Crss colum

Monday, November 16, 2020

ফোট!শালা!!

বিবাহ বার্ষিকীর দিন অন্তত একটু তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে ইচ্ছে করে।
ডিউটি বেরোবার সময় মধু বলেছিলো " আজকে  অন্তত তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরো।মনে আছে তো?"
অনন্ত মুখে একটু হাসি ফুটিয়ে বললো " তা আবার ভুলি?"
মনে মনে বললো " ঐ দুঃখের দিন টা বাকি জীবনে অন্তত ভুলবো না।"
প্রেম করেই বিয়ে হয়েছিল  দুজনের। তখনকার কিশোরী মধুরিমা আর আজকের মধুরিমার মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য। সেই লাজুক হাসি, সেই মন ভোলানো ভ্রুকুটি আজ কোথায়?
বিয়ের তিন বছর পরেও যখন বাচ্ছা হলো না তখন আস্তে আস্তে মধুর স্বভাবের পরিবর্তন হতে লাগলো। দিনদিন তার ব্যবহার রুক্ষ্ম থেকে রুক্ষতর হতে লাগলো। প্রথম প্রথম বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে দৌড়োদৌড়ি ,শেষে ডাক্তার ছেড়ে এই ঠাকুর ,ওই ঠাকুর এর কাছে মানত  শুরু হলো। কিছুদিন পরে মধুরিমা হাল ছেড়ে দিল। এবারে সে সরাসরি অনন্তকে দোষ দিতে লাগলো।
যদিও অনন্তর কোন দোষ ছিলনা। কিছুদিন আগেই  একজন বড় ডাক্তার এর কাছে মধুরিমাকে নিয়ে গিয়েছিল। ডাক্তারবাবু মধুরিমা র আড়ালে  অনন্তর কাছে বলেছিল, মধুরিমার শরীরের অভ্যন্তরীণ ত্রুটির জন্য বাচ্ছা আসছে না। সেই কথাটি অনন্ত মধুরিমা দুঃখ পাবে বলে তার কাছে এখনো প্রকাশ করেনি।
কিন্তু যত দিন গড়াতে লাগল মধুর ব্যবহার খুবই খারাপ হতে লাগলো। দিনরাত এটা ওটা নিয়ে অনন্তর সঙ্গে ক্রমাগত ঝগড়া শুরু হলো। অনন্ত খুবই ঠাণ্ডা প্রকৃতির ছেলে। একবার ঝগড়ার সময় মধুরিমা অনন্তকে ধরে কয়েক ঘা পিটিয়ে দিল। তবুও অনন্ত টু শব্দটিও করল না। সেই শুরু হলো এখন অনন্ত ঝগড়া হলেই মাঝে মাঝে মধুর হাতে মার খায়। তবুও অনন্ত মধুকে ভালোবাসে। আর ভালোবাসে বলেই তাকে কিছু বলেনা। সবকিছুই নীরবে সহ্য করে।
অনন্ত একটা আইটি ফার্মে চাকরি করে। আইটি ফার্মে চাকরির প্রবেশের সময় নির্দিষ্ট থাকলেও বের হওয়ার কোন নির্দিষ্ট সময় নেই। মাঝেমাঝেই কাজ করতে করতে অনেক রাত হয়ে যায়। তার ওপর প্রতিদিন ওপরওলার ঝাড় খেতেই হয়।
অনন্ত নিরীহ ভীতু  স্বভাবের ছেলে। ঘরে মধুর অত্যাচার আর চাকরি ক্ষেত্রে উপরওয়ালা বাগচী  সাহেবের অত্যাচার দুটোই চুপচাপ হজম করে। মধু অবশ্য রোজকার অনন্তকে জ্বালায় না। যেদিন তার মেজাজ খারাপ থাকে সেদিন কোনো না কোনো ছুঁতোয় অনন্তর সঙ্গে ঝগড়া করে। শুধু ঝগড়া করে নয় খুবই খারাপ ভাষায় অনন্তকে গালাগালি করে। সেই সঙ্গে হাতের কাছে ছোঁড়ার মত কিছু থাকলেই ছুঁড়ে মারে। আজকাল অনন্তর এসব সহ্য হয়ে গেছে। মধুর মেজাজ একটু খারাপ বুঝলেই অনন্ত এটা ওটা কাজের বাহানায় সেখান থেকে সরে পড়ে।
আজ অফিসে এসে অনন্ত সিনিয়র দেবাঞ্জনদাকে আগেই বলে রেখেদিলো একটু কাজ কম দিতে। সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে আজকে বাড়ি যেতে হবে। দেবাঞ্জন দা তাদের টিম লিডার। দেবাঞ্জন দা ভ্রু কুঁচকে জানতে চাইল, " কেন? আজকে এত তাড়া কেন?"
