়ে ভালো আমার পন্থা অবলম্বন করুন।
ঈশ্বর থাকলে থাকুক আমার কিছু আসে যায় না। আমি ঈশ্বরের পায়ে মাথা নত করবো না।
নিজের যে কোন বিপদ আসুক ক্ষতি নেই।দম থাকলে লড়বো। দম না থাকলে সিম্পল হেরে যাবো।কারণ  হার জিত জীবনের অঙ্গ। মাঝখানে ঈশ্বর কে সাহারা করার চেষ্টা করবো না।
পৃথিবীর অসংখ্য প্রাণী কুল আছে যারা নিজের   বল ভরসায় জীবিত আছে।তারা ঈশ্বর , ধর্ম ,  সম্পদ ইত্যাদি নিয়ে চিন্তিত নয়।

হয়তো এমনি করেই একদিন অনুভব হবে অদ্বৈত বাদের সেই অমোঘ বাণী "আমিই ঈশ্বর"।।

Saturday, January 12, 2019

আটলান্টিসের পাথর 7

বিশ্বকর্মা যখন বললেন ওনারা মানুষ নয় আলাদা জাতি , তখন সুমনের মনে কৌতুহল হলো যে ওনারা পৃথিবীতে এলেন কেন?
সুমন কৌতুহল চেপে রাখতে না পেরে বলেই ফেললো ,"আপনারা আসলে কোন জায়গার বাসিন্দা ?আর এখানে এলেন কেন ?"
বিশ্বকর্মা উত্তর দিলো ,"আমরা অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি র অন্তর্ভুক্ত আদিত্য নামের এক নক্ষত্রের চারিদিকে ঘূর্ণায়মান অমরাবতী গ্রহের বাসিন্দা। আমাদের গ্রহ খুব সুন্দর ও সম্পদে ভরপুর। কোনো কিছুর অভাব আমাদের ছিল না। আমরা কেবল জ্ঞান লাভ কে জীবনের একমাত্র লক্ষ্য বলে মনে করি।তাই আমরা শুধু জ্ঞান চর্চা করি।আর এটাই আমাদের গ্রহ অমরাবতী কে আশেপাশের অন্যান্য গ্রহ থেকে অনেক উন্নত করেছে। আমাদের বিজ্ঞান এতোটাই উন্নতি করেছে আমাদের মৃত্যু রোধ করে অমরত্ব দান করেছে।  এর অর্থ সাধারণ ভাবে বার্ধক্য ও জরা আমাদের কিছুই করতে পারবে না। যদিও এই অমরত্ব পেতে আমাদের প্রজনন ক্ষমতা সম্পূর্ণ ভাবে নষ্ট হয়ে গেছে।এর অর্থ আমাদের জনসংখ্যার হ্রাস বা বৃদ্ধি কোনোটাই আর হবে না।আমরা শান্তি র পূজারী। কিন্তু আমাদের শান্তি মাঝে একবার বিঘ্নিত হয়েছিল। আমাদের গ্যালাক্সি র অপরপ্রান্তে একটি গ্রহ আছে।যার নাম পাতাল। সেই গ্রহের অধিবাসীদের আমরা অসুর বলে থাকি।অসুর কুল আমাদের মতোই জ্ঞান বিজ্ঞানে উন্নত। কিন্তু তারা  দীর্ঘ আয়ু ও যৌবনের রহস্য জানলেও এখনো অমরত্বের জ্ঞান আবিষ্কার করতে পারে নি। তাদের জ্ঞান তারা শান্তির উদ্দেশ্যে চালনা করে নি। তাদের মূল লক্ষ্য এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সব গ্যালাক্সি র দখল নেওয়া। তাদের এই দখল নেওয়ার পথে সবচেয়ে বড়ো বাধা আমরা। আমাদের জাতির নাম দেবতা।অসুরকুল বহু বার অমরাবতী আক্রমণ করেছে। কিন্তু ‌প্রতিবার আমাদের জ্ঞানের কাছে পরাজিত হয়েছে। কিন্তু বহুকাল আগে একবার আমাদের প্রতিরক্ষা যন্ত্রগুলোর অসতর্কতায় তারা অমরাবতীর অনেক ভিতরে প্রবেশ করে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আমাদের ‌প্রতিরক্ষা উপগ্রহের গোপন চোখ তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে যায়। শুরু হয় ভীষন সংগ্রাম। অসুরেরা এতোটা ভিতরে প্রবেশ করার পর সেই জায়গার দখল সহজে ছেড়ে যেতে রাজি নয়। দীর্ঘ কাল ব্যাপী এই লড়াই চলতে থাকে।
