Crss colum

Thursday, May 25, 2017

সত্যিকারের ভালোবাসা

নিশা যখন হাওড়া স্টেশনে ঢুকলো তখন ঘড়িতে দশটা বাজে   |  নয় নম্বর প্লাটফর্মে এসে দেখলো রনির বাবা মা দুজনেই দাঁড়িয়ে আছে   |  নিশাকে দূর থেকে আসতে দেখেই রনির বাবা এগিয়ে এলো  | এক গাল হেসে নিশাকে বললো ‘তুমি আসার একটু আগেই ঘোষণা করলো রাজধানী এক্সপ্রেস দুই ঘণ্টা লেটে আসছে   | তার মানে  বারোটা নাগাদ আসবে   |  আমি আর তোমার মাসীমা একটু কফি খেতে যাবো  | তুমি কি যাবে আমাদের সাথে ?'  নিশা মাথা নেড়ে না বললো | রনির বাবা মা চলে যেতেই নিশা একটা ফাঁকা বেঞ্চি দেখে বসে পড়লো |
আজ রনির জন্য অপেক্ষা করতে গিয়ে মনে পড়ছে একদিন রনি তার জন্য অপেক্ষায় থাকতো | সময় কত দ্রুতগামী | এই তো সব কিছু মনে হচ্ছে গত কালকের কথা  |কলেজে প্রথম বর্ষে যে কটি মেয়ে ভর্তি হয়েছিল তাদের মধ্যে নিশাই ছিলো সবচেয়ে সুন্দরী  |তাই তার পেছনে ঝাঁকে ঝাঁকে ছেলে লাইন দিয়ে পড়েছিলো |   কয়েকজন তো আকারে ইঙ্গিতে এমনও জানিয়ে ছিলো নিশার কথায়  প্রাণ পর্যন্ত দিতে পারবে   |  শুধুই পরীক্ষা প্রার্থনীয়   | প্রথম প্রথম কিছুদিন নিশার  অসস্তি লাগতো   |কিন্তু ক্রমে ক্রমে নিশা বেশ উপভোগ করতো   |
একদিন খুব বৃষ্টি হচ্ছে  | নিশা যাবো না যাবো না করেও শেষ পর্যন্ত সেদিন কলেজে গিয়ে দেখলো আট দশ জন মাত্র ক্লাসে এসেছে  | প্রফেসাররা ও সবাই আসেন নি  | তাই দুটো ক্লাসের পর ছুটি হয়ে গেলো | তখন মুসলধারে বৃষ্টি হচ্ছে |  কিছুক্ষণের মধ্যে বৃষ্টি  একটু ধরতেই সবাই  এক এক করে হাওয়া হয়ে গেলো | নিশা দেখলো সে আর একটা ফর্সা রোগা পটকা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে | নিশা সেদিন ছাতা আনতে ভুলে গিয়েছিলো   | তাই বৃষ্টি পুরোপুরি না থামা পর্যন্ত  বেরোতে পারছিলো না | এদিকে বৃষ্টি ধরার কোনো লক্ষণ নেই |  ছেলেটি  কিন্তু ছাতা এনেছিলো  |তবুও সে ছাতা খাটিয়ে চলে যাচ্ছিল না | সবাই চলে গেলে ,ছেলেটি গলা খাঁকারি দিয়ে বললো ‘কিছু যদি মনে না করেন ,তবে একটা কথা বলবো ?’ নিশা তার দিকে চেয়ে বললো ‘বলুন  ’ |  ছেলেটি বললো ‘বৃষ্টি তো এক্ষুণি থামবে বলে মনে হচ্ছে না ,চলুন না কলেজের  ক্যান্টিনে গিয়ে এক কাপ করে চা খাওয়া যাক | এই বৃষ্টির দিনে ভালোই লাগবে | ’ নিশা ছেলেটির সাহস দেখে অবাক হয়ে গেলো | সে কলেজের সবচেয়ে সুন্দরী মেয়ে ,আর তাকে অবলীলায় সরাসরি চা খাওয়ার প্রস্তাব ! তবুও নিশা এই একঘেয়ে বৃষ্টির দিন বলে বোধহয় রাজী হয়ে গেলো | ক্যান্টিনটা কলেজের মূল বিল্ডিং এর সামনে খেলার মাঠের একপাশে | বৃষ্টি তখনো পড়ছে | নিশা বললো ‘কি করে যাবো  ? ’ ছেলেটি তখন ছাতা খাটিয়ে বললো 'এই ছাতায় চলে আসুন  | এইটুকু তো রাস্তা !'
অতঃপর দুজনে ক্যান্টিনে গিয়ে দেখলো বৃষ্টির দিন বলে বোধহয় ক্যান্টিন প্রায় ফাঁকা | শুধু কয়েকটি জোড়া কপোত কপোতি এক সাইডের টেবিলে বসে আছে | ছেলেটি দুটি ছোটো কাঁচের গ্লাসে চা আর একটা প্লেটে দুটি ভেজিটেবল চপ নিয়ে একটা  টেবিলের দু সাইডে মুখোমুখি বসলো | বসেই বললো ‘নিন খাওয়া শুরু করুন | ’ নিশা একটা ভেজিটেবলে একটু কামড় দিয়ে বললো ‘আপনার নাম ?’ ছেলেটি বললো  'একই কলেজের সহপাঠীদের মধ্যে আপনি কথাটা আপত্তিজনক | আমি রনিত | সবাই আমায় রনি বলেই ডাকে | বিজ্ঞানের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র | ' নিশা বললো ‘আমি নিশা | ’রনি মুচকি হেসে বললো ‘জানি | তোমাকে  কলেজের সব ছেলেই চেনে | সবার হার্টথ্রব | ’ নিশা এই কথায় একটু লজ্জা পেয়ে বললো  ‘ওসব ছাড়ুন |তুমি তো ছাতা নিয়েই এসেছিলে  ,তাহলে চলে গেলে না কেনো ?’ রনি ভেজিটেবলটা শেষ করে চায়ে একটা মৌজ করে চুমুক দিয়ে বললো ‘ফাঁকা কলেজ বিল্ডিং এ একটা মেয়ে একা দাঁড়িয়ে থাকবে এটা ভাবতে খারাপ লাগছিলো ,আর তোমার সাথে আলাপ করার লোভ তো ছিলোই | ’