একগাল হেসে অনন্ত উত্তর দিল " আজ আমার বিবাহ বার্ষিকী।"
দেবাঞ্জন দা বলল "ছাড়তে পারি যদি একটা বিয়ার খাওয়াস।"
অনন্ত বললো "  দাদা একটা কেন দুটোই আনান।ক্যান্টিনে বসে আমিও একটু চেখে বাড়ি যাবো।"
দেবাঞ্জনদা বললো ," ঠিক আছে তবে আমি আনিয়ে রাখছি, টাকা টা কিন্তু দিয়ে দিবি।"
সন্ধ্যা সাতটার কিছু আগেই অনন্ত ও দেবাঞ্জন ক্যান্টিনে গিয়ে দুটো বিয়ার আর এক প্লেট বাদাম ভাজা নিয়ে বসলো। বিয়ার দুটো অফিসের পিয়ন কে দিয়ে দেবাঞ্জন আগেই আনিয়ে রেখেছিল ‌। এই সময় কেউ ক্যান্টিনের দিকে আসে না। সুতরাং দুজনেই নিশ্চিন্তে নিজেদের পান ভোজনে ব্যস্ত থাকলো।
অনন্ত যখন উঠবে উঠবে করছে ঠিক সেই সময় ফোনটা এলো। বাগচী সাহেবের ফোন।
বাগচী সাহেব বললো " অনন্ত গতকাল তোমাকে একটা প্রোজেক্ট দিয়েছিলাম সেটা কি কমপ্লিট হয়েছে?"
অনন্ত  একটু হকচকিয়ে উত্তর দিলো " না স্যার , ওটা আপনাকে কাল কমপ্লিট করে দেবো।"
বাগচী সাহেব একটু রেগে গিয়ে বললো " আমি কোনো কথা শুনতে চাই না। তুমি আজকের মধ্যেই কাজটা কমপ্লিট করে আমাকে ইমেইল এ ফাইলটা সেন্ড করো।আজ না হলে কাল থেকে তোমার আসার প্রয়োজন নেই।"
এই বলে বাগচী সাহেব ফোনটা রেখে দিলো।
দেবাঞ্জন বোধহয় এই রকম কিছু একটা আঁচ করেছিল।সে জিজ্ঞেস করল " কেস গড়বড় ?"
অনন্ত উত্তর দিলো " তোমরা যাও । আমার যেতে দেরি হবে।"
দেবাঞ্জন বললো ," হয়েছে টা কি বলবি তো?"
অনন্ত উত্তর দিলো ," হয়েছে আমার কপালটাই খারাপ।মধু আসার সময় পইপই করে বলে দিয়েছে আজ তাড়াতাড়ি ঘরে যেতে।আর আজকেই  হারামী বুড়োটার কাজ কমপ্লিট করে যেতে হবে।অন্তত ঘন্টা চারেক লাগবে।আর তুমি তো মধুর মুখের ভাষা জানো।আজ আমার কপালে দুঃখ আছে।"
দেবাঞ্জন অনন্ত র অনেক দিনের সহকর্মী ও পারিবারিক বন্ধু। মধুরিমা র সঙ্গে পরিচয় আছে। সেই সঙ্গে মধুরিমা র খান্ডারনি চরিত্র সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল।
দেবাঞ্জন বললো ," আমি তোকে কিছু সাহায্য করতে পারি ?"