এই লড়াই চলাকালীন একসময় আমাদের গ্রহের পরিচালক সমিতির তিন সদস্য এক গোপন আলোচনায় আমাকে ও ইন্দ্রকে ডাকে। যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি থেকে বোঝা যাচ্ছিল না সেই যুদ্ধ কতোদিন চলবে। আমাদের গ্রহের অর্জিত জ্ঞান ভান্ডারের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সবচেয়ে জরুরি ছিল । সেখানে ঠিক হয় এই জ্ঞান ভান্ডার কে একটি ক্ষুদ্র  স্ফটিক খন্ডের মধ্যে ভরে নিরাপদ স্থানে লুকিয়ে রাখা হবে।  এবং এই কাজে ব্যবহার করা হয় আমাদের উন্নত বিজ্ঞানের আবিষ্কার চেতনা সমৃদ্ধ স্ফটিক খন্ড। এই স্ফটিক খন্ড স্বয়ং সম্পূর্ণ। এটা বিশ্বচৈতন্য র সাথে যুক্ত।"
এক মূহুর্তের জন্য বিশ্বকর্মা থামতেই প্রফেসর বাগচী ফস করে প্রশ্ন করলো ,"বিশ্বচৈতন্য ?"
বিশ্বকর্মা উত্তর দিলো ,"হ্যাঁ বিশ্বচৈতন্য। তোমাদের কিছু বিজ্ঞানী সবে আভাস পেতে শুরু করেছেন যে এই বিশ্ব জীবন্ত। কিন্তু আমরা বহু আগে থেকেই জানি যে এই বিশ্বের চৈতন্য বা সেন্স আছে।আর আমরা সবাই ও সব কিছুই এই চৈতন্য র অন্তর্ভুক্ত।
এই চৈতন্য সুক্ষ্ম ভাবে সব কিছুই নিয়ন্ত্রণ করে। এই চৈতন্য কখনো শুভ শক্তির জয় আনে আবার কখনো অশুভকে শক্তিশালী করে।"
সুমন বললো ,"আপনি বলছেন এই বিশ্ব চৈতন্য খুব সুক্ষ্ম ভাবে সব কিছু ঠিক করে। তাহলে বিশ্বচৈতন্য তো ইচ্ছে করলে সম্পূর্ণ অশুভ কে ধ্বংস করতে পারে।"
বিশ্বকর্মা উত্তর দিলো ,"নিশ্চয়ই পারে, কিন্তু এটা কি জানো আল্টিমেট শুভ বা আল্টিমেট অশুভ বলে কিছু নেই।একই বস্তু ,একই ঘটনা,একই সময় ,একই ব্যক্তি কখনো শুভ হিসাবে দেখা যায় আবার কখনো অশুভ হয়ে প্রকাশ হয়।"
বিশ্বকর্মা বললো ,"এই যে তোমরা এখানে এসেছো ,এটা তোমাদের মনে হতে পারে যে তোমরা নিজেদের ইচ্ছামত এখানে এসেছো। আসলে তা সম্পূর্ণ সত্য নয়। আমাদের শক্তি র উৎস সেই আশ্চর্য স্ফটিক খন্ডের ইচ্ছায় বিশেষ প্রয়োজনে এখানে উপস্থিত হয়েছো। উপযুক্ত সময়ে সেই বিষয়ে তোমরা তিনজনেই সেটা জানতে পারবে।
এখন পুরো ঘটনা টা মন দিয়ে শোন।