কিছুদিন পরের কথা কলেজের এখানে সেখানে রনি আর নিশাকে দেখে সবাই অভ্যস্ত হয়ে গেছে [Link](http://ashwadimba.wordpress.com) সবাই ভাবতে শুরু করেছে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক শুরু হয়েছে |  রনি সত্যি সত্যি নিশাকে ভালোবাসতে শুরু করেছে  | কিন্তু নিশার দিকে ব্যাপারটা ছিলো অন্য | রনিকে নিশার ভালো লাগতো কিন্তু নিশার কাছে তার চেয়ে বড় ছিলো তার কেরিয়ার |  ছোটোবেলা থেকেই নিশা শুনে আসছে সে সুন্দরী | একটু বড় হতেই দেখেছে ছেলেরা তার জন্য পাগল | এজন্য নিশার মনে ভীষণ গর্ব ছিলো | আর তাই তার মনে জেগেছিলো নামী মডেল হওয়ার বাসনা |  কলেজে পড়ার সময়েই এক নামী প্রতিষ্ঠানে মডেল হওয়ার কোর্সে ভর্তি হয়েছিলো | এই উঠতি সময়ে  রনির ভালোবাসার মতো তুচ্ছ সেন্টিমেন্টের জন্য নিশার জীবন নষ্ট করার মানে হয় না | একদিন রনি নিশাকে বলেই ফেললো কথাটা | সেদিনটাও ছিলো বৃষ্টিঝরা দিন | কলেজে ছাত্রছাত্রী কম | ক্লাসে ষ্টুডেন্ট কম থাকায় দুটি ক্লাস হওয়ার পর বাকি ক্লাস বাতিল হয়ে গেলো | সবাই চলে গেলেও নিশারা কয়েকজন বসে গল্প করছিলো | রনির ক্লাসও বাতিল হয়ে গেছে তাই রনিও এসে নিশাদের সাথে যোগ দিলো | প্রায় সব বন্ধুবান্ধব মনে করতো রনি আর নিশা পরস্পরকে ভালোবাসে | তাই রনি আসায় কেউ কিছু মনে করলো না | [Link](http://ashwadimba.blogpot.in ) একটু ভিড় পাতলা হতেই রনি ও নিশা বিরাট ক্লাসরুমের এক কোণে সরে বসলো |  বাইরে তখন অঝোর ধারায় বৃষ্টি পড়ছে |  সেই বৃষ্টির দিকেই নিশা তাকিয়ে ছিলো | রনি হঠাত নিশার বাম হাত ধরে নিশার দিকে গাঢ় স্বরে বললো ‘নিশা তোকে একটা কথা বলার ছিলো | ’ নিশা আনমনেই উত্তর দিলো ‘বল | ’ রনি চাপা গলায় বললো ‘নিশা আমি তোকে ভালোবাসি | আমি জানি তুইও আমায় ভালোবাসিস | ’ নিশা রনির কথায় চমকে উঠলো | নিশা আন্দাজ করেছিলো এমন দিন একদিন আসবে | কিন্তু সেই দিনটা যে আজই তা ভাবতে পারে নি | মুহূর্তের মধ্যে নিশা সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলো | এই ব্যাপারটা কোনোভাবেই বাড়তে দেওয়া যাবে না | সামনে নিশা নিজের উজ্জ্বল কেরিয়ারের হাতছানি দেখতে পাচ্ছে | কোনো ভাবেই তার উজ্জ্বল ভবিষ্যতকে ম্লান হতে দেওয়া চলে না | নিশা চারদিকে চোখ বুলিয়ে দেখলো কেউ রনির কথা শুনতে পায় নি | সবাই নিজেদের গল্পে মশগুল | নিশা প্রথমে নিজের হাতটা রনির হাত থেকে ছাড়িয়ে নিলো | তারপরে গলা নামিয়ে রনিকে বললো ‘আমরা দুজনে শুধুই বন্ধু |  আমি তোকে জীবনসঙ্গী হিসাবে ভাবতেই পারি না | আর তুই যেটাকে ভালোবাসা বলছিস সেটা আসলে তোর মোহ | আশা করি  তোর “সত্যিকারের ভালোবাসার” সন্ধান একদিন পাবি | সেদিন যেনো আমায় ধন্যবাদ জানাতে ভুলিস না | ’
রনি নিশার কথাগুলো চুপচাপ শুনলো | হয়তো নিজের কান কেই বিশ্বাস করতে পারছিলো না |  এরপর কয়েকদিন রনি কলেজে এলো না | নিশা একদিন ফোন করে জানলো রনির শরীর খারাপ |  আরো কয়েকদিনের পর রনি কলেজে এলে নিশার সাথে দেখা হলো | রনি কেমন যেন নিশাকে এড়িয়ে গেলো | তার কয়েকদিনের মধ্যেই পরীক্ষা চলে এলো | সকলেই ব্যাস্ত হয়ে পড়লো |  পরীক্ষার পর কলেজে যাওয়া বন্ধ | নিশা রনিকে কয়েকবার ফোন করলো কিন্তু প্রতিবারই রনির মা বললো রনি বাড়ী নেই |
পরীক্ষার রেজাল্ট বেরোলে দেখা গেলো রনি খুবই ভালো রেজাল্ট করেছে | নিশা রনিকে কনগ্রাচুলেশন জানাতে গেলে রনি বললো ‘কয়েকদিনের মধ্যেই দিল্লী চলে যাচ্ছি | ওখানে হায়ার ষ্টাডি করবো | তোকে আর জ্বালাবো না | ’ নিশা উত্তরে বললো ‘তুই আমায় জ্বালাস একথা কি কোনোদিন বলেছি ? ফালতু সেন্টিমেন্টের পিছনে না দৌড়ে নিজের কেরিয়ারে মন দে | আশা করি একদিন তুই “সত্যি ভালোবাসা” কাকে বলে অনুভব করবি | ’