অনন্ত ম্লান হেসে বললো , " কাজের ডিটেইলস তুমি জানো না , সুতরাং দুজনে কাজটা ভাগ ভাগ করে করবো তেমন উপায় নেই। তুমি কিছু ভেবোনা। আমি কাজ শেষ করে অফিসে চাবি দিয়ে ,চাবিটা সিকিউরিটি র  কাছে রেখে যাবো।"
দেবাঞ্জন তবু বললো ," কিন্তু অত রাতে বাড়ি ফিরবি কি করে ?"
অনন্ত বললো " আমার বাড়ি তো বেশি দুরে নয়। তিন কিলোমিটার দূরে। যদি কিছু পেয়ে যাই তাহলে ভালো , নাহলে হেঁটে ই বাড়ি ফিরতে হবে।কাল রবিবার অফিস ছুটি। সুতারাং অফিসে আসার তাড়া নেই। একটু বেলা করে ঘুম থেকে উঠলেই চলবে। তোমার দেরি হয়ে যাচ্ছে।প্রায় সবাই তো চলে গেছে। তুমি ও আর রাত করো না। "
এই বলে অনন্ত তার কম্পিউটার নিয়ে কাজ শুরু করলো।
দেবাঞ্জন অফিস থেকে বেরোনোর সময় সিকিউরিটি কে বলে গেলো অনন্ত র কাজ শেষ হতে রাত হবে। সে যেন খেয়াল রাখে।
পুরো প্রোজেক্ট টা শেষ করে বাগচী সাহেবের ইমেইল এ ফাইলটা সেন্ড করে অনন্ত দেখলো অফিসের ওয়ালক্লকে তখন রাত প্রায় বারোটা বাজে। পকেটে মোবাইল টা সাইলেন্স করে দিয়েছিল কাজে ডিস্টার্ব হবে এই ভেবে। এখন মোবাইল বের করে দেখলো তাতে নয়টা মিসকল এলার্ট।সবকটাই মধুর মোবাইল থেকে।
অনন্ত একবার ভাবলো মধুকে পরিস্থিতি টা ফোন করে জানিয়ে দেয়। কিন্তু তারপর ভেবে দেখলো তাতে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবার সম্ভাবনা আছে। তাই  হোয়াটসঅ্যাপ এ মেসেজ করে দিলো ' অফিসে র কাজে আটকে গিয়েছিলাম, এখন বাড়ি ফিরছি।'
অফিসের দরজার কাছে টুলে বসে সিকিউরিটি রতন ঘুমে ঢুলছিলো। তাকে একটু নাড়া দিতেই সে তড়াক করে উঠে বললো ," আপনার কাজ শেষ বাবু ?"
অনন্ত গম্ভীর হয়ে বললো ," হ্যাঁ , তুমি অফিসের দরজায় চাবি দিয়ে শুয়ে পড়।"
রাস্তায় নেমে দেখলো একটাও জনপ্রাণী নেই।অঘ্রাণ মাস। হালকা ঠান্ডা পড়েছে। একটু শীত লাগছে। কিন্তু সে সব পাত্তা না দিয়ে অনন্ত বাড়ির দিকে হনহন করে হাঁটা দিল। খানিকটা দুরে  চৌমাথা পেরিয়ে বাঁ দিকে ঘুরে মনোহরপুকুর রোড।মনোহরপুকুর রোড ধরে দুই কিলোমিটার গেলেই অনন্ত দের শতরূপা অ্যাপার্টমেন্ট। তার তিন তলায় অনন্ত র ফ্ল্যাট। মনোহরপুকুর রোডের এই রাস্তা টা এমনিতেই নির্জন। তার ওপর খ্রিস্টান দের কবরস্থান ও তার পাশেই আমতলা শশ্মান জায়গাটাকে একটু যেন ভুতুড়ে করে তুলেছে। এমনিতেই বেশ খানিকটা জায়গা কোন মানুষের বসতি নেই। রাস্তার দুই পাশের স্ট্রীট লাইটের হালকা আলো আর তার সঙ্গে হালকা কুয়াশা য় অনন্ত র একটু গা ছমছম করে উঠলো। সে সব কে পাত্তা না দিয়ে  কবর স্থানের মেন গেট থেকে একটু এগোতেই স্ট্রীট লাইটের আলোয়  অনন্ত র চোখে পড়লো একটা কালো কুচকুচে বিড়াল ছানা। রাস্তার ঠিক মাঝখানে বসে আছে।