সেই জ্ঞানের আধার স্ফটিক খন্ড নিয়ে  আমাদের এক বিশাল যুদ্ধ যান উপযুক্ত স্থানের সন্ধানে বের হলো। বাকি দেব সৈন্য অমরাবতী তেই রইলো দখলদারদের হাত থেকে অমরাবতী কে রক্ষা করার জন্য। এখনো সেই লড়াই চলছে। যুদ্ধযানের দায়িত্বে রইলো এই ইন্দ্র দেব।আর আমরা তার সহযোগী হয়ে রইলাম।পু্রো অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি তে নিরাপদ জায়গা খুঁজে না পেয়ে আমরা মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সি তে এলাম। এখানে বিভিন্ন নক্ষত্র মন্ডলী খুঁজে অবশেষে আমরা পৃথিবীতে প্রবেশ করলাম। তখন পৃথিবীতে ডায়নোসর জাতীয় ভয়াবহ প্রাণীদের উপস্থিতি।তাই আমরা সমুদ্রের মাঝখানে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ এক দ্বীপে ঘাঁটি তৈরী করলাম। শক্তির উৎস স্ফটিক খন্ড এক বিরাট পিরামিড তৈরি করে তার মধ্যে রেখে দেওয়া হলো। এই সৌর মন্ডলের শেষ প্রান্তে স্ফটিক খন্ডের সহায়তায় এক স্বয়ংক্রিয় জটিল রক্ষা প্রণালী তৈরী করা হলো। বহির্বিশ্ব থেকে যে কোন যান এই সৌরমণ্ডলে প্রবেশ  করলে এই জটিল প্রণালী তৎক্ষণাৎ আমাদের জানিয়ে দেবে। এবং শত্রু মিত্র ভেদে আমরা উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে পারবো।
কিন্তু এই রক্ষা প্রণালী র এক দুর্বলতা আছে। শক্তি র উৎস স্ফটিক খন্ডের  শক্তি থেকে এই রক্ষা প্রণালী শক্তি পায়।আর স্ফটিক খন্ড এই শক্তি সংগ্রহ করে যে গ্রহে অবস্থান করছে সেখানকার অধিবাসীদের আবেগ থেকে। প্রেম, ভালোবাসা, উচ্চাশা ইত্যাদি পজিটিভ শক্তি দেয় ।আর রাগ , ক্রোধ , কাম  ইত্যাদি নেগেটিভ শক্তি দেয়। এই  সব শক্তি স্ফটিক খন্ড সরাসরি তাদের মস্তিষ্ক থেকে গ্রহণ করে। নেগেটিভ ও পজিটিভ শক্তি একত্রিত করে সাম্যতা বজায় রাখে।
আমরা যখন এই গ্রহে আসি তখন শুধু অনুন্নত মস্তিষ্কের ডায়নোসরের রাজত্ব। শুধু আমাদের কয়েকজনের মস্তিষ্কের শক্তি এই স্ফটিকের পক্ষে যথেষ্ট ছিলো না।তাই আমরা উন্নত প্রাণী সৃষ্টির দিকে মনোযোগ দিলাম। আমাদের প্রজাতি প্রজনন ক্ষমতা হীন। তাই এখানকার বিভিন্ন নিম্ন স্তরের প্রাণীর ডি এন এ তে বদল ঘটিয়ে উন্নত প্রাণীতে রূপান্তরিত করার প্রচেষ্টা শুরু হলো। কিন্তু তার জন্য প্রথমেই প্রয়োজন ডায়নোসরের বংশ সমূলে ধ্বংস করার। আমাদের উন্নত অস্ত্র সরাসরি ও বিভিন্ন প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটিয়ে ডায়নোসর দের ধ্বংস করে দেওয়া হলো।
এদিকে উন্নত প্রাণী তৈরী করার জন্য আমরা বেছে নিলাম এক প্রকার লেজ হীন বনমানুষ। তাদের ডি এন এর সাথে আমাদের ডি এন এ মিশিয়ে তৈরী হলো আধুনিক মানুষ। এই আধুনিক মানুষের মস্তিষ্কে আমরা বিশেষ কিছু প্রোগ্রামিং জুড়ে দিলাম যাতে প্রতিটি মানুষ বংশ পরম্পরায় স্ফটিক খন্ডের সাথে মানসিক ভাবে জড়িত থাকতে পারে। সুতরাং বুঝতেই পারছো আমরাই মানুষের সৃষ্টি কর্তা। প্রয়োজনে আমরা স্ফটিক খন্ডের সাহায্য নিয়ে যে কোনো একটি মানুষ বা সমষ্টি বা সমগ্র মানবজাতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। তবে সাধারণত আমরা তা করি না। বরং মানব জাতিকে স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা প্রদান করে ভাগ্য নির্ধারণ করার ক্ষমতা দিয়েছি। তবে কখনো যদি মানব জাতির অস্তিত্বের  সংকট দেখি তবে শুভ চেতনা বৃদ্ধি করে পজিটিভ শক্তি বৃদ্ধি করি যাতে শুভ সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুকূল হয়।"
