বিশ্বকর্মা যখন বললেন ওনারা মানুষ নয় আলাদা জাতি , তখন সুমনের মনে কৌতুহল হলো যে ওনারা পৃথিবীতে এলেন কেন?
সুমন কৌতুহল চেপে রাখতে না পেরে বলেই ফেললো ,"আপনারা আসলে কোন জায়গার বাসিন্দা ?আর এখানে এলেন কেন ?"
বিশ্বকর্মা উত্তর দিলো ,"আমরা অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি র অন্তর্ভুক্ত আদিত্য নামের এক নক্ষত্রের চারিদিকে ঘূর্ণায়মান অমরাবতী গ্রহের বাসিন্দা। আমাদের গ্রহ খুব সুন্দর ও সম্পদে ভরপুর। কোনো কিছুর অভাব আমাদের ছিল না। আমরা কেবল জ্ঞান লাভ কে জীবনের একমাত্র লক্ষ্য বলে মনে করি।তাই আমরা শুধু জ্ঞান চর্চা করি।আর এটাই আমাদের গ্রহ অমরাবতী কে আশেপাশের অন্যান্য গ্রহ থেকে অনেক উন্নত করেছে। আমাদের বিজ্ঞান এতোটাই উন্নতি করেছে আমাদের মৃত্যু রোধ করে অমরত্ব দান করেছে। এর অর্থ সাধারণ ভাবে বার্ধক্য ও জরা আমাদের কিছুই করতে পারবে না। যদিও এই অমরত্ব পেতে আমাদের প্রজনন ক্ষমতা সম্পূর্ণ ভাবে নষ্ট হয়ে গেছে।এর অর্থ আমাদের জনসংখ্যার হ্রাস বা বৃদ্ধি কোনোটাই আর হবে না।আমরা শান্তি র পূজারী। কিন্তু আমাদের শান্তি মাঝে একবার বিঘ্নিত হয়েছিল। আমাদের গ্যালাক্সি র অপরপ্রান্তে একটি গ্রহ আছে।যার নাম পাতাল। সেই গ্রহের অধিবাসীদের আমরা অসুর বলে থাকি।অসুর কুল আমাদের মতোই জ্ঞান বিজ্ঞানে উন্নত। কিন্তু তারা দীর্ঘ আয়ু ও যৌবনের রহস্য জানলেও এখনো অমরত্বের জ্ঞান আবিষ্কার করতে পারে নি। তাদের জ্ঞান তারা শান্তির উদ্দেশ্যে চালনা করে নি। তাদের মূল লক্ষ্য এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সব গ্যালাক্সি র দখল নেওয়া। তাদের এই দখল নেওয়ার পথে সবচেয়ে বড়ো বাধা আমরা। আমাদের জাতির নাম দেবতা।অসুরকুল বহু বার অমরাবতী আক্রমণ করেছে। কিন্তু প্রতিবার আমাদের জ্ঞানের কাছে পরাজিত হয়েছে। কিন্তু বহুকাল আগে একবার আমাদের প্রতিরক্ষা যন্ত্রগুলোর অসতর্কতায় তারা অমরাবতীর অনেক ভিতরে প্রবেশ করে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আমাদের প্রতিরক্ষা উপগ্রহের গোপন চোখ তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে যায়। শুরু হয় ভীষন সংগ্রাম। অসুরেরা এতোটা ভিতরে প্রবেশ করার পর সেই জায়গার দখল সহজে ছেড়ে যেতে রাজি নয়। দীর্ঘ কাল ব্যাপী এই লড়াই চলতে থাকে।
এই লড়াই চলাকালীন একসময় আমাদের গ্রহের পরিচালক সমিতির তিন সদস্য এক গোপন আলোচনায় আমাকে ও ইন্দ্রকে ডাকে। যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি থেকে বোঝা যাচ্ছিল না সেই যুদ্ধ কতোদিন চলবে। আমাদের গ্রহের অর্জিত জ্ঞান ভান্ডারের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সবচেয়ে জরুরি ছিল । সেখানে ঠিক হয় এই জ্ঞান ভান্ডার কে একটি ক্ষুদ্র স্ফটিক খন্ডের মধ্যে ভরে নিরাপদ স্থানে লুকিয়ে রাখা হবে। এবং এই কাজে ব্যবহার করা হয় আমাদের উন্নত বিজ্ঞানের আবিষ্কার চেতনা সমৃদ্ধ স্ফটিক খন্ড। এই স্ফটিক খন্ড স্বয়ং সম্পূর্ণ। এটা বিশ্বচৈতন্য র সাথে যুক্ত।"
এক মূহুর্তের জন্য বিশ্বকর্মা থামতেই প্রফেসর বাগচী ফস করে প্রশ্ন করলো ,"বিশ্বচৈতন্য ?"
