Crss colum

Monday, August 12, 2019

রক্ষক ২


                (৩)

ইউরোপা।
বৃহস্পতি গ্রহের একটি উপগ্রহ।বরফে মোড়া এই উপগ্রহের চুম্বকীয় উত্তর মেরু বিন্দুতে এক সুবিশাল ত্রিভুজের মতো পিরামিড আকৃতির স্বচ্ছ শুভ্র মার্বেল পাথরের তৈরী মন্দিরের অভ্যন্তরে এক গোলাকৃতি বিশাল কূপের সামনে এক প্রবীণা পদ্মাসনে  ধ্যানমগ্ন অবস্থায় বসে রয়েছেন।এই পুরো উপগ্রহে প্রাণের চিহ্ন একমাত্র এখানেই রয়েছে। এই প্রাচীন মন্দিরে রয়েছে সৌর মন্ডলের এক গোপনতম সম্পদ । তমো গুণের কূপ।আর এই তমো গুণের কূপের রক্ষকের ভূমিকায় রয়েছেন সৌরমণ্ডলের সবচেয়ে জ্ঞানী জাতির দশ নারী।এরা মানুষের মতো দেখতে হলেও আসলে মানুষ নয়। বহু কোটি কোটি বছর আগে এই প্রজাতির লোক মানুষ ছিলো। কিন্তু কোটি কোটি বৎসরের বিবর্তনে এদের ডি এন এ পরিবর্তিত হয়ে গেছে। এই প্রজাতি এখন নিজেদের মাতৃকা নামে পরিচয় দেয়। এরা অতি দীর্ঘ আয়ু সম্পন্ন। এদের ভ্রু মধ্যে অবস্থিত রয়েছে ত্রিভূজ আকৃতির এক নীল বর্ণের মণি।একে বলে শূন্য মণি। মাতৃকার গর্ভজাত নারী পুরুষ উভয়েই এই মণি সহকারে জন্ম নেয়। কিন্তু নারীদের মধ্যে এই মণি চিরস্থায়ী। সাধারণত মাতৃকা গণ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন না।  কিন্তু জগতের কল্যাণে অথবা কোনো মাতৃকার মৃত্যু হলে সংখ্যা পূর্ণ করার জন্য বিশেষ কারণে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। যেহেতু তাদের মধ্যে কোনো পুরুষ নেই তাই তারা প্রয়োজনে পৃথিবীর মানুষের সাথে বিবাহ করেন। এক্ষেত্রে তারা এক বিশেষ রীতি অবলম্বন করেন। বিবাহিত জীবনে যদি কন্যা সন্তান হয় তবে জন্ম দানের পরেই সন্তান সহ ইউরোপা তে ফিরে আসেন এবং সেই কন্যা সন্তান নতুন মাতৃকা রূপে পরিচিত হয়। সন্তান যদি পুত্র হয় তবে জন্ম দানের এগারো বৎসর পর্যন্ত তাদের লালন পালন করেন এবং সংসার করেন । তারপর সেই সন্তান ও সংসার ছেড়ে পুনরায় ইউরোপায় ফিরে আসেন। মাতৃকা জাতি থেকে উৎপন্ন পুত্র সন্তানের কপালের নীল শূন্য মণি জন্মের ছয় মাসের মধ্যেই মিলিয়ে যায় । সেজন্য তারা মাতৃকা জাতির সব গুণ পায় না। তবে যদি সেই সন্তান তমো গুণের কূপে অবগাহন করতে পারে তবে পুনরায় চিরস্থায়ী ভাবে মাতৃকা জাতির সব গুণের অধিকারী হয় ।কোটি কোটি বৎসরের বিবর্তনের ফলে এরা খাদ্য , পানীয় ও বাতাসের  সাহায্য ছাড়াই বেঁচে থাকতে পারে।এরা অতি উষ্ণ ও অতি শীতল যে কোনো স্থানেই জীবিত থাকতে পারে। সর্বোপরি এরাই একমাত্র জীব যারা নিজেদের শরীরকে মাধ্যাকর্ষণের প্রভাবহীন করে যে কোনো মাধ্যমে উড়তে পারে। এজন্য তারা কাজে লাগায় তাদের কপালের ভ্রু মধ্যে অবস্থিত এক বিশেষ শূন্য মণি কে।


