Crss colum

Thursday, March 23, 2017

আটলানটিসের পাথর

প্রিয়ব্রত র চিঠি -
প্রিয় সুমন  ,
আশা করি তুমি কুশলে আছো . তুমি যখন এই চিঠি পড়ছো  তখন  আমি আর ইহ জগতে নেই .আজ তোমায় এক অতি গোপন ও গুরুত্বপূর্ণ কথা জানাবো .
তুমি কি কখনো আটলানটিসের কথা শুনেছো . গ্রীক দার্শনিক প্লেটো লেখা থেকে আধুনিক মানুষ প্রথম আটলানটিসের কথা জানতে পারে . তিনি এই বিষয়ে মিশরের  মন্দিরের পুরোহিতদের কাছ থেকে জানতে পারেন .আজ যেখানে আটলানটিক মহাসাগর সেখানেই ছিলো দ্বীপ রাষ্ট্র আটলানটিস .সেই সময় যখন সমগ্র পৃথিবী অন্ধকার যুগে পড়ে আছে তখন এরা পরমাণু শক্তির ব্যবহার জানতো . শিক্ষা ,বিজ্ঞান ,প্রযুক্তি ,কলা সবেতেই এরা ছিলো উন্নত .এক বিশাল জলোচ্ছাসে এই দ্বীপ রাষ্ট্র ধ্বংস হয়ে যায় .এমন জনশ্রুতি আছে এই আটলানটিস ধ্বংস হয়ে যাবার সময় সেখানকার কিছু মানুষ  মূল ভূখন্ডে পালিয়ে আসে .সাথে নিয়ে আসে অমূল্য  জ্ঞান সম্পদ . সেই  জ্ঞান তারা একটি পাথরের মধ্যে লুকিয়ে রাখে .অবাক হয়ে যাচ্ছ ? ছোটো মাইক্রো চিপের ভেতর বহু ছবি গান  সিনেমা  লুকিয়ে রাখা যায় . সেই  রকম ঐ ছোটো পাথরের ভেতর তাদের ইতিহাস ,বিজ্ঞান ,কলা বিদ্যা ইত্যাদি সব কিছুই লুকানো আছে . কোয়ার্টজ পাথরে তৈরী পাথর . আমি কিভাবে এই পাথরেরর কথা জানতে পারলাম সেটা তোমায় বলি .

আমি চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য কে নিয়ে গবেষণা করছিলাম .গবেষণার সূত্রে ঘুরতে  ঘুরতে আলাপ হয় প্রফেসার বাগচী র সাথে . তিনি আমায় এক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেন .তিনি বলেন কাশীর এক মন্দিরে তিনি এক আশ্চর্য্য পুঁথি দেখেছেন .সেটি এক অজানা ভাষায় লেখা .আমি কৌতূহল বোধ করলে তিনি আমায় সেই মন্দিরে নিয়ে যান .সেখানে পুরোহিতের সাথে আলাপ করার পর  ,তিনি আমায় সেই অজানা ভাষায় লেখা পুঁথিটি দেখান . দেখলাম পুঁথিটি কোন ভারতীয় ভাষায় লেখা নয় .কিন্তু যে ভাষায় লেখা সেটি আমি চিনি .এটি প্রাচীন গ্রীক ভাষায় লেখা .কয়েকদিনের চেষ্টায় আমি সেই লেখার বঙ্গানুবাদ করি .তা থেকে প্রথম এই আশ্চর্য্য পাথরের কথা জানতে পারি . কিন্তু কোন ভাবে প্রফেসার বাগচি আংশিক অনুবাদ পড়ে ফেলে  .এটা আমারই গাফিলতির ফল .আমার আরো সতর্ক হওয়া উচিত ছিলো . যেটুকু পড়ে তাতে শুধু পাথরের বর্ণনা ও গুণাগুণ লেখা ছিলো .পুরো বঙ্গানুবাদ করার পর তিনি আমায় এই পাথরটি কোথায় পাওয়া যাবে তা জানার জন্য পীড়াপীড়ি করেন .কিন্তু আমি বলতে  রাজী না হওয়ায় প্রথমে টাকার লোভ দেখান .তাতে কাজ না হওয়ায়  প্রাণের ভয় দেখান . সেটা যে নিছক হুমকি নয় তা অচিরেই জানতে পারি . তখন আমি পুরো অনুবাদটি লুকিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিই . পুঁথির অনুবাদ আমার ব্যাঙ্কের সেফটি লকারে রাখা আছে . ব্যাংকে আমার স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া আছে আমার মৃত্যুর পর আমার ওয়ারিশন আমার পুত্র অর্থাত্ তুমি সব কিছুর মালিক হবে . আর এই চিঠিটি লিখে আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু অয়ন বাবুকে দিয়ে যাই তোমায় দেবার জন্য .এখন তুমি এই চিঠি ও অন্যান্য কাগজ পত্র নিয়ে ব্যাঙ্কে যোগাযোগ করলে ঐ লকারটির মালিক হবে . তখন মূল অনুবাদটা পড়ে পাথরটি উদ্ধারের বিষয়ে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিও .
ইতি
আশীর্বাদক বাবা প্রিয়ব্রত চৌধুরী .
সুমন চিঠিটি রেখে অর্জুনের দিকে তাকালো .তারপর মৃদু কনঠে বললো ‘ এখন কি সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় ?’
অয়নবাবু ছেলে অর্জুনের দিকে এক ঝলক তাকিয়ে বললো ,‘প্রথম কাজ লকার থেকে বঙ্গানুবাদটি সংগ্রহ করা .তারপর অবস্থা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে .’ অয়নবাবুর কথায় সুমন ও অর্জুন নীরব সম্মতি জানালো .
(প্রথম পর্ব সমাপ্ত.)


No comments:

Post a Comment