সুমন বললো "একটি প্রশ্ন আছে। স্ফটিক খন্ড আমাদের কাছ থেকে কিভাবে শক্তি সঞ্চয় করে ?"(ক্রমশ)



Tuesday, January 8, 2019

আটলান্টিসের পাথর 6

খেলা যে এই ভাবে ঘুরে যাবে প্রফেসর বাগচী বুঝতে পারে নি।
আটলান্টিসের প্রবেশ দ্বারে যে পাথরের পাঁচিল ছিল সেটা খুলতে না পেরে প্রফেসর বাগচী তার রাশিয়ান মাফিয়া সঙ্গী দ্বারা বিস্ফোরকের সাহায্যে উড়িয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে। অর্জুন তাকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। ওনাকে এই পাহাড়ে বিস্ফোরণ ঘটালে তুষার ধ্বসের বিপদ সম্পর্কে অবহিত করে । কিন্তু উনি তখন আবিষ্কারের নেশায় হিতাহিত জ্ঞান শূন্য।
বিস্ফোরক সেট করে যে মূহুর্তে
প্রফেসর বাগচী আদেশ দেবে ঠিক তখনই সকলকে বিস্মিত করে ঘরঘর শব্দের সাথে পাথরের দেওয়াল সরে গেল।ভিতরে একটা বিশাল লম্বা সুড়ঙ্গ।
 সুড়ঙ্গের ভিতর থেকে একটা তীব্র  সার্চ লাইটের আলো এসে সকলের উপর পড়লো ।চোখ ধাঁধিয়ে গেল সকলের। তারপরেই লাল রঙের আলোর বিম এসে অস্ত্র ধারী তিন রাশিয়ান মাফিয়াদের কপালের  উপর পড়লো। কেউ কিছু বোঝার আগেই  তিন অস্ত্র ধারী মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। প্রত্যেকের কপালে ফুটো।
মাফিয়া তিনটি মারা যাওয়ার পর সার্চ লাইটের আলো নিভে একটা হালকা নীলচে আলো জ্বলে উঠলো।
এরপর ওদের অবাক করে একটা ছোট গাড়ীর মতো যান  হাওয়ায় ভেসে এলো।যানটি ওদের কাছটিতে এসে মাটি থেকে দুই ফুট উঁচু তে শূন্যে স্থির হয়ে গেল।যানটিতে বেশ কয়েকটি বসার আসন। যানটির নিচের বসবার আসনযুক্ত অংশটা ধাতুর তৈরি। উপরটা স্বচ্ছ কাঁচ  দিয়ে ঢাকা। ওদের কাছে এসে   কাঁচের ঢাকা টি সরে গেল। একটা যান্ত্রিক স্বর বলে উঠলো " সকলে আসন গ্রহণ করুন।"
ওরা তিনজন হাওয়ায় ভেসে থাকা যানটিতে উঠে বসলে ওপরের কাঁচের ঢাকা টি আবার আপনা থেকেই বন্ধ হয়ে গেল।
যানটি চলতে শুরু করল। সুড়ঙ্গপথে যানটি প্রবেশ করা মাত্রই পিছনের পাথরের দেওয়ালটি পুনরায় বন্ধ হয়ে গেল।যানটি  প্রথমে ঢিমেতালে তারপর বেশ দ্রুত চলতে লাগলো।