আর অপার্থিব এক প্রকার মিঁয়াও মিঁয়াও আওয়াজ করছে। অনন্ত আরো একটু কাছে যেতেই বিড়াল ছানা টি রাস্তার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত পায়চারি শুরু করে দিল। ঠিক যেন অনন্ত কে যেতে দেবে না। একটু দূরের  ষ্ট্রীট লাইটের আলো বিড়াল ছানাটির চকচকে গায়ে পড়ে ঠিকরে বেরোচ্ছে। হঠাৎ আচমকা অনন্ত র মনে হলো ওটা কোনো বিড়াল ছানা নয়। বরং একটা ধাড়ী বিড়াল। আরো কিছুক্ষন সময় পর দেখলো বিড়াল ছানার আকার বেড়েই চলেছে। এখন ওটা একটা অ্যালসেশিয়ান কুকুরের মতো। অনন্ত চুপচাপ দাঁড়িয়ে পরিস্থিতি র উপর নজর করতে লাগলো।আরো একটু পরে একটা বাছুর সাইজের কালো বিড়াল অনন্ত র সামনে রাস্তা জুড়ে দাঁড়িয়ে আছে। অনন্ত কিন্তু সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে।  তার মধ্যে একটুও চাঞ্চল্য দেখা যাচ্ছে না। বরং সে পকেট থেকে একটা সিগারেটের প্যাকেট বের করে তার থেকে একটা সিগারেট নিয়ে মুখে   দিয়ে অন্য প্যাকেট থেকে একটা দেশলাই      বার করে ফস করে মুখের সিগারেট টি জ্বালিয়ে একটা সুখটান দিলো।
তখনো তার সামনে সেই বিড়াল টি দাঁড়িয়ে আছে। তবে এখন সেটি অনন্ত র মাথা ছাড়িয়ে গেছে। প্রায় একটা পূর্ণ বয়স্ক হাতির মতো সাইজ। তারপর ক্ষণেই বিড়ালটির রূপ একটা বীভৎস মূর্তিতে পরিবর্তিত হয়ে উঠলো।প্রায় বারো ফুট উঁচু মূর্তি টি মানুষ আকৃতির হলেও মানুষ নয়। তার মাথা  থেকে  লম্বা লম্বা চুলের গোছা পা পর্যন্ত নেমেছে । তার মুখটাকে বেশ কিছু চুল ঢেকে থাকায় পরিস্কার ভাবে মুখটাকে দেখা যাচ্ছে না। সবচেয়ে বড় কথা চুলের গোছা গুলো সাপের মতো নড়াচড়া করছে। একটা চুলের গোছা অন্য চুলের গোছার উপর ওঠানামা করছে। লোকটার পরণে একটা কালো জোব্বা গোছের পোশাক।আর ষ্ট্রীট লাইটের স্পষ্ট আলোয় দেখা যাচ্ছে সেই ভেতর থেকে দুটো মুষ্টিবদ্ধ হাত বের হয়ে আছে।হাত দুটো য় একটুও মাংস নেই। শুধুই হাড়।
মূর্তি টি তীব্র শব্দ করে এক পৈশাচিক হাঁসি হেঁসে উঠল। নির্জনে সেই হাসি শুনে অনন্ত র শরীরে হালকা শিহরণ খেলে গেল। অনন্ত সেটাকে পাত্তা না দিয়ে মুখের সিগারেট টিতে শেষ সুখটান দিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দিল। তারপর খুব শান্ত স্বরে মূর্তিটির উদ্দেশ্যে বললো , " তোমার ভেলকিবাজি শেষ হয়েছে? তাহলে এবার পথ ছাড়ো।"
ঠিক এই সময় অনন্ত র ফোনটা রিং হতে থাকলো। অনন্ত পকেট থেকে ফোনটা বার করে রিসিভ করে স্পীকার অন করে দিলো।
মধুর রাগী কন্ঠস্বর শোনা গেল " তোমার পিন্ডির কাজ শেষ হয়েছে?"