সেই শেষ দেখা রনির সাথে |
রনির সাথে দেখা না হলেও নিশার সাথে যোগাযোগ ছিন্ন হয়নি | হোয়াটস এপের সাহায্যে প্রায়ই খবরের আদানপ্রদান চলে | নিশা জেনেছে রনি এখন  বিশাল বড় মাল্টিনেশানাল কোম্পানীতে অফিসার | দিল্লিতে নিজস্ব ফ্ল্যাট ,গাড়ী সবকিছুই রয়েছে | আর নিশা র নিজের জীবন আগের মতো নেই | মডেলিং করতে গিয়ে নিশা জেনেছে ‘যা কিছু চকচক করে তাহাই সোনা নয় ’ | প্রথমদিকে এই জগতের সব কিছুই মনোমুগ্ধকর মনে হলেও পরে দেখেছে এর কদর্য রূপ | এ জগতে প্রতিভার কোনো দাম নেই | এখানে মেয়েদের উপরের দিকে উঠতে গেলে এমন কিছু দিতেই হয় যেটা নিশা কখনই পারবে না | নিশা উচ্ছাকাঙ্খী বটে কিন্তু খারাপ নয় | তাই আস্তে আস্তে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে | আজ নিশার প্রায়ই মনে পড়ে রনির কথা | সেই মুহূর্তে উচ্ছাকাঙ্খার ভূত যদি মাথায় না চাপতো তবে নিশা হয়তো এতদিনে রনির ঘরণী হতো | হয়তো চুটিয়ে সংসার করতো | কিন্তু রনি সেই যে গেছে প্রায় তিন বছর হতে চললো একবারো বাড়ী আসেনি | নিশা কতোবার ভেবেছে হোয়াটস এপে নিজের মনের কথা লিখে পাঠাবে | কিন্তু পরক্ষণেই নিজেকে সংযত করেছে  | নিশা বুঝেছে সেদিনের সেই আঘাতের ক্ষত রনির বুকে শুকিয়ে যায়নি | সেই আঘাতের উপর ভালোবাসার প্রলেপ দিতে হলে নিশাকে রনির সামনে দাঁড়িয়ে ক্ষমা চাইতে হবে | তাই দিন তিনেক আগে রনির মেসেজটা পেয়ে নিশা উতফুল্ল হয়ে উঠলো ,এতদিনে রনি বাড়ী ফিরছে | এবারে আর নিশা ভুল করবে না , প্রথম সুযোগেই ক্ষমা চেয়ে নেবে |  মেসেজে রনি জানিয়েছে নিশার জন্য নাকি সারপ্রাইজ আছে | পাগলটা নিশ্চয়ই কোনো দামী গিফট আনছে |
  ' ডাউন রাজধানী এক্সপ্রেস নয় নম্বর প্লাটফর্মে আসছে ' ঘোষণায় নিশার সম্বিত ফিরে এলো | রাজধানী ঢুকছে | কুলীরা দৌড়াদৌড়ি করছে | ঐ তো সবাই নামছে | ঐ তো রনি | নিশার মনে হলো একছুটে গিয়ে রনিকে জড়িয়ে ধরে | কিন্তু রনির আশেপাশে অনেকগুলি মানুষের ভিড় | রনির বাবা  মা এগিয়ে গেলো |  রনি ঝুঁকে প্রণাম করলো ওদের | রনির বাবা রনিকে কিছু যেন বললো   | রনি এদিকে ওদিকে তাকাতে রনির বাবা নিশার দিকে আঙুল দেখালো | নিশা হাত নাড়লো | রনি মালপত্র বাবার কাছে রেখে নিশার কাছে এগিয়ে এসে বললো ‘কেমন আছিস ? ’নিশা হেসে বললো ‘ভালো | ’রনি বললো ‘তোকে একটা সারপ্রাইজ দেওয়ার আছে | আয় আমার সাথে | ’ এই বলে রনি নিশার হাত ধরে নিয়ে চললো ট্রেনের কাছে | নিশা মনে মনে ভাবলো  'পাগলটা একইরকম আছে | সারপ্রাইজ তো পরে দিলেও চলতো | ' তখনো সবাই ট্রেন নামেনি | রনি সেই জটলার দিকে উদ্দেশ্যে ডাকলো ‘সোমা  ,সোমা | ’ একটা হলুদ চুড়িদার পরা মেয়ে হাসিমুখে এগিয়ে এলো | রনি বললো ‘তোমায়  বলেছিলাম না  আমার বেস্ট ফ্রেন্ডের কথা | এই হলো আমার বেস্ট ফ্রেন্ড নিশা  | ’ তারপরে নিশার কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে বললো ‘একদিন তুই বলেছিলিস আমি আমার “ সত্যিকারের ভালোবাসা ” খুঁজে পাবো | আজ পেয়েছি | ধন্যবাদ তোকে |  এ হলো সোমা কোলকাতার মেয়ে | দিল্লিতে কাজ করে  | আগামী মাসে আমাদের বিয়ে | তোকে কিন্তু আসতেই হবে | ’ নিশা র চোখটা বড় কড়কড় করে উঠলো | চোখের জল কোনোরকমে লুকিয়ে  কাঁপা কাঁপা গলায় বললো ‘আমার ভবিষ্যতবাণী ফলেছে দেখে ভারী খুশী হলাম | আজ আসি রে | অনেক কাজ বাকী আছে | তুই আসছিস বলে সব ফেলে তোর সাথে দেখা করতে এসেছিলাম | চলি ….. | ’
অনেক রাত্রে বিছানায় শুয়ে বালিশে চোখের জল ফেলতে ফেলতে নিশা বলে চললো “হে ঈশ্বর ……কেন ? …….কেন ? …কেন ? ……” | (শেষ)