বিশ্বকর্মা উত্তর দিলো ,"হ্যাঁ বিশ্বচৈতন্য। তোমাদের কিছু বিজ্ঞানী সবে আভাস পেতে শুরু করেছেন যে এই বিশ্ব জীবন্ত। কিন্তু আমরা বহু আগে থেকেই জানি যে এই বিশ্বের চৈতন্য বা সেন্স আছে।আর আমরা সবাই ও সব কিছুই এই চৈতন্য র অন্তর্ভুক্ত।
এই চৈতন্য সুক্ষ্ম ভাবে সব কিছুই নিয়ন্ত্রণ করে। এই চৈতন্য কখনো শুভ শক্তির জয় আনে আবার কখনো অশুভকে শক্তিশালী করে।"
সুমন বললো ,"আপনি বলছেন এই বিশ্ব চৈতন্য খুব সুক্ষ্ম ভাবে সব কিছু ঠিক করে। তাহলে বিশ্বচৈতন্য তো ইচ্ছে করলে সম্পূর্ণ অশুভ কে ধ্বংস করতে পারে।"
বিশ্বকর্মা উত্তর দিলো ,"নিশ্চয়ই পারে, কিন্তু এটা কি জানো আল্টিমেট শুভ বা আল্টিমেট অশুভ বলে কিছু নেই।একই বস্তু ,একই ঘটনা,একই সময় ,একই ব্যক্তি কখনো শুভ হিসাবে দেখা যায় আবার কখনো অশুভ হয়ে প্রকাশ হয়।"
বিশ্বকর্মা বললো ,"এই যে তোমরা এখানে এসেছো ,এটা তোমাদের মনে হতে পারে যে তোমরা নিজেদের ইচ্ছামত এখানে এসেছো। আসলে তা সম্পূর্ণ সত্য নয়। আমাদের শক্তি র উৎস সেই আশ্চর্য স্ফটিক খন্ডের ইচ্ছায় বিশেষ প্রয়োজনে এখানে উপস্থিত হয়েছো। উপযুক্ত সময়ে সেই বিষয়ে তোমরা তিনজনেই সেটা জানতে পারবে।
এখন পুরো ঘটনা টা মন দিয়ে শোন।
সেই জ্ঞানের আধার স্ফটিক খন্ড নিয়ে আমাদের এক বিশাল যুদ্ধ যান উপযুক্ত স্থানের সন্ধানে বের হলো। বাকি দেব সৈন্য অমরাবতী তেই রইলো দখলদারদের হাত থেকে অমরাবতী কে রক্ষা করার জন্য। এখনো সেই লড়াই চলছে। যুদ্ধযানের দায়িত্বে রইলো এই ইন্দ্র দেব।আর আমরা তার সহযোগী হয়ে রইলাম।পু্রো অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি তে নিরাপদ জায়গা খুঁজে না পেয়ে আমরা মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সি তে এলাম। এখানে বিভিন্ন নক্ষত্র মন্ডলী খুঁজে অবশেষে আমরা পৃথিবীতে প্রবেশ করলাম। তখন পৃথিবীতে ডায়নোসর জাতীয় ভয়াবহ প্রাণীদের উপস্থিতি।তাই আমরা সমুদ্রের মাঝখানে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ এক দ্বীপে ঘাঁটি তৈরী করলাম। শক্তির উৎস স্ফটিক খন্ড এক বিরাট পিরামিড তৈরি করে তার মধ্যে রেখে দেওয়া হলো। এই সৌর মন্ডলের শেষ প্রান্তে স্ফটিক খন্ডের সহায়তায় এক স্বয়ংক্রিয় জটিল রক্ষা প্রণালী তৈরী করা হলো। বহির্বিশ্ব থেকে যে কোন যান এই সৌরমণ্ডলে প্রবেশ করলে এই জটিল প্রণালী তৎক্ষণাৎ আমাদের জানিয়ে দেবে। এবং শত্রু মিত্র ভেদে আমরা উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে পারবো।