অনন্ত খুব ঠাণ্ডা স্বরে উত্তর দিলো "দেখো না মধু একে কাজ শেষ হতেই এতো রাত হয়ে গেছে , তার ওপর রাস্তায় একজন পথ আটকে দাঁড়িয়ে আছে। যেতেই দিচ্ছে না।"
মধুর রাগ এতোক্ষণ অনন্ত র উপর হচ্ছিলো । কিন্তু যেইমাত্র অনন্ত র মুখে শুনলো একজন তার পথ আটকে দাঁড়িয়ে আছে অমনি তার মনে অনন্তর প্রতি সহানুভূতি জাগলো আর সমস্ত রাগ গিয়ে পড়লো সামনে দাঁড়িয়ে থাকা অজানা ব্যাক্তির উপর। মধু ভাবলো সামনে কোনো মাতাল দাঁড়িয়ে অনন্ত র পথ আটকেছে।
মধু বললো "ফোনটা স্পীকারে দিয়ে সামনের জনের দিকে ঘোরাও তো।"
অনন্ত উত্তর দিলো " ফোনটা স্পীকারেই আছে ।আমি সামনের জনের দিকে ঘোরাচ্ছি । তুমি একটু ভালো করে রগড়ে দাও।"
এবারে মধু তার মধুর ভাষণ শুরু করলো " শূয়োরের বাচ্ছা, অলপ্পেয়ে ড্যাকরা , তোদের মতো রাস্তার কুকুরের জ্বালায় কি কোনো ভদ্রলোক পথে বেরোতে পারবে না? তোদের মরণ হয় না? এতো রাতে মদ গাঁজা গিলে রাস্তায় মস্তানি করছিস? ঝাঁটাপেটা করে তোর বিষ ঝেড়ে দেবো ............."
অনন্ত পকেট থেকে আরো একটি সিগারেট বের করে জ্বালিয়ে সুখটান দিতে লাগলো। ওদিকে মধুর বাক্যবাণ তখনো থামার লক্ষণ নেই। মধু বলে চলেছে " তোর মা বাবা পাঁঠা সন্তানের জন্ম দিয়েছে ...."
এদিকে মধুর বাক্যবাণ শুরু হতেই সামনে থাকা ভয়াবহ বীভৎস মূর্তিটির মধ্যে উল্টো পরিবর্তন শুরু হয়েছে। সেটা আবার একটি বিড়ালে পরিবর্তন হয়েছে।
মধু বলে চলেছে " তোদের সমাজে কোনো স্থান নেই। তোদের চিড়িয়াখানায় ভরে দেওয়া দরকার।..."
বিড়াল টির আকার ক্রমশ ছোট হচ্ছে। দেখতে দেখতে বিড়ালটি পুনরায় একটা ছোট্ট ছানায় পরিণত হয়ে রাস্তার এক কোণে দাঁড়িয়ে মিউ মিউ করছে।
অনন্ত এবার সিগারেট টা ফেলে দিয়ে ফোনটা নিজের দিকে ঘুরিয়ে মধুকে বললো " এবার চুপ কর ।ঐ ব্যাটার যথেষ্ট শিক্ষা হয়েছে। "
মধু বললো " ঠিক আছে রাখছি। তবে ফের যদি জ্বালাতন করে আমাকে ফোন করবে। চাবকে ওটার পিঠের ছাল ছাড়িয়ে নেবো। তুমি তাড়াতাড়ি এসো।"




মধুর ফোনটা কেটে দিয়ে অনন্ত দেখলো তখনো বিড়াল ছানাটি রাস্তার এক ধারে দাঁড়িয়ে ভয়ে কাঁপছে।
অনন্ত নিজের মনেই  একটু হেসে এগিয়ে গেলো। বিড়াল ছানাটির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় আচমকা বাগচী সাহেবের কথা মনে হলো।তার মনে বাগচী সাহেবের ওপর রাগ  আগে থেকেই ছিল। আজকের ঘটনার জন্য বাগচী সাহেব দায়ী।আর এটা মনে আসতেই রাগের চোটে বিড়াল ছানাটির পেটে সজোরে বুটের একটা লাথি কষিয়ে দিয়ে বলে উঠলো " ফোট! শালা!!!"


No comments:

Post a Comment