সুড়ঙ্গপথ টি আলোকিত। পুরো পথ জুড়ে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি বসানো। ওরা অবাক হয়ে সব কিছু পর্যবেক্ষণ করতে লাগলো। প্রফেসর বাগচী অর্জুন ও সুমন কে এটা ওটা বুঝিয়ে দিতে লাগলেন। কিছুক্ষণ আগে যে তিনি ওদের সঙ্গে শত্রুর মতো আচরণ করছিলেন সেটা যেন ভুলেই গেছেন। আসলে এই ধরনের জ্ঞান পিপাসু মানুষ গুলো অন্য ধরনের হয়।এরা হয়তো সাময়িক বিদ্বেষ বশত কোনো খারাপ কাজ করে ফেলে আবার পরবর্তী কালে সেগুলো ওদের মনে চিরস্থায়ী রেখাপাত করে না।
যানটি সুড়ঙ্গের গোলক ধাঁধা পেরিয়ে এক বিশাল উন্মুক্ত স্থানে গিয়ে পড়লো । অনেক ওপরে  পাথরের ছাদ । নির্দিষ্ট দূরত্ব অন্তর বিরাট বিরাট স্তম্ভ  ছাদটিকে ধরে রেখেছে। যানটি এখন যে জায়গা দিয়ে যাচ্ছে তার দুই পাশে কাঁচের তৈরি ঘরে চাষবাস হয়েছে। সূর্যের আলোর বদলে কৃত্রিম আলো ব্যবহার করা হয়েছে।যানটি আবার বেশ একটু ধীর গতিতে চলছে।যান টি যারা পরিচালনা করছেন তারা মনে হয় চায় যে এরা তিনজন সব কিছুই ভালো করে দেখুক।
প্রফেসর বাগচী বললেন ,"এই যে পাথরের ছাদ দেখছো আমার মনে হয় এর ওপরে রয়েছে মানস সরোবর। প্রত্যক্ষদর্শীরা কিছু মানুষ বলে থাকেন যে "রাতের অন্ধকারে কিছু উজ্জ্বল আলোক রশ্মি দেখা যায় যে মানস সরোবরের ওপরে এসে পড়ে। প্রচলিত ধর্ম বিশ্বাস অনুযায়ী রাত্রি বেলায় দেবতার দল মানস সরোবরের জলে স্নান করতে আসে। আমার ব্যক্তিগত মতামত এই যে কৈলাস পর্বতের এই প্রবেশ দ্বার এখানকার অধিবাসীরা বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ব্যবহার করেন না ,মানস সরোবরের ভিতরে কোনো প্রবেশ দ্বার আছে ওদের যান সরাসরি কোনো অজ্ঞাত প্রযুক্তি র সাহায্য নিয়ে ঐ দ্বার দিয়ে এই গোপন জগতে প্রবেশ করে।"
সুমন বললো "দেখ অর্জুন , কৃষি জমি শেষ দূরে একটা দুটো করে বাড়ি ঘর দেখা যাচ্ছে।"
ওরা সবিস্ময়ে তাকিয়ে দেখলো একটা দুটো করে স্থাপত্য দেখা যাচ্ছে। প্রতিটি বাড়ি এক তলা। তবে ঘনঘন নয় । বরং একটু ছাড়া ছাড়া । প্রতিটি বাড়ির সামনে একটি করে তাদের মতো উড়ুক্কু যান রয়েছে।ক্রমশ ওরা মূল নগরের মধ্যিখানে র দিকে চলেছে। এখানে ঘরবাড়ি একটু বেশি।
আরো কয়েকটি উড়ুক্কু যান পাশ দিয়ে হুশ করে চলে গেল। ভেতরে মানুষ আছে। কোথাও। কোনো নোংরা নেই। ঝকঝকে দিনের আলোর মতো চারিদিক।
এবার ওদের যানটি র গতি কমে এলো। সামনে একটি বিরাট আয়তনের বাড়ি দেখা যাচ্ছে। অর্জুন দের যানটি বিরাট বাড়িটার সামনে এসে থেমে গেল। ওপরের স্বচ্ছ ঢাকনাটা খুলে গেল।
যানটি থেকে  যান্ত্রিক স্বরে একটা নির্দেশ  এলো "প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ করুন।"
ওরা সকলে যান থেকে নামলো। সামনের বাড়িটার কোনো জানালা দরজা নেই।। অর্জুন বললেন ,"এটি মনে হয় প্রশাসনিক ভবন। কিন্তু কোনো দরজা দেখা যাচ্ছে না। প্রবেশ করবো কিভাবে ?"