Sunday, May 14, 2017

বিবর্তন

17  ই   জুন , 2017     |
আমি  পড়তে বসেছিলাম  |  বাবা ডাকলো  ‘রনি এদিকে  আয় তাড়াতাড়ি  |’
আমি পাশের ঘরে গিয়ে দেখি বাবা  টিভি দেখছে | টিভিতে এবিপি আনন্দ চলছে | তাতে দেখাচ্ছে এক জার্মান যুবককে |যুবকটি র কপালে এক অদ্ভুত নীলচে  আলোর আভা  | ঠিক যেন কপালে চামড়ার ভিতর কেউ যেন একটা নীল রংএর এল -ই -ডি জ্বেলে দিয়েছে | ঠিক ভ্রু দুটির মাঝখানে |  ঘোষক বলছেন ‘গত কাল রাত থেকে এই জার্মান যুবকটির কপালে এমন রহস্যময় আলো জ্বলছে |জার্মান বিজ্ঞানীরা এই যুবকটিকে নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছেন |তারা জানাচ্ছেন এই যুবকটির বুদ্ধি র আশ্চর্য্য রকম উন্নতি হয়েছে |জটিল অঙ্ক থেকে আধুনিক কম্পিউটার সায়েন্স সব বিষয়ে যুবকটির কুশলতা অভাবনীয় |অন্যান্য দের সাথে আমরাও আগ্রহী রইলাম যুবকটির ব্যাপারে |’
রনি খবরটা শুনে বাবাকে প্রশ্ন করলো ‘বাবা এটা আবার কি ?’
বাবা হেসে উত্তর দিলো ‘কিছু কিছু মানুষ প্রকৃতির আজব খেয়ালে অতি উন্নত ও অতীন্দ্রীয় ক্ষমতার অধিকারী হয় |এটা হয়তো তেমনি একটা ঘটনা |’