কিন্তু এই রক্ষা প্রণালী র এক দুর্বলতা আছে। শক্তি র উৎস স্ফটিক খন্ডের শক্তি থেকে এই রক্ষা প্রণালী শক্তি পায়।আর স্ফটিক খন্ড এই শক্তি সংগ্রহ করে যে গ্রহে অবস্থান করছে সেখানকার অধিবাসীদের আবেগ থেকে। প্রেম, ভালোবাসা, উচ্চাশা ইত্যাদি পজিটিভ শক্তি দেয় ।আর রাগ , ক্রোধ , কাম ইত্যাদি নেগেটিভ শক্তি দেয়। এই সব শক্তি স্ফটিক খন্ড সরাসরি তাদের মস্তিষ্ক থেকে গ্রহণ করে। নেগেটিভ ও পজিটিভ শক্তি একত্রিত করে সাম্যতা বজায় রাখে।
আমরা যখন এই গ্রহে আসি তখন শুধু অনুন্নত মস্তিষ্কের ডায়নোসরের রাজত্ব। শুধু আমাদের কয়েকজনের মস্তিষ্কের শক্তি এই স্ফটিকের পক্ষে যথেষ্ট ছিলো না।তাই আমরা উন্নত প্রাণী সৃষ্টির দিকে মনোযোগ দিলাম। আমাদের প্রজাতি প্রজনন ক্ষমতা হীন। তাই এখানকার বিভিন্ন নিম্ন স্তরের প্রাণীর ডি এন এ তে বদল ঘটিয়ে উন্নত প্রাণীতে রূপান্তরিত করার প্রচেষ্টা শুরু হলো। কিন্তু তার জন্য প্রথমেই প্রয়োজন ডায়নোসরের বংশ সমূলে ধ্বংস করার। আমাদের উন্নত অস্ত্র সরাসরি ও বিভিন্ন প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটিয়ে ডায়নোসর দের ধ্বংস করে দেওয়া হলো।
এদিকে উন্নত প্রাণী তৈরী করার জন্য আমরা বেছে নিলাম এক প্রকার লেজ হীন বনমানুষ। তাদের ডি এন এর সাথে আমাদের ডি এন এ মিশিয়ে তৈরী হলো আধুনিক মানুষ। এই আধুনিক মানুষের মস্তিষ্কে আমরা বিশেষ কিছু প্রোগ্রামিং জুড়ে দিলাম যাতে প্রতিটি মানুষ বংশ পরম্পরায় স্ফটিক খন্ডের সাথে মানসিক ভাবে জড়িত থাকতে পারে। সুতরাং বুঝতেই পারছো আমরাই মানুষের সৃষ্টি কর্তা। প্রয়োজনে আমরা স্ফটিক খন্ডের সাহায্য নিয়ে যে কোনো একটি মানুষ বা সমষ্টি বা সমগ্র মানবজাতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। তবে সাধারণত আমরা তা করি না। বরং মানব জাতিকে স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা প্রদান করে ভাগ্য নির্ধারণ করার ক্ষমতা দিয়েছি। তবে কখনো যদি মানব জাতির অস্তিত্বের সংকট দেখি তবে শুভ চেতনা বৃদ্ধি করে পজিটিভ শক্তি বৃদ্ধি করি যাতে শুভ সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুকূল হয়।"
সুমন বললো "একটি প্রশ্ন আছে। স্ফটিক খন্ড আমাদের কাছ থেকে কিভাবে শক্তি সঞ্চয় করে ?"(ক্রমশ)
সুমন কৌতুহল চেপে রাখতে না পেরে বলেই ফেললো ,"আপনারা আসলে কোন জায়গার বাসিন্দা ?আর এখানে এলেন কেন ?"