প্রফেসর বাগচী বললেন ,"চলো বাড়িটার দেওয়ালের সামনে গিয়ে দাঁড়ানো যাক।"
সবাই মিলে দেওয়ালের সামনে দাঁড়াতেই দেওয়ালে একটা ফুটো তৈরী হলো । কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ফুটোটা বড়ো হয়ে একটা দরজার আকার নিলো। ভিতর হতে একটি গম্ভীর শব্দ ভেসে এলো "স্বাগতম"।
এই শব্দটি যান্ত্রিক নয় । কোনো মানুষের।
ওরা ভিতরে প্রবেশ করে দেখলো একটা বিশাল লম্বা হলঘর। ঘরটির অপর প্রান্তে একটা সাদা পোশাকধারী পৌড় লোক দাঁড়িয়ে আছে। ওদের দেখে পৌড় মানুষ টি  এগিয়ে এসে বললো "আমি এই  নগরীর  প্রধান প্রশাসক। আমার পদের প্রশাসনিক নাম  ইন্দ্র। আমি প্রফেসর সুবিমল বাগচী, সুমন ও অর্জুন সবাইকে এই গুপ্ত নগরীতে স্বাগত জানাচ্ছি।"
সুমন বললো "আপনি আমাদের নাম জানলেন কিভাবে ?"
ইন্দ্র হেসে বললো ,"শুধু তোমাদের নয় , এই পৃথিবীর সব মানুষের নাম থেকে শুরু করে ব্যাক্তিগত সব তথ্য আমরা জানি। এছাড়া পৃথিবীতে প্রচলিত সব ভাষা জানি। "

ইন্দ্র একটু থেমে পুনরায় বললো ,"চলুন আপনারা আমাদের সম্মানিত অতিথি। যারা আমাদের সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়ে এই গোপন  রাজ্যের প্রবেশ দ্বার পর্যন্ত পৌঁছায় , আমরা তাদের কখনো নিরাশ করি না । অবশ্য তাদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ আগে সংগ্রহ করে তবে ই এই গুপ্ত নগরীর রহস্য উন্মোচন করি। আমরা মনে করি জ্ঞান লাভ মানুষের একমাত্র উদ্দেশ্য হওয়া উচিত।তাই জ্ঞান পিপাসু দের তৃষ্ণা নিবারণ করি। এবারে চলুন আপনাদের ঘুরিয়ে দেখাই সব কিছু।"
ইন্দ্র একটা যন্ত্র বার করে কি সব সুইচ টিপলো।সাথে সাথেই একদিকের দেওয়াল সরে গেল । আরো একটি বড়ো ঘর রয়েছে দেখা গেল।
এই ঘরে অনেক মানুষ আছে।সকলেই ব্যস্ত। কম্পিউটারের মতো কিছু যন্ত্রের সামনে সবাই বসে কাজ করছে। তবে ঠিক কম্পিউটার নয় কারণ কোনো মনিটর নেই।তার বদলে অনেকটা হলোগ্রাফিক ডিসপ্লে। তাতে বিভিন্ন রকমের চিত্র। কোনো জায়গায় উপগ্রহ থেকে তোলা পৃথিবীর মানচিত্র। সেই মানচিত্রটার যেখানে টাচ করা হচ্ছে সেখানটা আরো জুম হয়ে বড়ো হয়ে যাচ্ছে। তবে বেশির ভাগ কম্পিউটার এর মধ্যে শুধু বিভিন্ন সংখ্যার ডিসপ্লে হচ্ছে।তার সাথে আরো জটিল কিছু ডিসপ্লে হচ্ছে।
ইন্দ্র বললো ,"এই জায়গাটা আমাদের কন্ট্রোল রুম বলতে পারেন। এখানে আমরা আমাদের সৃষ্টির উপর নজরদারি করি।"
প্রফেসর বাগচী বললো ,"সৃষ্টি বলতে কি বোঝাচ্ছেন আপনি ?"