9ই সেপ্টেম্বর 2019

আজ দিল্লির এক যুবতীর কপালে ঐ একই প্রকার নীলচে আলো দেখা গেছে |ভারতে এই প্রথম এই ধরণের ঘটনা ঘটলো |জার্মানি তে প্রথম এই ধরণের মানুষ দেখা যায় |তারপরে এই  দুই বছরে অনেক দেশেই এই ধরণের মানুষের সন্ধান  মিলেছে |
রনি র বাবা  কম্পিউটারের সামনে বসে  গুগলে এই আশ্চর্য্য ঘটনা নিয়ে সার্চ করছিলেন | রনি এই বছরেই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে  |কম্পিউটারটা বাবা রনির জন্যই কিনেছেন | রনির বাবা ঘরে থাকলে নেটে এটা সেটা সার্চ করে অনেক নতুন তথ্য রনিকে দেন | আজ এই অদ্ভুত বিষয়ে সার্চ করতেই  সাম্প্রতিক এই ঘটনার সব তথ্য জানা গেলো |
বিজ্ঞানীরা এই ঘটনাকে বলছেন ‘বিবর্তনের শেষ ধাপ | বা  LAST STAGE OF HUMANITY সংক্ষেপে L.S.H.  |’ মানুষ তার মগজের অতি অল্প অংশই ব্যবহার করে |এই পর্যায়ে মানুষের টোটাল ব্রেন কার্যকরী হয় |এবং মানুষ অতীন্দ্রীয় ক্ষমতার ও অভাবনীয় বুদ্ধির অধিকারী হয় | যে সব মানুষের মধ্যে  এই ঘটনাটা ঘটেছে তাদের বুদ্ধিবৃত্তি অতি শক্তিশালী হয়েছে | কয়েকজন তো বিভিন্ন আবিষ্কার করেছে | সবচেয়ে আশ্চর্য্য এই যে তারা বিভিন্ন মানুষের  সাথে  ভাব বিনিময়ে কোনো শব্দ বা ভাষার সাহায্য নিচ্ছে না | সরাসরি অপরের চিন্তাভাবনা বুঝতে পারছে ও নিজেদের বক্তব্য  অপরের মস্তিষ্কে প্রেরণ করছে |
রনির বাবা রনিকে বললো ‘তুমি যদি ঐ ধরণের ক্ষমতা পেতে ,তাহলে আমি দেখে শান্তি পেতাম | ’ রনি বাবার এই আক্ষেপের কোনো জবাব দিলো না |
11ই মার্চ 2020

রনির বয়স   এখন কুড়ি | এখন নিরানব্বই শতাংশ জীবিত মানুষের কপালে এই নীলচে আলো দেখা যায় | এমনকি রনির বাবা ,মা ,সব বন্ধুবান্ধব সবার কপালে এই নীলচে আলো দেখা যায় | এরা সবাই  LSH বা বিবর্তনের শেষ  ধাপে অবস্থান করছে | রনির এখনো  LSH হয় নি  |
7ই মে 2025
রনির বয়স পঁচিশ .পুরো পৃথিবীর সব মানুষ এখন অতীন্দ্রীয় ক্ষমতার অধিকারী  | শুধু দুজন বাদে  | রনি  ও  ইভা নামের একটি আঠারো বছরের একটি মেয়ে |  কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীব বিদ্যার প্রফেসাররা এদের দুজনকে নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করছে এরা দুজনে কেন বিবর্তনের শেষ পর্যায়ে পৌঁছতে পারলো না ?
গোটা পৃথিবীর চেহারা এখন বদলে গেছে  | পুরো পৃথিবী এখন ভাষাহীন  | ভাষার প্রয়োজন এখন নেই  | সবাই সরাসরি একে অপরের মনের কথা বুঝতে পারে  | খাদ্য ,বস্ত্র, বাসস্থান , করিগরি  ,প্রযুক্তি ইত্যাদি  কোনো দিকেই কোনো সমস্যা নেই  | প্রতিটি মানুষ আবিষ্কারক হয়ে গেছে  | রোগ বলে কিছু নেই  | সবাই সুস্থ | প্রতিটি মানুষ জ্ঞানী হওয়ায় জাতিভেদ ধর্মভেদ আঞ্চলিকতা ইত্যাদি সব মুছে গেছে  |
শুধু দুটি মানুষ একই রকম ঈশ্বর বিশ্বাসী রয়ে গেছে -রনি ও ইভা   |
6ই জুন 2026
ঘটনাটা ঘটেছে আজ সকালে  | আচমকা এক একজন মানুষ হাওয়ায় মিলিয়ে যাচ্ছে  | সব অতীন্দ্রীয় শক্তি সম্পন্ন মানুষ নিজেদের  শক্তি দিয়ে ব্যাপারটা বোঝবার চেষ্টা করছে  | নিজেদের মনো জগতে একের পর এক বার্তা বিনিময় করছে  |
9 ই জুন  2026
খুবই দ্রুত এতো ঘটনা ঘটে গেলো  | পৃথিবীর একটি মানুষ আর দেহে নেই  |  সবাই বাতাসে মিলিয়ে গেছে  |  শেষ তম  মানুষ টি শেষ মুহূর্তে মিলিয়ে যাবার আগে একটা বার্তা পাঠালেন রনি ও ইভার মস্তিষ্কে | 
“আমাদের বিবর্তন শেষ হয়েছিলো  ,তাই প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী আমরা শরীর হীন হয়ে শুদ্ধ চেতনায় পরিণত হলাম | তোমরা দুজন রইলে  | আগামী দিনের ভাবী পৃথিবীর তোমরা ই প্রথম পজন্ম | আমরা বিবর্তনের শেষ ধাপে পৌঁছে মনে করেছিলাম আমরাই সব | ঈশ্বর বলে কিছু নেই | কিন্তু এই শেষ মুহূর্তে মনে হচ্ছে আমরাও ভুল করেছি | মহাকাল ই আসলে ঈশ্বর | অনন্ত সময় যাত্রায় আমরা শুধুই ক্ষণিকের অতিথি মাত্র |
তোমরা নতুন পৃথিবী নতুন ভেদাভেদ হীন জাতি তৈরী কর | শুভ কামনা রইলো | ”
তারিখ ,সময় অজানা |
রনি ও ইভা তাদের ঘরের সামনে ফাঁকা জমিতে ফলা ধান গাছ গুলির দিকে তাকিয়ে আছে | দুজনেই চাষ জানতো না | কিন্তু প্রয়োজন মানুষকে সব কিছুই শিখিয়ে নেয় | কিছু কৃষিকাজ বিষয়ক বই দুজনে খুঁজে পেয়েছিলো  | সেগুলি পড়ে দুজনে চাষ শিখছে |  পাকা সোনালী ধানের দিকে তাকিয়ে দুজনে কোন অজানা স্বপ্নে বিভোর হয়ে আছে তা একমাত্র মহাকাল ই জানে | (শেষ অথবা শুরু )