বিশ্বকর্মা উত্তর দিলো ,"আমরা অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি র অন্তর্ভুক্ত আদিত্য নামের এক নক্ষত্রের চারিদিকে ঘূর্ণায়মান অমরাবতী গ্রহের বাসিন্দা। আমাদের গ্রহ খুব সুন্দর ও সম্পদে ভরপুর। কোনো কিছুর অভাব আমাদের ছিল না। আমরা কেবল জ্ঞান লাভ কে জীবনের একমাত্র লক্ষ্য বলে মনে করি।তাই আমরা শুধু জ্ঞান চর্চা করি।আর এটাই আমাদের গ্রহ অমরাবতী কে আশেপাশের অন্যান্য গ্রহ থেকে অনেক উন্নত করেছে। আমাদের বিজ্ঞান এতোটাই উন্নতি করেছে আমাদের মৃত্যু রোধ করে অমরত্ব দান করেছে। এর অর্থ সাধারণ ভাবে বার্ধক্য ও জরা আমাদের কিছুই করতে পারবে না। যদিও এই অমরত্ব পেতে আমাদের প্রজনন ক্ষমতা সম্পূর্ণ ভাবে নষ্ট হয়ে গেছে।এর অর্থ আমাদের জনসংখ্যার হ্রাস বা বৃদ্ধি কোনোটাই আর হবে না।আমরা শান্তি র পূজারী। কিন্তু আমাদের শান্তি মাঝে একবার বিঘ্নিত হয়েছিল। আমাদের গ্যালাক্সি র অপরপ্রান্তে একটি গ্রহ আছে।যার নাম পাতাল। সেই গ্রহের অধিবাসীদের আমরা অসুর বলে থাকি।অসুর কুল আমাদের মতোই জ্ঞান বিজ্ঞানে উন্নত। কিন্তু তারা দীর্ঘ আয়ু ও যৌবনের রহস্য জানলেও এখনো অমরত্বের জ্ঞান আবিষ্কার করতে পারে নি। তাদের জ্ঞান তারা শান্তির উদ্দেশ্যে চালনা করে নি। তাদের মূল লক্ষ্য এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সব গ্যালাক্সি র দখল নেওয়া। তাদের এই দখল নেওয়ার পথে সবচেয়ে বড়ো বাধা আমরা। আমাদের জাতির নাম দেবতা।অসুরকুল বহু বার অমরাবতী আক্রমণ করেছে। কিন্তু প্রতিবার আমাদের জ্ঞানের কাছে পরাজিত হয়েছে। কিন্তু বহুকাল আগে একবার আমাদের প্রতিরক্ষা যন্ত্রগুলোর অসতর্কতায় তারা অমরাবতীর অনেক ভিতরে প্রবেশ করে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আমাদের প্রতিরক্ষা উপগ্রহের গোপন চোখ তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে যায়। শুরু হয় ভীষন সংগ্রাম। অসুরেরা এতোটা ভিতরে প্রবেশ করার পর সেই জায়গার দখল সহজে ছেড়ে যেতে রাজি নয়। দীর্ঘ কাল ব্যাপী এই লড়াই চলতে থাকে।
এই লড়াই চলাকালীন একসময় আমাদের গ্রহের পরিচালক সমিতির তিন সদস্য এক গোপন আলোচনায় আমাকে ও ইন্দ্রকে ডাকে। যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি থেকে বোঝা যাচ্ছিল না সেই যুদ্ধ কতোদিন চলবে। আমাদের গ্রহের অর্জিত জ্ঞান ভান্ডারের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সবচেয়ে জরুরি ছিল । সেখানে ঠিক হয় এই জ্ঞান ভান্ডার কে একটি ক্ষুদ্র স্ফটিক খন্ডের মধ্যে ভরে নিরাপদ স্থানে লুকিয়ে রাখা হবে। এবং এই কাজে ব্যবহার করা হয় আমাদের উন্নত বিজ্ঞানের আবিষ্কার চেতনা সমৃদ্ধ স্ফটিক খন্ড। এই স্ফটিক খন্ড স্বয়ং সম্পূর্ণ। এটা বিশ্বচৈতন্য র সাথে যুক্ত।"
এক মূহুর্তের জন্য বিশ্বকর্মা থামতেই প্রফেসর বাগচী ফস করে প্রশ্ন করলো ,"বিশ্বচৈতন্য ?"