ইন্দ্র বললো ," সৃষ্টি বলতে আমি পৃথিবীর মানুষের কথা বলছি।"
অর্জুন উত্তেজিত হয়ে বললো ," আমরা আপনাদের সৃষ্টি ? হোয়াট ডু ইউ মিন ?"
ইন্দ্র উত্তর দিলো "ইউ আর রাইট। তোমরা আমাদের সৃষ্টি।এসো তোমাদের আমাদের তথ্য ভান্ডারে নিয়ে যাই। সেখানে গেলে তোমরা সব বুঝতে পারবে।"
ইন্দ্র পুনরায় সেই  যন্ত্রটা তার পোশাকের ভিতর থেকে বার করে একটা সুইচ টিপে দিলো। একটা পাটাতন জাতীয় যান  দূর হতে ভেসে এলো। এসে ওদের কাছে থেমে গেল।ইন্দ্র পাটাতন  জাতীয় যানটির উপর উঠে দাঁড়িয়ে ওদের উঠে আসতে ইশারা করলো।সবাই উঠলে পাটাতন টি চলতে শুরু করলো। হাঁটার চেয়ে একটু জোরেই তবে বেশি জোরে নয়।
ইন্দ্র বললো "এই যানটি মাধ্যাকর্ষণ বিরোধী শক্তির সাহায্য নিয়ে চলে। এগুলো আমরা এক প্রশাসনিক বিভাগ থেকে অন্য প্রশাসনিক বিভাগে যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করি।
আমাদের বিভিন্ন প্রকার যান আছে । আমরা সেগুলো আলাদা আলাদা উদ্দেশ্যে ব্যবহার করি। আপনারা যে উড়ুক্কু যানে করে এলেন সেগুলো এই নগরীর এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়ার জন্য ব্যবহার হয়। কিন্তু এই নগরীর বাইরে যাওয়ার জন্য আমরা অন্য বিশেষ যান ব্যবহার করি। সেগুলো তোমরা ইউফো বা উফো নামে জানো।ঐ দূরে তাকিয়ে দেখো একটা উফো রাখা আছে।"এই বলে ইন্দ্র দূরে হাত দেখালো।তার দেখানো দিকে সকলে তাকিয়ে দেখলো একটা বড়ো গোল যান মেঝে থেকে কয়েক হাত উঁচু তে ভেসে আছে।
প্রফেসর বাগচী বললো "কিন্তু আমরা তো জানি এগুলো এলিয়েনদের। আপনারা তো মানুষ। তবে কি আমরা এতদিন ভুল ধারণা পোষণ করেছি ?"

ইন্দ্র হেসে বললো "আপনারা সঠিক আন্দাজ করেছেন। আমরা আসলে এলিয়েন। এই যে মানুষের রূপে আমাদের দেখছেন এটা আমাদের আসল রূপ নয়। আপনারা যাতে ভয় না পান তাই এই রূপ আমরা নিয়েছি। আপনারা আমাদের আসল রূপ দেখুন।"
ইন্দ্র সেই যন্ত্র টি পোশাক হতে পুনরায় বার করে একটা লাল সুইচ টিপে দিলো।সাথে সাথেই ইন্দ্র সহ প্রতিটি মানুষের রূপ বদলাতে লাগলো। অবিলম্বে সকলে একটা অন্য ধরনের মূর্তি তে রূপান্তরিত হলো।রোগা  , গোল গোল কালো চোখ , চোখে কোন মণি নেই। শুধু কালো গভীরতা। নির্লোম শরীর। চামড়া ফ্যাকাশে।
ইন্দ্রের রূপ দেখে সুমন ও অর্জুন ভয় পেয়ে একদিকে সরে গিয়ে পাটাতন থেকে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হল। কিন্তু প্রফেসর বাগচী দুজনকে ধরে নিলেন। ওনার মুখে ভয়ের লেশ মাত্র নেই।
ইন্দ্র আবার যন্ত্রের সুইচ টিপতে সকলে মানুষের রূপ ধারণ করলো।
  প্রফেসর বাগচী এবার বললো,"আমার একটা কৌতুহল ছিল। আমি বিভিন্ন গ্রন্থে পৌরাণিক সাম্ভালা নগরীর কথা   পড়েছি। এটাই কি সাম্ভালা ?"