প্রবীণা মাতৃকা যিনি ধ্যান মগ্ন অবস্থায় পদ্মাসনে বসে ছিলেন তমো গুণের কূপের কাছে , হঠাৎ তার সামনে এক আলোর বিচ্ছুরণ হতে লাগলো। ধীরে ধীরে  সেই আলোর বৃত্ত হতে এক জ্যোতির্ময় পুরুষ আবির্ভূত হলেন।ইনি আমাদের পূর্ব পরিচিত সৌরমণ্ডলের রক্ষক।
রক্ষক প্রবীণা কে প্রণাম করে  বললেন "মাতা , বিশেষ প্রয়োজনে আবার আপনার কাছে এসেছি।"
প্রবীণা বললেন ,"পুত্র বেশ কয়েকদিন ধরে তোমার চিন্তা ই করছিলাম।"
রক্ষক আসলে এই প্রবীণার পুত্র সন্তান। বহুকাল পূর্বে জগতের কল্যাণে তিনি রক্ষককে গর্ভে ধারণ করেছিলেন। উভয়ের বিধি নির্দিষ্ট কর্ম শেষ হওয়ায় উভয়েই নিজ নিজ স্থানে প্রত্যাগমন করেন।
রক্ষক বললেন "মাতা অচিরেই পৃথিবীতে এক মহাবিপদ উপস্থিত হবে। যার প্রভাবে পৃথিবীর সমগ্র জীব জগত ধ্বংস হতে পারে। বিশ্বব্রহ্মাণ্ড ব্যাপী যে মহাচৈতন্য অবস্থান করছে তার কাছ হতে নির্দেশ এসেছে এই বিপদ থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করার। সেজন্য পুনরায় আমার জন্ম গ্রহণ করার প্রয়োজন। কিন্তু আমার তেজযুক্ত আত্মাকে গর্ভে ধারণ করতে পারে এমন নারী এই মুহূর্তে পৃথিবীতে নেই।তাই আপনার কাছে এসেছি সাহায্যের আবেদন নিয়ে। তাছাড়া বিধির বিধান হলো পৃথিবীকে বিপদের হাত থেকে রক্ষা করতে পারবেন এক অর্ধমানব। মানুষ ও মাতৃকার মিলনে যে সন্তান সৃষ্টি হবে সেই হলো অর্ধমানব। "
প্রবীণা সব শুনলেন। তারপর বললেন " পুত্র , আমি বৃদ্ধ হয়েছি। তাই আমি তোমাকে এই ব্যাপারে সাহায্য করতে পারবো না। তবে আমার সঙ্গী অন্য মাতৃকাগণ কে আহ্বান করছি। আশা করি তাদের মধ্যে কেউ তোমাকে সাহায্য করতে রাজি হবে।"
এই বলে  প্রবীণা তার গলার রুদ্রাক্ষের মালাটি খুলে হাতে নিয়ে বললেন "সব মাতৃকাগণ  শোনো , এখনি সবাইকে আমার সম্মুখে উপস্থিত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
কিছুক্ষণের মধ্যেই বাকি নয় জন মাতৃকা ঐ স্থানে উপস্থিত হলো।
প্রবীণা সকলে উপস্থিত হওয়ার পর  সকলের সামনে সব কিছুই বলে সাহায্য করার অনুরোধ জানালেন।
 প্রায় সকলেই  হ্যাঁ বা না কিছুই বললেন না। বাকি সকল মাতৃকার মধ্যে কেউই সংসার করতে আগ্রহী নয়।
তখন প্রবীণা বললেন "বুঝতে পারছি তোমরা কেউ সংসার করতে আগ্রহী নও। কিন্তু মনে রেখো তোমাদের জীবনের উদ্দেশ্য বিশ্বের কল্যাণ সাধন। কিন্তু তোমাদের মধ্যে একজন আছে যে কিছুকাল আগে আমাদের মাতৃকা জাতির আদি নিবাস মূল গ্রহ 'মায়া' থেকে এখানে এসেছে। 'ময়ূরী' আমি তোমাকে বলছি। তুমি এই ভার নাও।"
ময়ূরী নামের সেই মাতৃকা বললো "গুরুমাতা , আপনি যখন আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন তখন আমি অবশ্যই আপনার ইচ্ছার মর্যাদা রক্ষা করবো। কিন্তু  আমার একটা শর্ত আছে।যে পুরুষ কে আমি বিবাহ করবো তাকে অবশ্যই সৎ হতে হবে। এবং তার কাছে আমি আমার আসল পরিচয় ও উদ্দেশ্য গোপন করতে পারবো না।সব কিছু জানার পর যদি তিনি আমার সাথে সংসার স্থাপনে রাজী হন তবেই আমি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবো।"
প্রবীণা বললেন " বেশ তাই হবে। তুমি যেমন ইচ্ছা করেছো তেমন পুরুষের সন্ধান আমি আমার যোগশক্তি বলে তোমাকে জানাবো। এখন ময়ূরী ভিন্ন সবাই নিজ নিজ কার্যে প্রত্যাবর্তন করো।"
সকলে চলে গেলে রক্ষক বললো " মাতা , এবার আমাকে প্রত্যাবর্তনের অনুমতি দিন । উপযুক্ত সময় হলে আমি আপনার কাছে নির্দেশ পাঠাবো। আপনি আমার ভাবী মাতাকে পৃথিবীতে প্রেরণ করবেন।"
প্রবীণা বললেন "বেশ পুত্র তাই হবে "।
ধীরে ধীরে রক্ষক আলোক বৃত্ত সহ মিলিয়ে গেলেন।