বিশ্বকর্মা উত্তর দিলো ,"হ্যাঁ বিশ্বচৈতন্য। তোমাদের কিছু বিজ্ঞানী সবে আভাস পেতে শুরু করেছেন যে এই বিশ্ব জীবন্ত। কিন্তু আমরা বহু আগে থেকেই জানি যে এই বিশ্বের চৈতন্য বা সেন্স আছে।আর আমরা সবাই ও সব কিছুই এই চৈতন্য র অন্তর্ভুক্ত।
এই চৈতন্য সুক্ষ্ম ভাবে সব কিছুই নিয়ন্ত্রণ করে। এই চৈতন্য কখনো শুভ শক্তির জয় আনে আবার কখনো অশুভকে শক্তিশালী করে।"
সুমন বললো ,"আপনি বলছেন এই বিশ্ব চৈতন্য খুব সুক্ষ্ম ভাবে সব কিছু ঠিক করে। তাহলে বিশ্বচৈতন্য তো ইচ্ছে করলে সম্পূর্ণ অশুভ কে ধ্বংস করতে পারে।"
বিশ্বকর্মা উত্তর দিলো ,"নিশ্চয়ই পারে, কিন্তু এটা কি জানো আল্টিমেট শুভ বা আল্টিমেট অশুভ বলে কিছু নেই।একই বস্তু ,একই ঘটনা,একই সময় ,একই ব্যক্তি কখনো শুভ হিসাবে দেখা যায় আবার কখনো অশুভ হয়ে প্রকাশ হয়।"
বিশ্বকর্মা বললো ,"এই যে তোমরা এখানে এসেছো ,এটা তোমাদের মনে হতে পারে যে তোমরা নিজেদের ইচ্ছামত এখানে এসেছো। আসলে তা সম্পূর্ণ সত্য নয়। আমাদের শক্তি র উৎস সেই আশ্চর্য স্ফটিক খন্ডের ইচ্ছায় বিশেষ প্রয়োজনে এখানে উপস্থিত হয়েছো। উপযুক্ত সময়ে সেই বিষয়ে তোমরা তিনজনেই সেটা জানতে পারবে।
এখন পুরো ঘটনা টা মন দিয়ে শোন।
সেই জ্ঞানের আধার স্ফটিক খন্ড নিয়ে আমাদের এক বিশাল যুদ্ধ যান উপযুক্ত স্থানের সন্ধানে বের হলো। বাকি দেব সৈন্য অমরাবতী তেই রইলো দখলদারদের হাত থেকে অমরাবতী কে রক্ষা করার জন্য। এখনো সেই লড়াই চলছে। যুদ্ধযানের দায়িত্বে রইলো এই ইন্দ্র দেব।আর আমরা তার সহযোগী হয়ে রইলাম।পু্রো অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি তে নিরাপদ জায়গা খুঁজে না পেয়ে আমরা মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সি তে এলাম। এখানে বিভিন্ন নক্ষত্র মন্ডলী খুঁজে অবশেষে আমরা পৃথিবীতে প্রবেশ করলাম। তখন পৃথিবীতে ডায়নোসর জাতীয় ভয়াবহ প্রাণীদের উপস্থিতি।তাই আমরা সমুদ্রের মাঝখানে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ এক দ্বীপে ঘাঁটি তৈরী করলাম। শক্তির উৎস স্ফটিক খন্ড এক বিরাট পিরামিড তৈরি করে তার মধ্যে রেখে দেওয়া হলো। এই সৌর মন্ডলের শেষ প্রান্তে স্ফটিক খন্ডের সহায়তায় এক স্বয়ংক্রিয় জটিল রক্ষা প্রণালী তৈরী করা হলো। বহির্বিশ্ব থেকে যে কোন যান এই সৌরমণ্ডলে প্রবেশ করলে এই জটিল প্রণালী তৎক্ষণাৎ আমাদের জানিয়ে দেবে। এবং শত্রু মিত্র ভেদে আমরা উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে পারবো।