ইন্দ্র বললো "আপনার অনুমান ঠিক। এই গোপন নগরীতে বহু যুগে বহু মানুষ এসেছেন।  প্রথম দিকে আমরা তাদের এমনি ফিরত পাঠিয়ে দিতাম। কিন্তু তারা লোকালয়ে ফিরে গিয়ে আমাদের কথা সকলকে  বলে বেড়াতো । তাতে আমাদের গোপনীয়তা বিঘ্নিত হতো। তাই পরবর্তী কালে যে সব মানুষ এখানে এসেছে  তাদের  আমরা এখান হতে  ফিরত পাঠানোর সময়  বিশেষ প্রযুক্তির সাহায্যে তাদের এখানকার স্মৃতি লোপ ঘটাই। তবে সেটা পূর্ণ মাত্রা র স্মৃতি লোপ নয়। তাই অনেক দিন বাদে তাদের স্মরণে ভাসা ভাসা আমাদের নগরীর কথা  মনে পড়ে।
তারা বিভিন্ন গ্রন্থে আমাদের এই গোপন নগরীর কথা লিখেছেন।
এই নগরীর কথা বৌদ্ধ ধর্ম গ্রন্থে 'সাম্ভালা' , হিন্দু ধর্মে 'পাতাল' , আবার ইউরোপীয় রা 'আটলান্টিস 'নামে চেনে। ঐ যে আমাদের তথ্য ভান্ডার বা ইতিহাস ঘর  এসে গেছে। এখানে আপনাদের সব কৌতুহলের নিরসন হবে।"
ওদের পাটাতন অন্য একটি কক্ষে প্রবেশ করলো। এই কক্ষটিও বিশাল।  তারা যেখান দিয়ে   যাচ্ছে  তার দুই পাশে  বিরাট চৌবাচ্চা। চৌবাচ্চা গুলো এতো বড়ো যে শেষ প্রান্ত দেখা যাচ্ছে না। চৌবাচ্চা গুলো সবুজ রঙের ঘন তরলে পরিপূর্ণ।   আর ঐ ঘন সবুজ তরলের মধ্যে ছোট বড়ো বিভিন্ন ধরনের স্বচ্ছ পাথর ভেসে আছে। সবচেয়ে আশ্চর্যের এই যে পাথর গুলো ঐ ঘন তরলে নড়াচড়া করছে।
বেশ কিছুক্ষণ যাওয়ার  পর পাটাতন একটা জায়গায় থেমে গেল।ওরা নেমে একটা ছোট  কক্ষে প্রবেশ করলো। ওরা প্রবেশ করে দেখলো অল্প কিছু জন এই জায়গায় বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত। একজন এগিয়ে এসে ইন্দ্র কে মাথা ঝুঁকিয়ে অভিবাদন জানালো। ইন্দ্র বললো "ইনি আমাদের বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান বিশ্বকর্মা। ইনি আপনাদের সব কিছুই বুঝিয়ে বলবেন। "
বিশ্বকর্মা ওদের এক জায়গায় বসালো।
বিশ্বকর্মা বললো "প্রথমেই বলে নিই আমরা মানুষ নই। আলাদা জাতি। আমরা অন্য গ্রহ থেকে যখন পৃথীবিতে এসেছিলাম তখন পৃথিবীতে  ডাইনোসরের যুগ । সেজন্য প্রথমে আমরা  সমুদ্রের মাঝখানে একটা দ্বীপের মধ্যে সভ্যতা গড়ে তুলি। সেটার নাম দিই 'আটলান্টিস'। "(ক্রমশ)