Wednesday, May 10, 2017

সর্বধর্ম সমন্বয়

আসুন একটু আলোচনা করি সর্বধর্ম সমন্বয়ের ব্যাপারে .

আজ এক প্রিয়জন আমায় বলছিলেন  আমি এতো হিন্দুত্ব নিয়ে লিখি এটা অনুচিত . হিন্দুরা সব ধর্ম কে সমান চোখে দেখে . সহিষ্ণুতা হিন্দুদের ধর্ম . ইসলাম ধর্মের লোকেরা বেশীর ভাগ অশিক্ষিত তাই তারা ধর্ম ধর্ম করে .কিন্তু হিন্দুদের কাছে মানব ধর্ম সবচেয়ে বড় .
উত্তরে বলি ,
আপনি যেটা বলেছেন আমি তার সাথে একমত .মানুষের কাছে মানব ধর্ম ই সবচেয়ে বড় ধর্ম .ধর্ম তো আর কিছুই নয় ,ঈশ্বরের সাথে মানুষের সেতুবন্ধন  . ধর্ম গুলি সৃষ্টি করা হয়েছে যুগের প্রয়োজনে .মানুষকে সীমাবদ্ধ করে ,উশৃঙ্খল জীবন থেকে শৃঙ্খলা যুক্ত জীবন পদ্ধতি তে মানব জীবনকে সুন্দর ও সার্থক করার প্রয়োজনে .
এ পর্যন্ত তো শুনতে ভালোই .
জগতে প্রধান যে ধর্ম গুলি বর্তমান তাদের মধ্যে প্রধান খ্রীষ্টান ধর্ম , ইসলাম ধর্ম ,বৌদ্ধ ধর্ম ,হিন্দু ধর্ম ,জৈন ধর্ম ইত্যাদি .
এখন যদি প্রশ্ন করা হয় এদের মধ্যে সবচেয়ে আগ্রাসী ধর্ম কোনটি ?
উত্তর সিম্পল -ইসলাম .
সবচেয়ে অল্প দিন আগে এই ধর্ম সৃষ্টি হয়েছে .কিন্তু এই অল্পদিনেই অর্ধেক পৃথিবীতে সাম্রাজ্য কায়েম করেছে . কিভাবে ? তরবারির জোরে ,অন্য ধর্মালম্বীদের মধ্যে নিরাপত্তার অভাব সৃষ্টি করে ছলে বলে কৌশলে নিজের মতবাদ গ্রহণে বাধ্য করে তোলা .
আর যদি প্রশ্ন করা হয় সবচেয়ে ক্ষয়িষ্ণু ধর্ম কোনটি ?
উত্তর সিম্পল - হিন্দু ধর্ম .
অখণ্ড ভারতভূমিতে একসময় শুধুই বৈদিক সভ্যতা বা বৈদিক ধর্ম বর্তমান ছিলো . আর্যাবর্ত থেকে দাক্ষিণাত্যে আর্য রা প্রবেশ করলে দ্রাবিড় ধর্ম বৈদিক ধর্মের সাথে মিশে যায় .পরবর্তীকালে এই মিলিত ধর্মীয় রূপ গ্রীক দের আগমনের পর  ' হিন্দু' নাম ধারণ করে . আসলে সেই অর্থে হিন্দু ধর্মের কোনো প্রবর্তক নেই .নেই কোনো নির্দিষ্ট রীতি .লোকাচার ও দেশ কালভেদে হিন্দুরা বিভিন্ন প্রকার রীতি নীতি পালন করে .     যদি কোন হিন্দুকে প্রশ্ন করা হয় 'তুমি কেন  নিজেকে হিন্দু বলছো ?' আমি  নিশ্চিত শতকরা নব্বই শতাংশ হিন্দু উত্তর দিতে পারবে না . সত্যিই তো  খাওয়া দাওয়া ,পূজা পদ্ধতি ,দেবতা ,লোকাচার  সব কিছুতেই আমরা আলাদা আলাদা রকমের .অথচ কাশ্মীরি পন্ডিতরাও হিন্দু , মধ্যপ্রদেশের দলিতরাও হিন্দু ,আবার কেরালার আয়েঙ্গার সম্প্রদায়রাও হিন্দু .তাদের এতো বৈষম্য থাকা সত্ত্বেও সবাই হিন্দু কিভাবে ?
শুনে রাখুন - আমরা হিন্দুরা সবচেয়ে পবিত্র ও প্রামাণ্য় হিসাবে মানি বেদ.