কিন্তু এই রক্ষা প্রণালী র এক দুর্বলতা আছে। শক্তি র উৎস স্ফটিক খন্ডের শক্তি থেকে এই রক্ষা প্রণালী শক্তি পায়।আর স্ফটিক খন্ড এই শক্তি সংগ্রহ করে যে গ্রহে অবস্থান করছে সেখানকার অধিবাসীদের আবেগ থেকে। প্রেম, ভালোবাসা, উচ্চাশা ইত্যাদি পজিটিভ শক্তি দেয় ।আর রাগ , ক্রোধ , কাম ইত্যাদি নেগেটিভ শক্তি দেয়। এই সব শক্তি স্ফটিক খন্ড সরাসরি তাদের মস্তিষ্ক থেকে গ্রহণ করে। নেগেটিভ ও পজিটিভ শক্তি একত্রিত করে সাম্যতা বজায় রাখে।
আমরা যখন এই গ্রহে আসি তখন শুধু অনুন্নত মস্তিষ্কের ডায়নোসরের রাজত্ব। শুধু আমাদের কয়েকজনের মস্তিষ্কের শক্তি এই স্ফটিকের পক্ষে যথেষ্ট ছিলো না।তাই আমরা উন্নত প্রাণী সৃষ্টির দিকে মনোযোগ দিলাম। আমাদের প্রজাতি প্রজনন ক্ষমতা হীন। তাই এখানকার বিভিন্ন নিম্ন স্তরের প্রাণীর ডি এন এ তে বদল ঘটিয়ে উন্নত প্রাণীতে রূপান্তরিত করার প্রচেষ্টা শুরু হলো। কিন্তু তার জন্য প্রথমেই প্রয়োজন ডায়নোসরের বংশ সমূলে ধ্বংস করার। আমাদের উন্নত অস্ত্র সরাসরি ও বিভিন্ন প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটিয়ে ডায়নোসর দের ধ্বংস করে দেওয়া হলো।
এদিকে উন্নত প্রাণী তৈরী করার জন্য আমরা বেছে নিলাম এক প্রকার লেজ হীন বনমানুষ। তাদের ডি এন এর সাথে আমাদের ডি এন এ মিশিয়ে তৈরী হলো আধুনিক মানুষ। এই আধুনিক মানুষের মস্তিষ্কে আমরা বিশেষ কিছু প্রোগ্রামিং জুড়ে দিলাম যাতে প্রতিটি মানুষ বংশ পরম্পরায় স্ফটিক খন্ডের সাথে মানসিক ভাবে জড়িত থাকতে পারে। সুতরাং বুঝতেই পারছো আমরাই মানুষের সৃষ্টি কর্তা। প্রয়োজনে আমরা স্ফটিক খন্ডের সাহায্য নিয়ে যে কোনো একটি মানুষ বা সমষ্টি বা সমগ্র মানবজাতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। তবে সাধারণত আমরা তা করি না। বরং মানব জাতিকে স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা প্রদান করে ভাগ্য নির্ধারণ করার ক্ষমতা দিয়েছি। তবে কখনো যদি মানব জাতির অস্তিত্বের সংকট দেখি তবে শুভ চেতনা বৃদ্ধি করে পজিটিভ শক্তি বৃদ্ধি করি যাতে শুভ সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুকূল হয়।"
সুমন বললো "একটি প্রশ্ন আছে। স্ফটিক খন্ড আমাদের কাছ থেকে কিভাবে শক্তি সঞ্চয় করে ?"(ক্রমশ)
No comments:
Post a Comment