              (৪)

মঙ্গল গ্রহের নিরক্ষরেখা র এক অজ্ঞাত স্থান।
সময় অনির্দিষ্ট।

স্পেস স্যুটের মতো ঘেরাটোপ যুক্ত পোশাক পরে এক জন দাঁড়িয়ে চারিদিক নিরীক্ষণ করছিলেন। রক্তিম মৃত্তিকার মধ্যে সূর্যের আলো আগুন ছড়াচ্ছিলো। দূরে এক বিশালাকার পাথরের গোলাকার বেদী। কালের নিয়মে আজ ভগ্নপ্রায়। একদিন এই বেদীর  চারিদিকে ভিড় জমাতো মঙ্গল গ্রহের সাধারণ মানুষ।আর ঐ পাথরের বেদী তে যুদ্ধের দেবতা মার্সের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন আত্মরক্ষার কলাকৌশল প্রয়োগ করে দেখাতো বিভিন্ন প্রতিযোগীরা। যিনি এতক্ষণ দাঁড়িয়ে এই সব নিরীক্ষণ করছিলেন তিনি এই গ্রহের সবচেয়ে সম্মানিত সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ এক যোদ্ধা তমোঘ্ন।সবাই বলে গুরু তমোঘ্ন।এক বিরাট ধ্বংস সাধনের ফলে মঙ্গলের সব জাতি ধ্বংস সাধন হয়েছে। শুধু গুরুদেব তমোঘ্নর জাতির পূর্বজদের দূরদর্শিতা তাদের প্রজন্মকে এখনো  টিকিয়ে রেখেছে। তাদের পূর্বপুরুষরা মাটির অনেক গভীরে বাসস্থান তৈরী করে বসবাস শুরু করেন ।জীবন ধারণের সব কিছুই সেখানে উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরী করেন। বর্তমানে এই সৌরমণ্ডলের সবচেয়ে আধুনিকতম সভ্যতার অধিকারী এই জনজাতি।এরা মার্সিয়ান জনজাতি । উপরের ধ্বংস লীলা তাদের কোনো রূপ ক্ষতিগ্রস্ত করে নি।এরা এখন খুবই সহজে এক গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে তাদের তৈরী উন্নত মহাকাশযানের সাহায্যে ভ্রমন করে। পৃথিবীর মানুষ যখন সভ্যতার আলো দেখেনি তখন এই জনজাতি মানুষ কে বিভিন্ন সারভাইভাল টেকনিক ও আত্মরক্ষার কলাকৌশল শিখিয়েছে। তারা আজো পৃথিবীতে মানুষের অগোচরে ভ্রমণ করে। হিমালয়ের এক গোপন উপত্যকায় তাদের এক গোপন শিবির রয়েছে। যেখানে তারা পৃথিবীর কিছু বেছে নেওয়া মানুষ কে অতি উন্নত অস্ত্র ও আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।ঐ শিবির কে এরা নাম দিয়েছেন 'পাঠশালা'।
গুরু তমোঘ্ন পাঠশালার মূল শিক্ষক। বর্তমানে পাঠশালার দায়িত্ব অন্য শিক্ষকদের দিয়ে নিজে এসেছেন তার প্রিয় জন্মভূমি মঙ্গলে । অনেকক্ষণ ধরে মঙ্গলের উপরিভাগে একাকী ভ্রমণ করে ফিরে চললেন তাদের মাটির নিচের শহরে। একটি পাথরের ঢিপির কাছে এসে  নিজের পোশাকের মধ্যে থাকা একটি বোতাম টিপতে ই মাটির খানিকটা অংশ ফাঁকা হয়ে গেলো। সেই ফাঁকা অংশে উঠে এলো একটি লিফট। লিফটের দরজা আপনা থেকেই খুলে গেলো। তমোঘ্ন প্রবেশ করতেই পুনরায় দরজা বন্ধ হয়ে গেলো। লিফট নামতে শুরু করলো মাটির গভীরে। কয়েক কিলোমিটার নামার পর লিফট থেমে গেলো। তমোঘ্ন লিফট থেকে বেরিয়ে এলেন। সামনে মাটির নীচে এক বিরাট সভ্য জগত। লিফটের পাশেই এক পোশাক পরিবর্তনের কক্ষ।এক মার্সিয়ান সেখানে কর্মরত ছিলেন। তিনি তমোঘ্ন কে মাথা ঝুঁকিয়ে সম্মান জানালেন। তার মাটির উপরে যাওয়ার পোশাক পরিবর্তনে সাহায্য করলেন।স্পেস স্যুটের মতো পোশাক ছেড়ে নিজের  বাদামী রঙের জোব্বার মতো পোশাক পড়লেন। কর্মচারী টি জানালো শহরের প্রশাসক তাকে স্মরণ করেছেন। তমোঘ্ন বেরিয়ে এসে তার ব্যক্তিগত যানে উঠে বসলেন।যানের মধ্যে থাকা স্বয়ংক্রিয় কন্ঠ জানতে চাইলো তিনি কোথায় যেতে চান ?