যা সুপ্রাচীন বৈদিক সভ্যতার নিদর্শন .  বৈদিক সভ্যতা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গোষ্ঠী উপগোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়েছে . যে যে গোষ্ঠী বা উপগোষ্ঠী বেদকে প্রামাণ্য় ও অপৌরুষেয়  হিসাবে স্বীকার করেছে তারা হিন্দু ধর্মের অন্তর্গত হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে.
শিখরা  ,জৈনরা  ,ও বৌদ্ধরা  বেদকে প্রামাণ্য ও অপৌরুষেয় (এর  অর্থ বেদ স্বয়ং ঈশ্বরের সৃষ্টি ,কোনো ব্যাক্তির সৃষ্ট নয় ) হিসাবে স্বীকার করে না .তাই এগুলির  হিন্দু ধর্মের সাথে প্রভূত মিল থাকা সত্ত্বেও এগুলিকে আলাদা ধর্ম বলা হয়.  আপনি জেনে আশ্চর্য্য হবেন যে কেরল  ,বোম্বাই ,দিল্লী ,কাশ্মীর , আসাম ,বাংলা ইত্যাদি যে কোন জায়গায়  সংঘটিত প্রতিটি ধর্মীয় কাজে যেমন - বিবাহ , শ্রাদ্ধ  ,উপনয়ন ,পূজা  সব কিছুতেই বেদ মন্ত্র উচ্চারিত হয়ে থাকে .শুধু আপনি হয়তো আলাদা করে চিনতে পারেন না কোনটি বেদ মন্ত্র .কিন্তু জানবেন বেদ মন্ত্রের মাধ্যমেই আমরা হিন্দুরা একে অপরের সাথে জুড়ে আছি . একসময় হিন্দুরা প্রাচীন পারস্য় থেকে গান্ধার হয়ে কম্বোডিয়া পর্যন্ত আধিপত্য বিস্তার করেছিলো .আজ সেই সব ভূমি তে হিন্দুরা নেই .গোটা বাংলায় একসময় হিন্দুরা ছিলো .আজ বাংলাদেশে হিন্দুরা নামমাত্র  অবশিষ্ট আছে .  কেন জানেন হিন্দুদের এই ক্ষয়িষ্ণু রূপ ? আমাদের এই বৃহত্ মানবিক রূপ . আমরা জন্মগত ভাবে সব ধর্মকে সমান চোখে দেখি .তার সুযোগ পুরোপুরি গ্রহণ করেছে পৃথিবীর সবচেয়ে আগ্রাসী ধর্মটি .আমরা যদি তাদের আশ্রয় না দিয়ে শক্ত হাতে প্রতিরোধ করতাম তবে হিন্দুরা বৃহত্ ভূ খন্ডের আধিপত্য হারাতাম না .  আজ নিজেদের  পূর্বপুরুষের দেশে আমরা যেন পরবাসীর জীবন যাপন করছি .
ওদের কট্টর পন্থার বিরুদ্ধে আমরা যদি নরম মানবিক রূপ ধারণ করি তবে একদিন আসবে ,যখন আমরা সব কিছুর উপর আধিপত্য হারাবো .একবার ভেবে দেখুন বাংলাদেশে হিন্দুদের অবস্থা .তারা ঐ দেশের প্রাচীন সংস্কৃতির চিহ্ন .তারাই ভূমিপুত্র .অথচ আজ তারা কি অবর্ণনীয় কষ্টের মধ্যে আছে . কাল বাকী ভারতের হিন্দুদের একই অবস্থা হবে .
মনে রাখতে হবে লোহা দিয়ে লোহা কাটা যায়.হীরে ই কিন্তু হীরে কাটার কাজে লাগে .কট্টর পন্থী দের বিরুদ্ধে আমাদের আরো বেশী কট্টর পন্থী হতে হবে . এতটুকু নরম মানবতাবাদী মনোভাব দেখালে বাকি ভারত থেকে হিন্দুরা ও অন্যান্য ধর্ম বিলুপ্ত হয়ে যাবে .এই ভারত আমাদের হিন্দুদের শেষ আশ্রয় .এই পবিত্র ভারতভূমি থেকে  আমরা বিতাড়িত হলে আমদেরো ইহুদী জাতির মতো হাজার হাজার বছর ধরে দেশে দেশে ঘুরতে হবে .
হিন্দুত্ত্ববাদ হিন্দুদের শেষ অস্ত্র .এটাই হয়তো একমাত্র অস্ত্র .আগ্রাসী সাম্রাজ্যবাদী ধর্মের হাত থেকে বাঁচতে এটাই একমাত্র উপায় .
আর সুপ্রীম কোর্টের সাথে আমি একমত ,হিন্দুত্ব শুধুই ধর্ম নয় এটি আসলে জীবন শৈলী .