তমোঘ্ন বললো "আমাকে  প্রশাসকের ভবনে নিয়ে চলো।" 
নির্দেশ অনুযায়ী যানটি তাকে মাটির নীচের শহরের বিভিন্ন রাস্তা ঘুরিয়ে এক বিরাট ভবনের সামনে উপস্থিত করলো। তমোঘ্ন যান থেকে নেমে সেই ভবনে প্রবেশ করলেন।
বিরাট ভবনটিতে প্রচুর মার্সিয়ান কর্মরত। তাদের মধ্যে পুরুষ ও মহিলা উভয়েই আছে।
অবশেষে তমোঘ্ন এক বিশালাকার হলঘরে প্রবেশ করলেন।এটাই প্রশাসকের ঘর ।প্রশাসক একটি চেয়ার টেবিলে বসে কাজ করছিলেন। তিনি একজন মহিলা। তমোঘ্ন প্রবেশ করতেই তিনি উঠে দাঁড়িয়ে তমোঘ্ন কে সম্মান জানালেন।তারপর তাকে একটি চেয়ার নির্দেশ করে বসতে বললেন। তমোঘ্ন বসলে তিনিও বসলেন।
তারপর বললেন "গুরুদেব আপনি জানেন বহুকাল পূর্বে রক্ষক আমাদের জনজাতিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন।আজ তিনি শরীরে না থাকলেও সুক্ষ্ণ শরীরে সৌরমণ্ডলের অ্যাস্টরয়েড বেল্টে অবস্থান করছেন। তিনি আমাদের সুপার কম্পিউটারে সরাসরি বিশেষ নির্দেশ প্রদান করেছেন যে তিনি অবিলম্বে আপনার সঙ্গে দেখা করতে চান।
তমোঘ্ন বললেন "আমি অবিলম্বে তার সঙ্গে দেখা করতে চাই। আমি কি আমার গ্রহান্তরে যাওয়ার যানে তার কাছে যাবো?"
মহিলা উত্তর দিলেন "তার প্রয়োজন নেই।ঐ দেখুন তিনি আবির্ভূত হচ্ছেন।"
সামনে একটি আলোক বৃত্ত তৈরী হলো। সেই আলোক বৃত্তে এক জ্যোতির্ময় পুরুষ আবির্ভূত হলেন।
তমোঘ্ন ও মহিলা প্রশাসক তাকে প্রণাম করলেন।
রক্ষক তমোঘ্ন কে উদ্দেশ্য করে বলতে শুরু করলেন "প্রিয় মার্সিয়ান গণ , বিশেষ সাহায্যের প্রয়োজনে তোমাদের কাছে উপস্থিত হয়েছি।"
তমোঘ্ন বললো "আদেশ করুন প্রভু।"
রক্ষক খুশী হয়ে বললেন "অচিরেই বিরাট এক বিপদ পৃথিবীর উদ্দেশ্যে এগিয়ে আসছে। তার হাত থেকে পৃথিবীর মানুষ কে বাঁচাতে আমি পুনরায় জন্মগ্রহণ করবো। বৃহস্পতি গ্রহের উপগ্রহ ইউরোপার মাতৃকা গণের কথা আপনারা   অবগত আছেন।এক মহান মাতৃকা আমায় গর্ভে ধারণ করতে সম্মত আছেন। কিন্তু রীতি অনুযায়ী তিনি আমাকে এগারো বৎসর বয়স পর্যন্ত লালন পালন করবেন। তারপর তমোঘ্ন আমাকে তোমায় লালন পালন করতে হবে। কালের নিয়মে আমি জন্ম গ্রহণ করা মাত্রই পূর্ব কথা সব বিস্মৃত হবো। তাই তোমাকে সব কথা বলে যেতে চাই।মহাচৈতন্য থেকে নির্দেশ এসেছে  তিনটি জ্ঞান কূপে যিনি অবগাহন করবেন এবং লুকিয়ে রাখা এক ভয়ঙ্কর ভয়াবহ অস্ত্রের যিনি অধিকারী হবেন তিনিই একমাত্র এই বিপদ থেকে পৃথিবীর মানব সভ্যতা তথা জীবজগৎ কে রক্ষা করতে পারবেন। তমোঘ্ন এই সৌর মন্ডলের একমাত্র তুমি জানো তিনটি গোপন কূপের অবস্থান এবং তাতে অবগাহনের উপায়। কারণ তুমি ঐ তিনটি গোপন কূপে অবগাহন করেছো। আমি তোমার শিষ্য রূপে উপযুক্ত সময়ে এই বিষয়ে সম্পূর্ণ সাহায্য চাই। এছাড়া তোমাদের সভ্যতার তৈরী সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ভয়াবহ অস্ত্র 'পাশুপত' অস্ত্রের অবস্থান ও তার প্রয়োগ কৌশল এবং তাকে পাওয়ার উপায় সবই তুমি জানো। তুমি উপযুক্ত সময়ে এই সব কিছু অর্জন করতে আমাকে সাহায্য করবে।"

"   'পাশুপত' তোমাদের নিজস্ব সম্পত্তি।তাই তোমাদের প্রশাসকের অনুমতির প্রয়োজন।"এই কথা গুলো রক্ষক প্রশাসকের উদ্দেশ্যে বললেন।
প্রশাসক বললেন "অস্ত্রের সৃষ্টি করা হয়েছে প্রয়োজনের সময় ব্যবহার করার জন্য । আমার পূর্ণ সমর্থন আছে আপনার হস্তে তুলে দিতে। তবে নিয়ম অনুযায়ী আপনার আগামী জন্মে আপনাকে উপযুক্ততা র প্রমাণ দিয়ে তবেই এই অস্ত্রের অধিকারী হতে হবে। এবং এক্ষেত্রে গুরুদেব তমোঘ্ন আপনাকে কোনো সহায়তা করতে পারবেন না।"
তমোঘ্ন বললেন "আপনি আপনার ভবিষ্যৎ গুরু হিসাবে আমাকে পছন্দ করেছেন এজন্য আমি সম্মানিত। আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন আমি উপযুক্ত সময়ে উপস্থিত হয়ে আপনার ভার গ্রহণ করবো এবং পৃথিবীতে আমাদের স্থায়ী শিবির 'পাঠশালা'তে আপনার প্রয়োজনীয় শিক্ষা প্রদান করবো।"
তমোঘ্ন ও প্রশাসক রক্ষককে প্রণাম জানালেন।রক্ষক উভয়কেই আশীর্বাদ জানিয়ে মিলিয়ে গেলেন।
(পরবর্তী অংশ পরের পর্বে।পরের পর্বের নোটিফিকেশন পেতে আমাকে অনুসরণ করুন।)

No comments:

Post a Comment