Monday, May 8, 2017

বাংলা গল্পের ব্লগ

https://ashwadimba.blogspot.in/2017/03/blog-post_16.html?spref=bl&m=1

Friday, May 5, 2017

জননীর প্রতি

প্রিয় জননী ভারতবর্ষ
                                  মা ,তুমি কেমন আছো ? জানি তুমি ভালো নেই ! সন্তান বিয়োগের ব্যাথায় তুমি কাতর .তোমার দুই সুপুত্র  তোমার সম্মান ও সীমা রক্ষায়  নিয়োজিত ছিলো .তাদের মুন্ডহীন শরীর খানি তোমারি পদতলে বলিপ্রদত্ত হয়েছে . মাগো ,আমি নিশ্চিত জানি তারা লড়াই করেছিলো তোমার সম্মানের জন্য .তবে অসংখ্য শত্রুর বিরুদ্ধে সাফল্য পায়নি .কাপুরুষ  শত্রুরা তাদের নৃশংস ভাবে হত্যা করেই   থামেনি  ,যাবার সময় আমাদের দুই ভাইয়ের মুন্ড শরীর হতে বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে গেছে .আজ প্রতিটি ভারতবাষীর স্বপ্নে আমাদের শহীদ হওয়া ভায়েরা দেখা দিয়ে প্রতিশোধের দাবি তুলছে .
হে মা জননী ভারতবর্ষ ,বহু  অন্যায় অপমান তুমি সয়েছো  ,আমাদের মতো সন্তানের মুখ চেয়ে .এখন সময় এসেছে মাগো সব অপমানের বদলা  নেবার .
হে আমার বীর ভাতৃবিন্দ  ,এখনই সময় হয়েছে আমাদের দুঃখীনি মায়ের সব অপমানের বদলা নেবার .প্রতিশোধের স্পৃহা তোমাদের রক্তে নেচে উঠুক . চাষী প্রতিশোধ নিক বীর সৈনিকদের খাদ্যের যোগান দিয়ে ,ব্যবসায়ী প্রতিশোধ নিক শত্রুর সাথে বাণিজ্য বন্ধ করে  ,চাকুরীজীবি প্রতিশোধ নিক নৈতিক সমর্থন ও অগাধ দেশভক্তি দিয়ে ,বেকার  ও শিক্ষিত যুবক ও যুবতীরা প্রতিশোধ নিক দেশ রক্ষকের দায়িত্ব নিয়ে .আর আমাদের ফৌজের ভাইয়েরা প্রতিশোধ নিক একটি শহীদের বিনিময়ে একশো টি শত্রু নিপাত করে . আজ সময় এসেছে সমগ্র জাতিকে  জাতিভেদ , ধর্মীয় সংকীর্ণতা ভুলে - ‘আমরা ভারতীয় ,আমরা আমাদের ভারতমাতার অপমানের প্রতিশোধ চাই ’ - এই  ধ্বনি তুলে এক হবার .মনে রাখতে হবে  শত্রুর শেষ রাখতে নেই .একদম ধুলোয় মিশিয়ে দিতে হবে শত্রুকে .সামান্যতম জিইয়ে রেখে যে ভুল আমরা 1965,1971  ,2001এ করেছি তার মাসুল আজকের প্রজন্ম দিয়ে চলেছি .
হে আমার সন্তানহারা দুঃখীনি ভারতমাতা   , তুমি কান্না থামাও . তোমার বাকী সন্তানদের যুদ্ধের সাজে সাজিয়ে দাও .কপালে এঁকে দাও জয় তিলক .উদ্দীপিত করো সমগ্র জাতিকে .অপমানের বদলা চাই .প্রতিটি শহীদের বিনময়ে সহস্র শত্রুর বিনাশ চাই .
               বন্দেমাতরম্  ,জয় হিন্দ .